- Home
- World News
- International News
- Afghanistan - যেন রত্ন ভান্ডার, তালিবানদের হাতে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রাকৃতিক সম্পদ, দেখুন
Afghanistan - যেন রত্ন ভান্ডার, তালিবানদের হাতে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের প্রাকৃতিক সম্পদ, দেখুন
গত কয়েকদিনে এত দ্রুত কাবুল তথা আফগানিস্তানের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটেছে, যে গোটা বিশ্বই হতবাক। তালিবান অধিগ্রহণের ফলে এই অঞ্চলের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভবিষ্যত ফের বিশ বাও জলে পড়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির অধিকাংশ জনসংখ্যাই দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। কিন্তু, এই দেশে যা সম্পদ সঞ্চিত আছে, তাতে অতি দ্রুতই দেশটির উন্নয়ন হতে পারে। বস্তুত তালিবানরা আপাতত কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদের উপর বসে -

আফগানিস্তানে ২ মার্কিন ডলারের নিচে যাদের দৈনিক রোজগার, তাদেরকেই দারিদ্রসীমার নিচে বলে ধরা হয়ে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেই দেশের ৯০ শতাংশ জনসংখ্যাই হিসাব অনুযায়ী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।
অথচ আফগানিস্তান প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এক দেশ। ২০১০ সালে, আফগানিস্তানের তৎকালীন খনিমন্ত্রী দেশের অব্যবহৃত ধাতু ও খনিজের মূল্য নির্ধারণ করেছিলেন ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ মহামারীর পর ধাতুর দাম নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ায় এই মূল্য এখন আরও অনেক বেশি।
এর পাশাপাশি মনে করা হয়, আফগানিস্তানেই বিশ্বের বৃহত্তম লিথিয়াম জমা আছে। এই রেয়ার আর্থ মেটালটি রিচার্জেবল ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। যা ইলেকট্রনিক্স থেকে সামরিক যন্ত্রপাতি পর্যন্ত, সবকিছু তৈরিতেই ব্যবহৃত হয়। ২০১০ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ আফগানিস্তানকে 'লিথিয়ামের সৌদি আরব' বলেছিল। মজার বিষয় হল এখন গোটা পৃথিবী, পেট্রোলিয়াম থেকে বৈদ্যুতিক গাড়িতে সরছে। তাই আগামী দিনে আফগানিস্তান সত্যিই লিথিয়াম বিক্রি করে সৌদি আরব হওয়ার ক্ষমতা রাখে।
এছাড়া আফগানিস্তানে তামা, সোনা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ইউরেনিয়াম, বক্সাইট, কয়লা, লৌহ আকরিক, সীসা, দস্তা, রত্ন পাথর, সালফার, ট্র্যাভার্টাইন, জিপসাম এবং মার্বেল পাথর মজুদ রয়েছে। ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের খনি ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক জানিয়েছিল, সেই দেশে প্রায় ৩০ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তামা রয়েছে, যার মূল্য শত শত বিলিয়ন ডলারের সমান।
ওই রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তানে ২.২ বিলিয়ন টনেরও বেশি লৌহ আকরিক রয়েছে। ইস্পাত তৈরির এই কাঁচামালের বর্তমান বাজার মূল্য ৩৫০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
অন্যান্য ধাতুর মধ্যে রয়েছে সোনা, আনুমানিক ২,৭০০ কেজি, যার মূল্য ১৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি। তাছাড়া টিন, সীসা এবং দস্তার মতো ধাতু সারা দেশে ছড়িয়ে আছে।
এছাড়া এই দেশে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল, ১৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের প্রাকৃতিক গ্যাস এবং আরও ৫০০ মিলিয়ন ব্যারেল প্রাকৃতিক তরল গ্যাস রয়েছে বলে মনে করা হয়। ২০১৯ সালের আফগান সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মার্কিন-আফগান যৌথ মূল্যায়নে দেখা গিয়েছে, সেই দেশে মজুত অপরিশোধিত তেলের মূল্য, বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় ১০৭ বিলিয়ন ডলার।
কট্টর ইসলামপন্থী শাসকরা কি এই বিশাল সম্ভাবনাকে দেশের উন্নয়নের কাজে লাগাতে পারবে? বিশ্লেষকরা সেরকম আশা দেখছেন না। তাঁদের আশঙ্কা, বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার হয়েও আফগান জনতা সম্ভবত এই বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র জনগোষ্ঠী হয়েি থেকে যাবে।