মানুষের সেবা করতে বলেছিলেন বাবা, সেই পথে হেঁটেই বিজেপির যুব সহসভাপতি বীরাপ্পন কন্যা
বীরাপ্পন, নাম শুনলে এখনও তামিলনাড়ুর পশ্চিম ঘাট জঙ্গলের অনেকের হাড় হিম হয়ে যায়। স্মৃতিতে ভেসে ওঠে অপহরণ, হত্যার ছবি। কিন্তু এবার এই নামই এক অন্য খাতে এগিয়ে চলবে। সদ্য বিজেপির রাজ্য শাখার যুব মোর্চার সহসভাপতি পদে নিযুক্ত হলেন চন্দনদস্যু বীরাপ্পনের মেয়ে পেশায় আইনজীবী বিদ্যা রানি।
- FB
- TW
- Linkdin
পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু তিন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সাম্রাজ্য চলত বীরাপ্পনের। সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশ, বন দফতরের কর্মী, অফিসার মিলিয়ে কমপক্ষে ১৫০ হত্যার পিছনে তার যোগ থাকার অভিযোগ। শতাধিক হাতি হত্যার অভিযোগ ছিল। চন্দন কাঠের চোরকারবারে যুক্ত থাকার জন্য তার নামই হয়ে গিয়েছিল চন্দনদস্যু। ২০০৪ সালে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় বীরাপ্পনের।
তবে চন্দনদস্যুর মেয়ে বিদ্যার পরিচয় অন্য। আইন নিয়ে স্নাতকস্তরের লেখাপড়া শেষ করে এখন ছোটদের জন্য একটি স্কুল চালান বিদ্যা। তামিলনাড়ুর কৃষ্ণগিরিতে তাঁর স্কুল। এবার তাঁর নতুন পরিচয়, তামিলনাড়ুর রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি নিযুক্ত হলেন তিনি।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই রাজ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন চন্দন দস্যু বীরাপ্পন কন্যা বিদ্যা বীরাপ্পান। অল্প সময়ে সাংগঠনিক স্তর থেকে সমাজ সেবার কাজে নিজের সাফল্যে তামিলনাড়ু রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ সভাপতি পদে আসীন হলেন তিনি।
সমাজের চোখে অপরাধী হলেও বিদ্যার চোখে তার বাবা আজও নিরপরাধ। বিদ্যার মতে, পরিবেশ পরিস্থিতিতেই হয়তো তার বাবাকে এই কাজ করতে হয়েছিল।
২৯ বছর বয়সী পেশায় আইনজীবী বিদ্যা বীরাপ্পান গত ফেব্রুয়ারীতে রাজ্য বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি মূরলীধর রাও এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণনের হাত ধরে বিজেপিতে এসেছিলেন।
পাঁচ মাসে তার সাংগঠনিক দক্ষতা সমাজসেবা এবং যুব সমাজের প্রতি কাজের দূরদর্শিতা সবকিছুই মুগ্ধ করেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বদের। তাই এবার এক কদম এগিয়ে যুব মোর্চার সহ-সভাপতি পদে তাকে নির্বাচিত করেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
বিদ্যা জানান, "আমি কোন ধর্মে বিশ্বাস করি না। মানবতায় বিশ্বাস করি। আমার মূল উদ্দেশ্য সমাজ সেবা।"
তিনি জানান, ছোটবেলা থেকে বাবার সাথে সেভাবে দেখা হয়নি একবারই দেখা হয়েছিল। আমায় বলেছিল ভালো করে পড়াশোনা করে মানুষের সেবা করতে। বাবার বলা কথাকে ভিত্তি করেই আজ যুব সমাজকে পথ দেখাচ্ছেন চন্দনদস্যু বীরাপ্পন কন্যা বিদ্যা বীরাপ্পান।
চন্দনদস্যু বীরাপ্পনের কুখ্যাতি যেমন ছিল তেমনই আবার পিছড়ে বর্গের বানিয়ার সমাজের মধ্যে তার ‘রবিন হুড’-এর মতো ইমেজ রয়েছে। তবে কখনওই কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়নি।
বিদ্যার মা মুথুলক্ষ্মী এখনও পিএমকে-র সহকারী সংগঠন টিভিকে-র সঙ্গে যুক্ত৷ পিএমকে দলটি এনডিএ-র জোট সঙ্গী৷
সামনের বছরই তামিলনাড়ুতে নির্বাচন৷ কিন্তু এআইডিএমকে, ডিএমকে-র মতো দুই আঞ্চলিক দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কিছুতেই দক্ষিণের এই রাজ্যে নিজেদের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারছে না বিজেপি৷ এই পরিস্থিতিতে দলের নতুন কমিটিতে বিদ্যার জায়গা পাওয়াটা তাই অত্যন্তই গুরুত্বপূর্ণ।