- Home
- World News
- International News
- পঞ্জশির কাদের দখলে, প্রবল ধোঁয়াশা - তালিবানদের সঙ্গেই লড়ছে আল-কায়েদা, পাকিস্তানও
পঞ্জশির কাদের দখলে, প্রবল ধোঁয়াশা - তালিবানদের সঙ্গেই লড়ছে আল-কায়েদা, পাকিস্তানও
পঞ্জশির উপত্যকা এখন কাদের দখলে? ব্যাপক সংঘর্ষের মধ্যে এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তালিবান এবং পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বলছে পঞ্জশির বিজয়ের ফলে পুরো আফগানিস্তান এখন তালিবানি শাসনে। প্রতিরোধ বাহিনীর নেতারা অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহ ধরে তালিবান এবং পঞ্জশিরের প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে সংঘর্ষ চলছিল। তারসঙ্গে দুইপক্ষে একটা শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য আলোচনাও চলছিল। তবে, গত চার দিন ধরে তালিবান এবং প্রতিরোধ বাহিনীর মধ্যে অবিরাম সংঘর্ষ চলছে।
| Published : Sep 04 2021, 12:24 AM IST / Updated: Sep 04 2021, 12:29 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
শুক্রবার এক তালিবান কমান্ডার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের কাছে দাবি করেন, 'মহান আল্লার রহমতে আমরা পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়েছে এবং পঞ্জশির এখন আমাদের অধীনে রয়েছে।'
বৃহস্পতিবার রাত থেকে দুই পক্ষে তীব্র লড়াই চলছিল পঞ্জশিরে। উভয় পক্ষেই ব্যাপক হতাহতের খবর আসছিল। অবস্থা এমন জায়গায় পৌছায়, যে প্রাক্তন আফগান রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই, যুযুধান দুই পক্ষকেই সংঘর্ষ বন্ধের আবেদন জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, রক্তপাতে আফগানিস্তান এবং আফগান জনগণের জন্য কোন ভাল হবে না।
সংঘর্ষের মধ্যেই, তালিবানরা দাবি করেছিল, পঞ্জশির প্রতিরোধের অন্যতম নেতা আমরুল্লা সালে তাজিকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছেন। শোনা যাচ্ছিল বৃহস্পতিবার তিনি ও পঞ্জশিরের অন্যান্য কমান্ডাররা দুটি বিমান নিয়ে পালিয়েছেন। তবে পরে এক ভিডিও বার্তায় আমরুল্লা সালেহ দাবি করেন তিনি এখনও পঞ্জশিরেই আছেন। আর প্রতিরোধ বাহিনীর সঙ্গে তালিবানদের সংঘর্ষও চলছে। ের আগে তিনি নিজেকে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি দাবি করে, তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন।
পঞ্জশিরের নেতা আহমদ মাসুদের টুইটার হ্যান্ডেলেও দাবি করেছে, তালিবানদের পঞ্জশির বিজয়ের খবর মিথ্যা। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলি তালিবানদের হয়ে মিথ্যা প্রচার করছে। তিনি আরও বলেছেন, '(তালিবানদের) পঞ্জশির বিজয়, ইনশাআল্লা, পঞ্জশিরে আমার শেষ দিন হবে'।
তবে একাধিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, শেষ প্রতিরোধ পঞ্জশির দখলে একা ঝাঁপায়নি তালিবানরা। এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের এই দুর্ভেদ্য প্রদেশে হামলা চালাতে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে আল-কায়েদার জঙ্গি-বাহিনীও। আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, 'আল-কায়েদার জঙ্গি ইউনিটগুলি তালিবানদের সঙ্গে পঞ্জশির আক্রমণে যোগ দিয়েছে'।
আমরুল্লা সালেও পঞ্জশির হামলায় আল-কায়েদার উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি অবশ্য শুধু তালিবান ও আল কায়েদা নয়, পাকিস্তানি এবং অন্যান্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে পঞ্জশির আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
একই সঙ্গে পঞ্জশির উপত্যকায় চিকিৎসা সরবরাহ-সহ মানবিক সমস্ত পরিষেবা আসা বন্ধ করে দিয়েছে তালিবানরা। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের অভিযোগ করেছেন প্রাক্তন আফগান উপরাষ্ট্রপতি। তার আরও অভিযোগ, পঞ্জশিরের নিরীহ মানুষদের মাইনফিল্ডের মধ্য দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করছে তালিবানরা। এভাবেই তারা প্রতিরোধ বাহিনীর মাইনগুলি নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে।
আফগানিস্তানে প্রথম তালিবানি শাসনের সময় পঞ্জশির দখল করতে পারেনি কট্টরপন্থীরা। তালিবানদের প্রকতিহত করতে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে পঞ্জশিরের নেতা আহমদ শাহ মাসুদ নর্দান অ্যালায়েন্স বা উত্তরের জোট গঠন করেছিলেন। ভারত-সহ বিশ্বের অনেক দেশই সেই জোটকে সমর্থন করেছিল। তালিবানদের দ্বিতীয় শাসনের শুরুতেই ফের পঞ্জশিরে উড়ছে উত্তরের জোটের পতাকা।