- Home
- World News
- International News
- ওলিকে ক্ষমতায় রাখতে মরিয়া, নেপালের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতেও কীভাবে নাক গলাচ্ছে চিন, দেখুন
ওলিকে ক্ষমতায় রাখতে মরিয়া, নেপালের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতেও কীভাবে নাক গলাচ্ছে চিন, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
ওলিকে নিয়ে 'প্রচন্ড'র সমস্যা
সম্প্রতি নেপালের কেপি শর্মা ওলি সরকার ভারতের নির্মাণ করা একটি ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা ঘিরে বিতর্ক তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বিবাদে থাকা তিনটি এলাকা যুক্ত করে নেপাল একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছে। যা নিয়ে নজিরবিহীনভাবে ভারতের সঙ্গে বিরোধ বেধেছে নেপালের। শুধু তাই নয়, সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বাধা দিচ্ছে ওলি সরকার। এতে করে একদিকে যেমন দীর্ঘদিনের বন্ধু দেশ ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে, তেমন ওলির এইসব পদক্ষেপের পিছনে, নেপালি জাতীয়তাবাদ উসকে দল এবং সরকারে নিজের ব্যক্তিগত অবস্থান সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মনে করছে তার বিরোধী পক্ষ।
এক ঘরে ওলি
তাঁর এইসব পদক্ষেপ-এ ঘরে-বাইরে বিপদের আশঙ্কা করছেন নেপালি কমিউনিস্ট পার্টিতে তাঁর দুই বিরোধী পক্ষ প্রচণ্ড এবং মাধব নেপাল-এর সমর্থকরা। তাঁরা ওলিকে সাফ জানান, হয় দলীয় পদ, নইলে সরকারি প্রধানের পদ - দুটির কোনও একটি তাঁকে ছাড়তেই হবে। কেপি শর্মা ওলি প্রথমে এই বিরোধের দায় চাপানোর চেষ্টা করেন নয়াদিল্লির উপর। এমনকী প্রচন্ড এবং তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে দিল্লির কথায় চলার অভিযোগও করেছিলেন। তাতেই বিরোধ আরও বেড়ে গিয়েছে। এখন তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন প্রচন্ড।
নেপালে চিনা হস্তক্ষেপ
এরমধ্যে নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির এই ভাঙন রুখতে ব্যান্ডেড লাগানোর কাজ শুরু করেছে চিন। এর জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে চিনা রাষ্ট্রদূত হউ ইয়াঙ্কি-কে। মঙ্গলবারই তিনি নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ঝালানাথ খানাল-এর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বিরোধী প্রায় সব এনসিপি নেতাদের সঙ্গেই গত কয়েকদিন ধরে সমানে কথা বার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দেখা করেছেন রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভান্ডারি এবং কমিউনিস্ট নেতা মাধব কুমার নেপাল-এর সঙ্গেও। নেপাল ও খানাল-এর সঙ্গে বৈঠক করলেও হউ-এর সঙ্গে এখনও দেখা করতে সম্মত হননি প্রচন্ড, এমনটাই জানা গিয়েছে।
নেপালে চিনের সমালোচনা
নেপালি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চিনের এই নাক গলানো নেপালের নাগরিকরা কিন্তু ভালোভাবে নিচ্ছেন না। রাষ্ট্রদূত হিসাবে হউ-এর ভূমিকার তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে কেপি শর্মা ওলি-কে ঘুঁটি বানিয়ে পিছন থেকে নেপালের সরকার চালাতে চাইছে চিন।
চিনের সাফাই
চিনা দূতাবাস অবশ্য হউ ইয়াঙ্কি-র এই ভূমিকায় কোনও ভুল দেখছেন না। চিনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি সমস্যায় থাকুক, এমনটা চায় না চিন। বেজিং চায় নেপালি কমিউনিস্ট নেতারা মতপার্থক্য ভূলে ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আর চিনা দূতাবাসের নেপালি নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। যে কোনও সাধারণ আগ্রহের বিষয়ে তারা মতবিনিময় করে থাকে।
চিনা ওষুধে আটকাবে ভাঙন?
তবে চিনের এত চেষ্টার পরও নেপালি কমিউনিস্ট পার্টিতে ভাঙন রোখা যাবে বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কাঠমান্ডু পর্যবেক্ষকরা বলছেন ওলি নিজেই নিজের পায়ের তলার মাটি খুঁড়েছেন। তা ফেরানোর আর সম্ভাবনা নেই। পরিবর্তে, তিনি দল ভেঙে বেরিয়ে গিয়ে শের বাহাদুর দেউবা-র নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেসের সাথে জোট বেঁধে সরকার ধরে রাখার পথে হাঁটতে পারেন।
বেজিং কী চায়?
নেপালে বেজিং-এর ট্রাম্পকার্ড ওলি-ই। কেপি শর্মা ওলি যদি কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে বেরিয়ে যান সেই ক্ষেত্রেও চিন তাঁকে সমর্থন করবে কি না, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে দলে থাকলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ওলিকে কিছুতেই সরাতে দেবে না বেজিং। বেজিং-এর এই সমর্থনে পুষ্ট হয়ে ওলি শেষ অবধি দলেই জয়ী হন, না দল থেকে বেরিয়ে গিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করেন, সেটাই এখন দেখার।