- Home
- World News
- International News
- তালিবানদের উৎখাতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে 'পাঁচ সিংহে'র উপত্যকা - জড়ো হচ্ছে নর্দান অ্যালায়েন্স
তালিবানদের উৎখাতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে 'পাঁচ সিংহে'র উপত্যকা - জড়ো হচ্ছে নর্দান অ্যালায়েন্স
- FB
- TW
- Linkdin
পারস্য পঞ্জশির শব্দের বাংলা করলে হয় পাঁচটি সিংহ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আফগানিস্তানে রাজত্ব করার সময়ও তালিবানরা এই উপত্যকা দখল করতে পারেনি। এমনকী তার আগে ১৯৭-৮০র দশকে সোভিয়েত বা হলে মার্কিন সেনাও এখানে পা রাখতে পারেনি। এটি বরাবর একটি মুক্তাঞ্চল হিসাবে রয়ে গিয়েছে।
আফগানিস্তানের চৌত্রিশটি প্রদেশের অন্যতম পঞ্জশের। ৫১২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই প্রদেশ সাতটি জেলায় বিভক্ত। ২০২১ সলের গণনা অনুযায়ী এই প্রদেশের জনসংখ্যা ১,৭৩,০০০। প্রাদেশিক রাজধানী বাজারক।
রাজধানী কাবুলের উত্তর-পূর্বে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত পঞ্জশের প্রদেশ। মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ত্যাগ করার পর প্রায় গোটা দেশটিই তালিবানদের দখলে চলে গেলেও, এই উপত্যকা এখনও তালিবান-মুক্ত। আর এখানেই আশ্রয় নিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা নিজেকে তত্ত্বাবধায়ক রাষ্ট্রপতি দাবি করা আমরুল্লা সালে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পঞ্জশেরের তালিবান বিরোধী নেতা আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমদ মাসুদের সঙ্গে সালের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। এই সোশ্যাল আহমদ শাহ মাসুদই একসময় ছিলেন সালের মেন্টর। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার ঠিক আগে আল কায়েদা ও তালিবানদের ষড়যন্ত্রে তিনি নিহত হন।
সোশ্য়াল মিডিয়াতে মাসুদ আফগান সৈন্যদের পঞ্জশেরে জড়ো হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন। বস্তুত এই এলাকার ভৌগলিক অবস্থানের জন্য একটা প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা ব্যবস্থা রয়েছে। যা, এই প্রদেশের মানুষদের করে তুলেছে সিংহ হৃদয়।
নর্দান অ্যালায়েন্স-এর পুনরুত্থানের জন্য গোটা আফগানিস্তান এখন পঞ্জশেরের দিকে তাকিয়ে আছে। এই জোট ছিল তালিবান বিরোধী উত্তর অফগানিস্তানের কয়েকটি শক্তির জোট। সেই জোটের পতাকা এখনও পঞ্জশিরে পতপত করে উড়ছে। তাকেই প্রতিরোধের প্রতীক হিসাবে দেখা হচ্ছে।
১৯৯৬ সালে তালিবানদের মোকাবেলা করার জন্যই এই জোট গঠিত হয়েছিল। তাদের সমর্থন দিয়েছিল ভারত, ইরান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের মতো দেশ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত নর্দান অ্যাসায়েন্স তালেবানদের পুরো দেশ দখল করতে বাধা দিয়েছিল।
তবে এবার তালিবানদের প্রতিরোধের কাজটা সালে-মাসুদ এবং তাদের অনুগামীদের জন্য মোটেই সহজ হবে না। এমনকী, দুর্গ ধরে রাখাও কঠিন হতে পারে। কারণ আফগান বাহিনী তালিবানদের হাতে আত্মসমর্পণ করেছে।
পঞ্জশেরের চারপাশ ঘিরে রয়েছে তালিবানদের শক্ত ঘাঁটি। আর মার্কিন বাহিনী আফগান বাহিনীকে যে অত্যাধুনিক অস্ত্র, সাঁজোয়া যান, রকেট লঞ্চার এবং সামরিক যান দিয়ে গিয়েছিল তা এখন তালিবানদের হাতে। তাই তারা এখন আর শুধু বন্দুক হাতে জঙ্গি বাহিনী নয়, তারা এখন একটি পেশাদার সামরিক বাহিনীর সমান শক্তিশালী।
দেশজুড়ে তালিবানদের উল্কার বেগে অগ্রগতি এবং ক্রমাগত পরাজয়ে আফগান বাহিনীর মনোবল এখন তলানিতে। তাই বিদেশি সমর্থন ছাড়া সালেদের পক্ষে উন্নত সামরিক অস্ত্রে সজ্জিত তালিবানদের প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।