১৪ দিনের লড়াই শেষ উত্তর প্রদেশের 'নির্ভয়ার', গণধর্ষণ নিয়ে যথারীতি শুরু হয়েছে রাজনীতি
১৬ দিনের লড়াই শেষ। উত্তর প্রদেশের গণধর্ষিতার মৃত্যু হল দিল্লির হাসপাতালে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র কেনই উত্তপ্ত হচ্ছে উত্তকর প্রদেশের রাজনীতির ময়দান। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়রা আবারও সুর চড়িয়ে নিশানা করেছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথকে। তিনি বলেন উত্তর প্রদেশের মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। অন্যদিনে মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মাও গণধর্ষণের তীব্র নিন্দা করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে অভিষুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
- FB
- TW
- Linkdin
গত ১৪ সেপ্টেম্বর মা আর বোনের সঙ্গে ক্ষেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ২০ বছরের তরুণী। সেই সময়ই তাঁর ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় বজরার ক্ষেতে। সেখানেই চলে নৃশংস অত্যাচার।
মা যখন মেয়েকে উদ্ধার করে তখন মেয়েটি ছিল অচৈতন্য। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। অবস্থা খারপ হওয়ায় নিয়ে আসা হয় দিল্লির সফদর জং হাসপতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় তরুণীর। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তরুণী ধর্ষণে বাধা দেওয়ার অভিযুক্তরা তাঁর পর নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিল।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বর্বরোচিত অত্যাচারের সাক্ষী ছিল ১৯ বছরের মেয়েটি। পা দুটি ছিল অসাড়। ঘাড় আর শিরদাঁড়াও ঠিক মত কাজ করছিল না। মুখ আর জিভ ছিল দুষ্কৃতীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত। তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
দলিত সম্প্রদায়ের তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। ধৃতরা প্রত্যেকেই উচ্চবর্ণের। পুলিশ জানিয়েছে খুনের চেষ্টা, গণধর্ষণ, তফশিলি জাতি ও উপজাতি আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
এঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মা। তিনি বলেছেন নিহত নির্যাতিরার পরিবারের পাশে থাকার আস্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি বলেছেন, এজাতীয় ঘটনা রোধ করতে সমাজের মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে।
উত্তর প্রদেশের এই গণধর্ষণের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, রাজ্যের মহিলাদের নিরাপত্তার প্রতি দায়বদ্ধ যোগী আদিত্যনাথ। তিনি মহিলাদের নিরাপত্তার দিকে কোনও নজর দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পাশাপাশি অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
উত্তর প্রদেশের এই গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন দলিত নেত্রী মায়াবতী। তিনি বলেন, ফার্স্ট ট্র্যাক আদালত গঠন করে দ্রুত মামলার নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপি নেতা তথা উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেছেন এই ঘটনার খুবই দুঃখজনক। সরকার নির্যাতিতার পরিবারে পাশে রয়েছে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্তদের। কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
নির্যাতিতার পরিবার ইতিমধ্যেই পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে। জানিয়েছে পুলিশ প্রথমে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চায়নি। ঘটনার চার থেকে পাঁচ দিন পর তদন্ত শুরু করে।
উত্তর প্রদেশের এই নির্মম গণধরর্ষণের ঘটনা মনে করিয়ে দিচ্ছে আট বছর আগে দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডকে। তেমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।