গালওয়ান সংঘর্ষের এক বছর পার, চিনা আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত ভারত
গালওয়ান সংঘর্ষের এক বছর পার করল। কিন্তু এখনও লাদাখসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় চিনা হুমকির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশ। গত বছর করোনাকালে চিনা অগ্রাসনের পর পূর্ব লাদাখ সেক্টরে নিরাপত্তা বাড়ান হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে একাধিক কূটনৈতিক বৈঠকও হয়েছে। কথা হয়েছে দুই দেশের সেনা বাহিনীর মধ্যেও। পূর্ব লাদাখ সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকা থেকে সেনা সরিয়ে নিলেও এখনও পর্যন্ত চিনা আগ্রাসনের আশঙ্কা রয়ে গেছে।

গত বছর ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনাদের আগ্রাসন রুখে দিয়েছিল ভারত। সেই সময় ভারতের ২০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল চিনা আক্রমণে। প্রাণ গিয়েছিল বিহারের রেজিমেন্টের কমান্ডি অফিসার সন্তোষ বাবুর।
ভারতের ২০ জওয়ান গালওয়ান সংঘর্ষের বলি হলেও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি কতজন চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল সেই সংঘর্ষে। চিন এখনও পর্যন্ত সেই তথ্য সরকারি ভাবে প্রকাশ করেনি। তবে সংঘর্ষে যে চিনা সেনার মৃত্যু হয়েছিল তা একপ্রকার নিশ্চিত। পেট্রোলিং নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল। পরে তা হাতাহাতিতে পৌঁছে গিয়েছিল। .
গালওয়ান সংঘর্ষের মধ্যে দিয়েই প্রকাশ পেয়েছিল চিনা অনুপ্রবেশের তত্ত্ব। যদিও এপ্রিল মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে সরগরম হতে শুরু করেছিল জাতীয় রাজনীতি। তবে বিষয়টিকে তেমন আমল দিতে রাজি ছিল না কেন্দ্রীয় সরকার। যদিও গালওয়ান সংঘর্ষের পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ভারতীয় জমি কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না।
গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে পূর্ব লাদাখ সেক্টরে ক্রমশই ভারী হতে শুরু করেছিল ভারতীয় বাহিনীর বুটের আওয়াজ। তৎপরতা বাড়িয়েছিল ভারতীয় সেনা বাহিনী ও বিমান বাহিনী।
দিন যত এগিয়েছে চিনা সেনা তার আগ্রাসন প্রতিহত করারয় কঠোর হয়েছে ভারতীয় বাহিনী। একের পর এক কৌশলগত উচ্চ স্থানগুলি দখল করে রাখতে সক্ষম হয়েছিল। দখল করেছিল প্যাংগং লেক সংলগ্ন কালা পাহাড়।
একটা সময় প্যাংগং-এর দখল ছাড়তে মরিয়া ছিল চিনা সেনা। হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় বাড়িয়েছিল সেনা টহল। আনা হয়েছিল অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজও। কিন্তু সমস্ত কিছুকে টক্করদিয়ে প্যাংগং সংলগ্ন এলাকায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করেছিল ভারতীয় সেনা জওয়ানরা।
চিনা সেনার আগ্রাসন প্রতিহত করতে শীতকালেও প্রবল ঠান্ডা আর খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেও লাদাখ সেক্টরে অবস্থান করেছিল ভারতীয় সেনা। শীতকালে এই এলাকায় অতিরিক্ত সেনাও মোতায়েন করা হয়েছিল। লাদাখে অবস্থানকারী সেনাদের জন্য বিশেষ পোষাক আর খাবারও ওষুদের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
চিনা সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ভারী ট্র্যাঙ্কগুলি সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু ডি এসকেলেশনের তেমন কোনও চিহ্ন নেই।
গোগরা, হটস্প্রিং দোপসাং ভ্যালি সহ একাধিক সংঘর্ষ প্রবণ এলাকাগুলির সমস্যা এখনও পর্যন্ত সমাধান হয়নি। দুই দেশের সেনারা এক বছর পরেও চোখে চোখ রেখে অবস্থান করছে।
গ্যালওয়াল সংঘর্ষের পরেই লাদাখ সেক্টরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গিয়েছিলেন রাজনাথ সিং।