- Home
- World News
- International News
- মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও চলে কড়া নজরদারি, চিনা নৃশংসতার ভয়ঙ্কর বিবরণ দিলেন পলাতক নাগরিকরা
মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও চলে কড়া নজরদারি, চিনা নৃশংসতার ভয়ঙ্কর বিবরণ দিলেন পলাতক নাগরিকরা
মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও নজরদারি। এমনই ভয়ঙ্কর অভিযোগ করেছেন চিনের উইঘুররা মুসলমানরা। সদ্যোজাতদের রক্ষা করতে পালাতে হয় দেশ ছেড়ে। কিন্তু কেন এই পথে হাঁটে চিন?
- FB
- TW
- Linkdin
উইঘুর মুসলিম মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও নজর রাখছে চিন। কবে তাঁরা ঋতুমতি হচ্ছেন তার উপর নজরদারি চালায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। চিন থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে তুর্কির ইস্তাম্বুল শহরে পালিয়ে এসেছেন এইরকম বেশ কয়েকজন চিনা উইঘুর মহিলা। তাঁরাই এই ভয়ঙ্কর তথ্য ফাঁস করেছেন।
তাঁরা জানিয়েছেন, চিনে উইঘুর মুসলিমদের দুজনের বেশি সন্তান ধারণের অনুমতি দেওয়া হয় না। দুইবার গর্ভবতী হওয়ার পরই তাঁদের গর্ভপাত করতে বাধ্য করে শি জিনপিং প্রশাসন। কিন্তু এর বেশি সন্তান ধারণের অনুমতি নেই তাঁদের। এর থেকে বেশি সন্তান হলে, তার জন্য শাস্তি পেতে হয় বাবা-মা'কে। সেই ছোট্ট শিশুর উপরও নেমে আসতে পারে কঠোর ব্যবস্থা। এই অবস্থায় কেউ কেউ তাঁদের সন্তানদের লুকিয়ে রাখেন। আর সুযোগ পেলেই প্রশাসনিক অত্যাচার এড়াতে তাঁরা দেশ ছেড়ে পালান।
জানা গিয়েছে, চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে হাসপাতালে কোনও উইঘুর মহিলাদের প্রসবের পরই তাদের স্টেরিলাইজ বা নির্বীজকরণ করার জন্য নথিতে স্বাক্ষর করানো হয়। অর্থাৎ, দুই সন্তান ধারণের পরই তাঁদের সন্তান ধারণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেওয়া হয়। এমনকি সরকারি আধিকারিকরা মহিলাদের ঋতুস্রাবের উপরও লক্ষ্য রাখেন, যাতে কারোর গর্ভাবস্থা সনাক্ত করা যায়।
তবে সবসময়ই যে কোলের সন্তানদের বাঁচাতে ভিটে-মাটি ছেড়ে পালাতে হয় ইউঘুর মুসলিমদের, তা নয়। দুই সন্তানের বেশি সন্তান নিয়েও তাঁরা চিনে বসবাস করতে পারেন। এর জন্য মোটা অর্থ ঘুষ দিতে হয় প্রশাসনিক কর্তা, স্থানীয় পুলিশ কিংবা চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের। অর্থ থাকলে চিনে সবই করা যায়, বলেই জানিয়েছেন, পালিয়ে আসা উইঘুর মহিলারা।
কিন্তু কেন এমনটা করে চিন?এর প্রধান কারণ জয়সংখ্য়ার ভার লাঘব করা। ২০১৮ সালের জনগণনা অনুযায়ী চিনের বর্তমান জনসংখ্যা বিশ্বে সর্বাধিক, ১৩৯ কোটিরও বেশি। তবে সন্তান ধারণের ক্ষেত্রে কড়া আইন প্রয়োগ করে, তারা গত কয়েক বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেকটাই কমাতে পেরেছে।
উইঘুর মহিলাদের উপর এই অত্যাচার শুধু সেই কারণেই, এমনটা হয়তো মনে করছেন না মানবাধিকার কর্মীরা। তাঁদের মতে তিব্বতীদের মতোই উইঘুরদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয় ঘুচিয়ে দিতে চাইছে বেজিং। আর সেই সঙ্গে শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে উইঘুর মুসলমানদের শরীরের অঙ্গ-ও বের করে নেওয়া হয়, অন্য চিনা নাগরিকদের দেহে প্রতিস্থাপনের জন্য, এমনটাই অভিযোগ।
বর্তমানে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ একাধিক দেশ চিন-কে দায়ী করেছে। একই সঙ্গে ভারত, ভুটান, বা দক্ষিণ চিন সাগরের দেশগুলির উপর আগ্রাসনের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে চিন। উইঘুর মুসলমানদের শোষণের জন্য চিনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বন্ধ হচ্ছে না চিনে। বরং নৃশংসতার আরও ভয়াবহ সব কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।