- Home
- India News
- দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু করোনার সেকেন্ড ওয়েভ, রাশিয়ার ভ্যাকসিনেই এবার শাপমুক্তি খুঁজছে ভারত
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু করোনার সেকেন্ড ওয়েভ, রাশিয়ার ভ্যাকসিনেই এবার শাপমুক্তি খুঁজছে ভারত
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ। তাই সামনের বছরের প্রথম দিকেও থাকবে সংক্রমণের দাপট। আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এইএমসের-এর ডিরেক্টর। যদিও সবকিছু ঠিক থাকলে বছরের শেষে কিংবা নতুন বছরের শুরুতে ভারতের হাতে আসতে পারে করোনার ভ্যাকসিন। তবে তার জন্যও এখনও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। এই অবস্থায় ভারতের সঙ্গে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন স্পুটনিক ৫-র তথ্য শেয়ার করল রাশিয়া। সম্ভবত ভারতে স্পুটনিক ভি-র তৃতীয় পর্যায়ের র ট্রায়াল শুরু করতে চায় রাশিয়া।
- FB
- TW
- Linkdin
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেশে ৪২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত দেশ হয়ে উঠেছে ভারত। প্রতিদিনই নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙছে সংক্রমণের গ্রাফ। এরই মাঝে, আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন এইএমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। তাঁর অনুমান, তাড়াতাড়ি করোনার সংক্রমণ থেকে নিস্তার পাচ্ছে না দেশ। ২০২১-এও থাকবে করোনার দাপট৷ এখনই করোনার সংক্রমণ থেকে নিস্তার নেই বলেই তিনি মনে করছেন তিনি৷
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস-এর ডিরেক্টর ডঃ রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, দেশে করোনার ‘সেকেন্ড ওয়েভ’ শুরু হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী আরও কয়েক মাস করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
কিন্তু, কেন নতুন করে করোনার হানা? বিশেষজ্ঞদের মতে, একশো চৌত্রিশ কোটি জনসংখ্যার দেশে সংক্রমণ আটকে রাখা মোটেই সহজ কাজ নয়। তাছাড়া, প্রতিদিনই করোনা টেস্টের সংখ্যা বাড়ছে। তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। শুধু বড় শহরই নয়, প্রত্যন্ত এলাকায়ও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকের খামখেয়ালিপনা ও সচেতনতার অভাবও সংক্রমণকে ডেকে আনছে৷
তবে ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী এইএমসের ডিরেক্টর। ভারতে তিনটি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ট্রায়াল চলছে। গুলেরিয়ার মতে, ভ্যাকসিন কতটা নিরাপদ সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভারতে চূড়ান্ত ভ্যাকসিন পেতে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২০’র শেষে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী এইএমসের ডিরেক্টর।
আর এই পরিস্থিতিতে ফের ভারতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াল পুরনো বন্ধু রাশিয়া। ভারতের সঙ্গে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-র তথ্য শেয়ার করল পুতিনের দেশ। সম্ভবত ভারতে স্পুটনিক ভি-র তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করতে চায় রাশিয়া।
ল্যানসেট জার্নালের রিপোর্ট রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ৫’-কে সুরক্ষিত বলেই দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে, প্রথম দফার পরীক্ষায় কোনও স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই অ্যান্টিবডি গঠনে সফল‘স্পুটনিক ৫,’। দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালও সফল। করোনা ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে রাশিয়ার তৈরি এই ভ্যাকসিনই এখন আশার আলো।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গবেষণা সংস্থা স্পুটনিক-৫ এর সুরক্ষা ও কার্যকারিতা সংক্রান্ত বিস্তৃত তথ্য ভারতকে দিয়েছে। মস্কোর গামালিয়া গবেষণা ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি থেকে করোনার ভ্যকসিনের তথ্য চেয়েছিল ভারত।
রাশিয়ার দুই হাসপাতাল আয়োজিত স্পুটনিক ৫ ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করেছিলেন ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়েসি ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবী।
সূত্র জানিয়েছে, ‘ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বিষয়ে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।’ এক্ষেত্রে সমন্বয় রক্ষা করছে বায়োটেকনলজি বিভাগের সচিব প্রধান রেণু স্বরূপ ও রাশিয়ায় নিয়োজিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ডি বি ভেঙ্কটেশ ভর্মা।
রাশিয়ার ভ্যাকসিনের বিস্তৃত তথ্য পর্যালোচনা করবেন ভারতের বিশেষজ্ঞরা। নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের থেকে ছাড়পত্র পেলে বিকল্প হিসাবে ভারতে পৃথকভাবে এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা যেতে পারে। স্পুটনিক ৫ এর সরকারি ওয়েবসাইট অনুসারে, রাশিয়া একাধিক দেশে এই ভ্যকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পরিকল্পনা করেছে। এইসব দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ব্রাজিল ও ফিলিপিন্স।
চলতি মাসেই স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হতে পারে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, ব্রাজিল, ফিলিপিন্স, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো সহ কুড়িটি দেশের মত ভারতও করোনা প্রতিরোধকারী রাশিয়ার তৈরি এই ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রাহ প্রকাশ করেছে।
যদিও স্পুটনিক-৫ নিয়ে রাশিয়ার দাবি সম্পর্কে পশ্চিমি বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে গত ৪ সেপ্টেম্বর ল্যানসেট জার্নালের রিপোর্ট জানায়, রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ৫’ সুরক্ষিত। প্রথম দফার পরীক্ষায় কোনও স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই অ্যান্টিবডি গঠনে সফল‘স্পুটনিক ৫,’। এমনকী ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালও সফল হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ২৮ দিনের মধ্যে টি-সেল সাড়া দিয়েছে।