- Home
- India News
- দেশি জেমস বন্ড অজিত ডোভাল, হলিউডি সিনেমার গল্পের থেকে কম নয় মোদীর এই মুশকিল আসানের জীবন
দেশি জেমস বন্ড অজিত ডোভাল, হলিউডি সিনেমার গল্পের থেকে কম নয় মোদীর এই মুশকিল আসানের জীবন
গত মে মাস থেকে লাদাখে ভারত ও চিনের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছিল সীমান্ত উত্তেজনা। গত ১৫ জুন যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়। চিন ও ভারতীয় সেনার সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। এই ঘটনার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চড়ছিল। দুই দেশই সামরিক পর্যায়ে আলোচনায় বসলেও মিলছিল না কোনও সমাধানসূত্র। বরং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সরছিল না চিনা সেনা। অবশেষে পথে নামতে হল ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে। লাদাখে শান্তি ফেরাতে বেজিংয়ের সঙ্গে ডোভালের বিশেষ বৈঠকেই গালওয়ান থেকে সরল চিনা সেনা। অজিত ডোভাল যেন ভারতের মুস্কিল আসান। দেশি এই ০০৭-এর জীবনও কিন্তু কোনও সিনেমরা থেকে কম কিছু না। একাধিক রোমাঞ্চ ও অ্যাডভেঞ্চারে ভরা রয়েছে তাঁর এই কর্মজীবন।
| Published : Jul 07 2020, 10:07 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
আগেকার দিনে রাজারা গুপ্তচরের ব্যবহার করে তাদের সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতো। এই গুপ্তচরের ব্যবহার বর্তমান সময়েও প্রচুর রয়েছে। সমস্ত দেশেই গুপ্তচর ব্যবহার করে তাদের দেশকে বাঁচাতে। তেমনি ভারতের সুপার গোয়েন্দা এজেন্ট হলেন অজিত ডোভাল। কর্মজীবনের প্রায় সাত বছর ধরে অজিত ডোভাল গুপ্তচর হিসেবে থেকে ছিলেন পাকিস্তানে।
পাকিস্তানের দ্বারা অধিকৃত কাশ্মীরে বিক্ষুব্ধ মানুষদের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য জোগাড় করে ভারতকে দিয়েছিলেন এই সুপার গোয়েন্দা। শুধু তাই নয় জঙ্গিদের ধরার জন্য রিক্সাওয়ালার ছদ্মবেশ ধারণও করেছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরে এদেশে কাউকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ধরা হয় হলে তিনি হলেন অজিত ডোভাল। মোদী সরকারের অন্যতম ভরসাস্থলও ডোভাল। একাধিক ইস্যুতে অজিত ডোভাল কে ভরসা করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অজিত ডোভাল কে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ দেওয়া হয়।
এদেশে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদটি প্রতিরক্ষা এবং বিদেশমন্ত্রীর মতই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ।পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার সময় সবসময়ই সামনে থাকেন অজিত ডোভাল।
অজিত ডোভাল খুব কমই জনসমক্ষে আসেন। এমন কী তাকে ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্যও পাওয়া যায় না। অজিত ডোভালের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা তার সম্পর্কে জানিয়েছেন, তিনি একদম পাবলিসিটি পছন্দ করেন না। আর তিনি বর্তমানে দেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ইস্যু গুলির দিকে লক্ষ্য রাখেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়ার পরে অজিত ডোভাল আফগানিস্তান সফরে যান। এরপরে ভুটান সফরেও মোদি নিয়ে যান অজিত ডোভালকে। বর্তমানে চিন সীমান্তে যে বিতর্কিত অংশ নিয়ে আলোচনা চলছে তাতেও অজিত ডোভাল দায়িত্বে রয়েছেন।
অজিত ডোভাল কে ভারতের জেমস বন্ড বলা হয়ে থাকে। তার কর্মজীবনকে কেন্দ্র করে অনেক গল্প রয়েছে। ১৯৮৮ সালে স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অভিযান চালানোর সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অজিত ডোভাল। সেই সময়কার ঘটনা তুলে ধরেছিলেন প্রাক্তন সেনা অফিসার করন খার্ব।
প্রাক্তন সেনা অফিসার করন খার্ব জানান, সেই সময় স্বর্ণ মন্দিরে প্রবেশ করার জন্য এক রিক্সাওয়ালার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন অজিত। সেখানে থাকা জঙ্গিদের তিনি বোঝাতে পেরেছিলাম যে তিনি একজন পাকিস্তানি। আর তিনি জঙ্গিদের সাহায্য করার জন্য এসেছেন বলে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেন।
সেনা অভিযান চালানোর আগে অনুমান করেছিল মন্দিরের ভিতরে ৪০ জন রয়েছে। কিন্তু অজিত ডোভাল এসে জানান সেখানে রয়েছে ২০০ জন।
এরপর ডোভালের পরামর্শ মন্দিরের বিদ্যুৎ এবং জলের সমস্ত লাইন কেটে দেওয়া হয়। এভাবে প্রচণ্ড গরমে জল না পেয়ে ৯ দিন পর মন্দিরের ভিতরে থাকা জঙ্গি দল আত্মসমর্পণ করে।
কোনরকম সরকারি ওয়েবসাইটে অজিত ডোভালের প্রোফাইল খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে তিনি কোনো এক সময় এক জায়গায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, ১৯৪৫ সালে গাডোওয়ালে তার জন্ম হয়। এরপর ১৯৬৭ সালে অর্থনীতিতে এমএসসি করেন। তারপর পুলিশে যোগ দেন।
এরপর ১৯৭২ সালে আইবিতে যোগ দেন তিনি। সেখানে ৩০ বছর কাজ করেন। এমন কী সেই সময় কাশ্মীর সহ উত্তর পূর্ব ভারতে নজরদারি চালাতে বহুবার গিয়েছিলেন তিনি। উর্দু ভাষাতেও ডোভাল যথেষ্ট দক্ষ।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান, পাকিস্তানের জেলে তিনি সাত বছর কাটিয়েছিলেন। এমন কী তিনি যে হিন্দু নন তার জন্য ছোট্ট প্লাস্টিক সার্জারিও করেছিলেন। এছাড়াও জানা গেছে তার বাড়িতে নাকি কয়েকশো বইয়ের লাইব্রেরি রয়েছে।