- Home
- World News
- International News
- গড়ে উঠবে চিন-বিরোধী মহাজোট, দাদাগিরির না মেনে বছর-শেষে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাস্টারস্ট্রোক
গড়ে উঠবে চিন-বিরোধী মহাজোট, দাদাগিরির না মেনে বছর-শেষে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাস্টারস্ট্রোক
শুরুটা হয়েছিল বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে। তারপর করোনাভাইরাস নিয়ে করেছিলেন তীব্র আক্রমণ। বছরের শেষে এসে দলাই লামা কার্ডে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিব্বত নিয়ে কি গড়ে উঠবে চিন বিরোধী আন্তর্জাতিক মহাজোট?
| Dec 31 2020, 02:42 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
)
গত সপ্তাহেই বৌদ্ধ আধ্যাত্মিক নেতা দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন এবং তিব্বতের পরিবেশ সংরক্ষণে, তিব্বতিদের অধিকার সুনিশ্চিত করে একটি বিল পাস করেছিল মার্কিন কংগ্রেস। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর), সেই বিলে স্বাক্ষরের মাধ্যমে তা আইনে পরিণত করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিল পাসের পরই অবশ্য, তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চিনা বিদেশ মন্ত্রক বলেছিল, এই আইন চিনের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ। মার্কিন-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির হুমকি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এই বিলে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকতে বলেছিল তারা। কিন্তু, বেজিং-এর সেই হুমকিকে পাত্তা দিলেন না ট্রাম্প।
Subscribe to get breaking news alerts
সোমবার, নতুন আইনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষকর করার খবর পাওয়ার পর চিনা বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, বেজিং তিব্বত বিষয়ে এই নয়া মার্কিন আইনটিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তিব্বত সম্পর্কিত সমস্ত বিষয়ই চিনের অভ্যন্তরিন বিষয় বলে আবার জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের ধর্মশালা থেকে নির্বাসিত তিব্বত সরকার বা সেন্ট্রাল টিবেটান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর প্রধান লোবসাং সাঙ্গে বলেছেন, এই আইনটি তিব্বতীদের পক্ষে 'আশা ও ন্যায়বিচারের শক্তিশালী বার্তা'। তিনি আরও বলেন, তিব্বতী জনগণের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মানবাধিকার, পরিবেশ রক্ষার অধিকার এবং নির্বাসিত তিব্বতি গণতন্ত্র রক্ষার জন্য মার্কিন সমর্থন জোরদার করেছে এই আইন।
এই আইনে তিব্বত-কে পৃথক দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানকার প্রধান শহর লাসায় মার্কিন দূতাবাস প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে ১৪তম দালাই লামার উত্তরসূরি বেছে নেওয়া, তিব্বতীদের পরম অধিকার। সেইসঙ্গে তিব্বতের পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও তিব্বতীদেরই শেষ কথা বলার অধিকার বলেও মেনে নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে তিব্বতীদের সঙ্গে চিনের আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মার্কিন আইনে চিন সরকার এবং দলাই লামার মধ্যেও আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিব্বতে চিনা হস্তক্ষেপ কমাতে এক আন্তর্জাতিক জোট গঠনের লক্ষ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই আইনটি আনল বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের দ্বিতীয় ব়হত্তম নেতা পাঞ্চেন লামা হিসাবে গেদহান চোয়েকি নেইমা নামে এক ৬ বছরের ছেলেকে বেছে নিয়েছিলেন স্বয়ং দলাই লামা। কিন্তু, ১৯৯৫ সালে নেইমা-কে গ্রেফতার করে বেজিং, তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে পাঞ্চেন লামা হিসাবে মনোনীত করে। স্রেফ নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল সেই ৬ বছরের ছেলেটি। মানবাধিকার সংগঠনগুলি গেদহান চোয়েকি নেইমা বা পাঞ্চেন লামাকেই বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ রাজনৈতিক বন্দী হিসাবে বিবেচনা করে। শি জিনপিং সরকার দলাই লামার উত্তরসূরি বাছাই-এর জন্যও বেজিং-এর অনুমোদন লাগবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। ১৪তম দলাই লামাকে তারা বিপজ্জনক 'বিচ্ছিন্নতাবাদী' হিসাবে গণ্য করে।
১৯৫০ সালে 'পিসফুল লিবারেশন' বা 'শান্তিপূর্ণ মুক্তি' অভিযানের মাধ্যমে তিব্বত দখল করেছিল চিন। চিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের চেষ্টা করেছিলেন দলাই লামা। সেই বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৫৯ সালের এপ্রিল মাসে হাজার হাজার অনুগামীদের নিয়ে ভারতের ধর্মশালায় পালিয়ে আসেন ১৪তম দলাই লামা। ভারতে বর্তমানে ৮০,০০০ এরও বেশি তিব্বতি বসবাস করেন। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ১,৫০,০০০ নির্বাসিত তিব্বতী।