অযোধ্যায় অকাল দ্বীপাবলি, ভূমি পূজার দিন কী করবেন 'রাবণ মন্দির'এর পুরোহিত
- FB
- TW
- Linkdin
অযোধ্যা থেকে মাত্র ৬৫০ কিলোমিটার দূরে, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যেরই গৌতম বুদ্ধ নগর জেলায় অবস্থিত বিসরাখ। অযোধ্যায় যেমন রামজন্মভূমি, তেমনই বিসরাখ-কে মনে করা হয় রাজা রাবণের জন্মস্থান। এই স্থানে রাক্ষস রাজা-কে উত্সর্গ করা একটি মন্দির-ও রয়েছে। রামায়ণ মহাকাব্য অনুযায়ী স্ত্রী সীতা-কে মুক্ত করার জন্য, রাক্ষস রাজা রাবণকে হত্যা করেছিলেন রাম। কাজেই সেই রামের মন্দিরের ভূমি পুজোর দিন কি একই রকম খুশি হবেন রাবণের উপাসকরা?
বিসরাখ-এর রাবণ মন্দিরের পুরোহিত মোহান্ত রামদাস কিন্তু জানিয়েছেন অযোধ্যার ওই ঐতিহাসিক ক্ষণের জন্য তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। অযোধ্যায় ভগবান রামের মন্দিরের ভূমি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে তিনি দারুণ খুশি। অনুষ্ঠানের পর এলাকায় তিনি লাড্ডু বিতরণ করে এই আনন্দের মুহূর্ত উদযাপন করবেন বলেও জানিয়েছেন মোহান্তত রামদাস।
কিন্তু, রাবণের উপাসক, কেন রাম মন্দির তৈরি হওয়ায় খুশি? মোহান্ত রামদাস জানাচ্ছেন, আসলে রাম ও রাবণ এই দু'জনের অস্তিত্ব দুজনের জনপ্রিয়তা - সবটাই একে অপরের উপর নির্ভরশীল। রাবণ যদি না থাকতেন তবে শ্রী রাম সম্পর্কে কেউ কিছু জানতে পারত না। একইভাবে ভগবান রামের অনুপস্থিতিতে রাবণ সম্পর্কেও কেউ কিছু জানতে পারত না।
স্থানীয় লোককাহিনী অনুসারে, বিসরাখেই রাবণের জন্ম হয়েছিল। স্থানীয়রা একে শুধু 'রাবণ জন্মভূমি'ই বলেন না, এর জন্য তাঁরা গর্বিতও বটে। কারণ, তাঁদের কাছে রাবণ শুধু একজন রাক্ষস রাজাই নন, তিনি অত্যন্ত জ্ঞানবান ও বীর-ও বটে। সারা দেশে দশেরার দিন রামলীলা অর্থাৎ রাবণ দহন করা হলেও, এখানে তা হয় না।
রাবণ মন্দিরের পুরোহিত মোহান্ত রামদাস-ও মনে করেন, ভগবান রাম যদি 'মর্যাদা পুরুষোত্তম' হয়ে থাকেন, রাবনকেও একজন বিপুল মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি স্মরণ করিয়েছেন, সীতা-কে অপহরণের পরে লঙ্কারাজ, তাঁকে রাজবাড়ীতে না রেখে অশোক বটিকায় রেখেছিলেন। তাঁকে পাহাড়া দেওয়ার জন্য রাবণ নিযুক্ত করেছিলেন মহিলা রক্ষী।
বিসরাখের রাবণ মন্দিরে রাবণ ছাড়াও ভগবান শিব, দেবী পার্বতী এবং কুবের দেবের মূর্তি রয়েছে। তবে, মোহান্ত জানিয়েছেন দিবা-রাত্র মন্দিরের দরজা খোলা থাকে। ভক্তদের অনেকেই কিন্তু আসেন রাবণের কাছে প্রার্থনা করতে।