- Home
- India News
- রাফালে সজ্জিত বিমান বাহিনীর একসময় ‘মেরুদণ্ড’ ছিল এই যুদ্ধবিমান, পাকিস্তানও এর ভয়েই গুটিয়ে থাকতো
রাফালে সজ্জিত বিমান বাহিনীর একসময় ‘মেরুদণ্ড’ ছিল এই যুদ্ধবিমান, পাকিস্তানও এর ভয়েই গুটিয়ে থাকতো
আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ভারতীয় বিমান বাহিনীর অংশ হতে চলেছে ফরাসি যুদ্ধবিমান রাফাল। রাফালের অন্তর্ভুক্তিতে এক নতুন সীমা ছুঁতে চলেছে এয়ার ফোর্স, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু দীর্ঘ ৫ দশক ধরে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে সার্ভিস দিয়ে এসেছে মিগ ২১ । শুধু ভারতীয় বিমানবাহিনী বললে ভুল বলা হবে, ৫০ র অধিক দেশ এই বিমান ব্যবহার করছে। বর্তমানে ভারত, ক্রোয়েশিয়া এবং রোমানিয়ার বিমান বাহিনীতে এই বিমান দেখা যায়। মিগ-২১ ওরফে বালালাইকা খুব সম্ভবত মিগ সিরিজের সবচেয়ে বিখ্যাত নাম। ৬২ বছর আগে অর্থাত্ ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬ সালে এটিকে প্রথমবার আকাশে দেখা যায়। ১৯৫৯ সালে এটি সার্ভিসে আসে। বিশ্বে মিগ-২১ এর চেয়ে বেশি সুপারসনিক বিমান আর বানানো হয়নি। ৬০টিরও বেশি দেশ এখনওপর্যন্ত প্রায় সাড়ে এগারো হাজার মিগ-২১ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে। তার মধ্যে ভারতের কাছেই ছিল ৮৪০ টি।
- FB
- TW
- Linkdin
মিগ-২১ ডেল্টা উইং বিশিষ্ট যুদ্ধবিমান। ২৩ এমএম জিএসএইচ মেশিনগানের পাশাপাশি এটি ৪টি কখনোবা ২টি মিসাইল ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখে। দীর্ঘদিন বিমানবাহিনীতে থাকার কারণে প্রয়োজন অনুসারে নানা সময়ে মিগ-২১ এ বিভিন্ন রকমের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
৪৮ ফুট লম্বা, ম্যাক ১ অর্থাত্ সি লেভেলে এর গতি ১৩০০ কিমি প্রতিঘণ্টা হলেও এর সর্বাধিক গতি ২২০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
বিমানটি আকাশে খুব বেশিক্ষণ থাকতে পারে না, যুদ্ধক্ষেত্রে এটাই ছিল এর বড় দুর্বলতা। তবে এসব সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মিগ-২১ আকাশযুদ্ধে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে।
ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় বহু বোয়িং বি-৫২, এফ-১০৫ এবং এফ-৪ ফ্যান্টম যুদ্ধবিমান কে ধ্বংস করে। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যেই ৫৬টি মার্কিন বিমান মিগ-২১ এর শিকার হয়। এই সংখ্যা আরো বেশিও হতে পারে।
১৯৭১ এ মিগ-২১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় বাহিনীর হয়ে অনেকগুলি পাকিস্তানি বিমানকে ধ্বংস করেছিল।
ভারতীয় পাইলটরা খুব সহজেই পাকিস্তানি এফ-৮৬ স্যাবর জেট ও এফ-১০৪ এর ওপর হামলা চালাতে সক্ষম হয়েছিল। তবে মিগ-২১ চালাতে হলে খুবই দক্ষ পাইলট হওয়া প্রয়োজন।
তবে যান্ত্রিক গোলযোগ মিগ-২১এর বড় সমস্যা। এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী ভারত। পুরনো বিমানগুলিকে চালু রাখতে প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর ‘মেরুদণ্ড’ বলা হত মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে। তবে সম্প্রতি বির্তকের জালে আটকে গেছে ভারতীয় মিগ। আর বেশির ভাগ মিগ-২১ বিমানই কারিগরি ত্রুটির জন্য দুর্ঘটনা পড়েছে, মানবিক ভুলের জন্য নয়।
১৯৭৩-৭৪ সাল নাগাদ ভারতীয় বিমান বাহিনীতে নাম লিখিয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মিগ-২১। তার পর থেকে গত ৪৫ বছর ধরে উড়ে চলেছে ওই রুশ যুদ্ধ বিমান। একাধিক বার দুর্ঘটনায় পড়ে বিমান চালকের মৃত্যুও ঘটেছে, যার জেরে মিগ-২১-এর নামই হয়ে যায় ‘উড়ন্ত কফিন’।
বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইকের পর দিনই নিয়ন্ত্রণ রেখায় পাক এফ-১৬ বিমানের সঙ্গে ডগ ফাইটে অংশগ্রহণ করে মিগ-২১ বাইসন। ওই যুদ্ধ বিমানটি চালাচ্ছিলেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। কিন্তু, উন্নত এফ-১৬-এর হামলায় ধ্বংস হয়ে যায় অভিনন্দনের যুদ্ধ বিমান।
সম্প্রতি যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে তা চমকে দেওয়ার মতো। জানা গিয়েছে, ভারতের ৮৭২টি মিগ-২১ বিমানের অর্ধেকের বেশি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে দুর্ঘটনার জেরে।