- Home
- World News
- International News
- ২৬ বছরের হয়েছিলেন মেয়র, এখন খুন হওয়ার অপেক্ষায় - ছবিতে ছবিতে চিনে নিন দুর্ধর্ষ আফগান যুবতীকে
২৬ বছরের হয়েছিলেন মেয়র, এখন খুন হওয়ার অপেক্ষায় - ছবিতে ছবিতে চিনে নিন দুর্ধর্ষ আফগান যুবতীকে
- FB
- TW
- Linkdin
কে এই জারিফা গাফারি? তিনি আফগানিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ এবং সর্বপ্রথম মহিলা মেয়র। শুধু তাই নয়, মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য তিনি সর্বদা লড়াই করে এসেছেন।
এখনও তাঁর বয়স ৩০ পার করেনি, ২৯। আর ২০১৮ সালে যখন প্রথম তিনি ময়দান ওয়ারদক প্রদেশের মেয়র হয়েছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। এর পাশাপাশি তিনি নিজের একটি রেডিও শো চালান এবং অর্থনৈতিকভাবে নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তালিবানরা তাঁর মতো বলিষ্ঠ ক্ষমতাবান মহিলাদের কোনওদিনই পছন্দ করত না। ফলে, খ্য়াতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি শীঘ্রই তালেবানদের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন। তিন-তিনবার তার প্রাণনাশের চেষ্টা হয়েছে, তবে তিনি বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছেন।
তাঁর বাবার ভাগ্য অবশ্য ততটা প্রসন্ন ছিল না। জারিফাকে না মারতে পেরে তালিবানরা নিশানা করেচিল তাঁর বাবাকে। ২০২০ সালে তাঁকে গুলি করে ঝাঁঝড়া করে দিয়েছিল ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠীটি।
কাবুলের শীর্ষস্থানীয় আমলা এবং রাজনীতিবিদরা প্রায় সকলেই বর্তমানে তালিবানদের হাত থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কিন্তু জারিফার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। তিনি কাবুলেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি জানেন তালিবানদের হাতে দেশের পতন অনিবার্য। তবু, সম্প্রতি দেশের তরুণ সমাজদের প্রতি দারুণ আস্থা প্রদর্শন করেছেন তিনি। তাঁর আশা দেশের অগ্রগতি ও জাতির অধিকারের জন্য তারা লড়াই চালিয়ে যাবে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে জারিফাকে মার্কিন বহিদেশ দফতর সাহসী নারী হিসাবে সম্মানিত করেছিল। সেই সময় ট্রাম্প প্রশাসন তালিবানদের সঙ্গে শান্তিচুক্তির কথা চালাচ্ছে। এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে আফগানিস্তানে মহিলাদের অধিকার রক্ষার জন্য তিনি তৎকালীন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেওর কাছে ব্যক্তিগতভাবে আবেদন করেছিলেন।
কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেইদিকে কোনো মনোযোদগই দেয়নি আমেরিকা। তালিবানদের সরকারী মুখপাত্র জাবিবুল্লাহ মুজাহিদ অবশ্য জানিয়েছেন মহিলা এবং এর আগে সরকার পক্ষের হয়ে যারা লড়েছেন, সবার জীবন রক্ষা করা হবে। এমনকী, কাবুল দখলের পর, মঙ্গলবার প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনেও তালিবানরা মহিলাদের কাজে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।
তবে তা একেবারেই কথার কথা বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা। কারণ একইসঙ্গে তালিবানরা জানিয়েছে, ইসলামি আইন নারীদের যে যে কাজের অনুমতি দেয়, তাই করতে পারবে তারা। সেইসঙ্গে, ইতিমধ্যেই যেসব এলাকা পুরোপুরি তালিবানদের দখলে রয়েছে, সেখানে প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড এবং বিশেষ করে মহিলাদের উপর নৃশংস কৌশল প্রয়োগ, হিংসার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
কাবুলের পতনের পর জারিফা বলেছেন, তিনি তালিবানদের আসার অপেক্ষায় বসে আছেন। তাঁকে বা তাঁর পরিবারকে সাহায্য করার কেউ নেই। শুধু তিনি আর তাঁর স্বামী আছেন। তিনি জানেন তালিবানরা তাঁর মতো মানুষের জন্যই আসবে এবং তাঁকে হত্যাও করবে। তাও পরিবারকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না তিনি। কোথায়ই বা যাবেন, প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন তিনি।