ভোপাল গ্যাস বিপর্যয়ের ৩৬ বছর পার, বিষ ধোঁয়ার মৃত্যু অভিশাপ টাটকা করে দিল বিশাখাপত্তনম
- FB
- TW
- Linkdin
১৯৮৪ সালের ৩রা ডিসেম্বর গভীর রাতে মধ্যপ্রদেশের ভোপাল শহরের ইউনিয়ন কার্বাইড রাসায়নিক ফ্যাক্টরির প্ল্যান্ট নাম্বার সি’ থেকে গ্যাস লিক করে৷ সেই বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশে গিয়ে ঘুমের মধ্যে কেড়ে নেয় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ৷
ইউনিয়ন কার্বাইডের ফ্যাক্টরি থেকে ৪০ টন বিষাক্ত মিথাইল আইসোসানাইট গ্যাস লিক করে সেদিন৷ বাতাসে এই গ্যাস মিশে গেলে সেই বায়ু মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তাৎক্ষণিক মৃত্যু নিশ্চিত৷ সেই রাতে ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছিল৷
দুর্ঘটনার পর তদন্ত করে জানা যায়, প্ল্যান্ট নাম্বার সি’তে জলের সঙ্গে মিথাইল আইসোসানাইট গ্যাস মেশানো হয়েছিল৷ মিশ্রণের কারণে গ্যাস ঘনীভূত হতে থাকে৷ একটা সময়ে গ্যাসের পরিমাণ এতটাই বেড়ে যায় যে ট্যাঙ্কে প্রবল চাপ তৈরি করে৷ এরপরই গ্যাস লিক করতে থাকে৷ বাতাসের মধ্যে সেই গ্যাস মিশে গিয়ে ভোপালের বহুলাংশে ছড়িয়ে পড়ে৷ মধ্য রাতে ঘুমের মধ্যে মারা যান হাজার হাজার মানুষ৷
সরকারি হিসেব অনুযায়ী সেই দুর্ঘটনায় ৩৭৮৭ জন মারা যান৷ যদিও বিভিন্ন সংগঠনের দাবি অনুযায়ী মৃত্যু সংখ্যা ২০ হাজারের গন্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ এছাড়া সেই দুর্ঘটনার জেরে শারীরিক ভাবে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েন বহু মানুষ৷
২০০৬ সালে হলফ নামায় তৎকালীন মধ্যপ্রদেশ সরকার জানায়, গ্যাস লিকের কারণে ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার ১২৫ জন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ যার মধ্যে ৩৯০০ জন আংশিক ও পুরোপুরিভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যান৷
গ্যাস লিকের কয়েক ঘণ্টার পরই শহরে যেন মৃত্যু নগরীতে পরিণত হতে থাকে৷ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হিড়িক পড়ে যায়৷ শ্বাসকষ্ট, চোখ ও ত্বকের সমস্যা, বুকে জ্বালায় শহরবাসী ছটফট করতে থাকে৷ ডাক্তাররাও প্রথমে বুঝে উঠতে পারেননি এই রোগের কারণ। রাজধানীর দুটি সরকারি হাসপাতালে প্রথম দু’দিনে ৫০ হাজার মানুষ ভর্তি হন৷ পরে সরকারের তরফ থেকে দূর্ঘটনায় মৃত ও আহতদের পরিবারকে মোট ৭১৫ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়৷
একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১৯১৯ পরবর্তী সময়ে গত ১০০ বছরে প্রধানতম শিল্পদূষণের ফলে হওয়া দুর্ঘটনার অন্যতম ভোপাল দুর্ঘটনা।