- Home
- India News
- তিন যুগ পর ফিরল ভোপালের ভয়ঙ্কর স্মৃতি, ছবির মত সুন্দর শহর বিশাখাপত্তনমে এখন শুধুই হাহাকার
তিন যুগ পর ফিরল ভোপালের ভয়ঙ্কর স্মৃতি, ছবির মত সুন্দর শহর বিশাখাপত্তনমে এখন শুধুই হাহাকার
করোনা মহামারীতে বিশ্ব জুড়ে ধসে পড়েছে অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরে লকডাউন চলছএ ভারতে। এর মধ্যেই তৃতীয় দফার লকডাউনে বেশকিছু ছাড় দিয়েছে ভারত সরকার। আর তাতেই লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছিলেন অন্ধ্রের মানুষ , ঠিক সেইসময়েই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ৷ যা ফিরিয়ে দিল ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বরে ভোপালে ভয়ঙ্কর গ্যাস লিকের স্মৃতিকে। অন্ধ্রপ্রদেশের সৈকত শহর বিশাখাপত্তনমে এখন শুধুই হাহাকারের শব্দ, হাসপাতালে হাসপাতালে অসুস্থদের নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বজনদের ভিড়।
| Published : May 07 2020, 01:44 PM IST / Updated: May 07 2020, 01:52 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
বিশাখাপত্তনমের দক্ষিণ শহরতলির কাছে গোপালপত্তনম এলাকায় রয়েছে এলজি পলিমার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের রাসায়নিক কারখানা। মূলত পলিয়েস্টার পলিথিন তৈরি হয় এই কারখানায়। সেই কাজে ব্যবহার করা হত স্টায়রিন নামের গ্যাস। যা মানব শরীরের পক্ষে বিষাক্ত। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ওই কারখানা থেকে গ্যাস লিক শুরু হয়।
গ্যাস লিকের সময় কারখানায় ছিলেন শুধু নিরাপত্তারক্ষীরা। বিষাক্ত গ্যাস লিক হওয়ায় অচৈতন্য হয়ে পড়েন তাঁরা। ফলে তখন খবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর পর গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে থাকে লোকালয়ে। সাড়ে ৪টের দিকে আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের চোখ জ্বালা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হতে থাকে। যার জেরে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের। খবর যায় পুলিশে। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারের কাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
গ্যাস লিক পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার ছবি-ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। কারখানার থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত স্টায়রিন গ্যাস। সেই গ্যাস শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু মানুষ। অসুস্থ হয়ে রাস্তাতেই পড়ে থাকতে দেখা যায় বহু মানুষকে।
গ্যাস লিকের ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে কেউ বমি করছেন, কেউ ছটফট করছেন। কেউ বা নিথর হয়ে পড়ে আছেন রাস্তার মধ্যে। বহু মানুষকে দেখা যাচ্ছে, মাস্ক পরেই তাঁরা বোঝাচ্ছেন শ্বাস কষ্টের কথা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনীও নেমেছে উদ্ধার কার্যে।
গ্যাস লিকের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ৫ হাজারের বেশি মানুষ। এঁদের মধ্যে হাজার খানেক মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিং জর্জ হাসপাতালে চলছে তাঁদের চিকিৎসা। গ্যাস লিকের ঘটনায় মৃতদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসারত অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানা যাচ্ছে। এঁদের মধ্যে ৮০ জনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক অফিসার জানিয়েছেন, সোশ্যাস ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে কাজ করার জন্য উদ্ধার কার্য চালাতে দেরি হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা এই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজনাথ সিং ও অমিত শাহ। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার ডিজি।
এলজি পলিমারস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি অসুস্থদের দেখতে কিং জর্জ হাসাপাতালে যান।
গ্যাস লিকের খবরে বিস্মিত কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী কংগ্রেস কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সেখানকার অসুস্থ মানুষজনকে সহযোগিতা করার জন্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বিশাখাপত্তনমের মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য প্রার্থনা করেছেন। বিষয়টির দিকে তিনি নজর রাখছেন বলেও জানিয়েছেন।