- Home
- World News
- International News
- তালিবানের সাক্ষাতকার নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন এই মহিলা - সেই সাংবাদিকের এখন কী অবস্থা, দেখুন
তালিবানের সাক্ষাতকার নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন এই মহিলা - সেই সাংবাদিকের এখন কী অবস্থা, দেখুন
বয়স তার মাত্র ২৪। আর এই বয়সেই এক দুঃসাহসিক কাজ করে ইতিহাসে নাম তুলে ফেলেছেন বেহেস্তা আরগান্ধ। আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের হয়ে টেলিভিশনে তিনি এক পদস্থ তালিবান প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। যার জেরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর নাম। কিন্তু, তারপরও তিনি দেশে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেননি, পালিয়েছেন দেশ ছেড়ে।
- FB
- TW
- Linkdin
আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের প্রতিনিধি ছিলেন বেহেস্তা। ১৫ অগাস্ট কাবুল দখল করেছিল তালিবানরা। আর ১৭ অগাস্টই চ্যানেলের হয়ে লাইভ টেলিভিশনে তিনি এক পদস্থ তালিবান প্রতিনিধির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেই প্রথম লাইভ টিভিতে কোনও মহিলা উপস্থাপকের সামনে বসে সাক্ষাৎকার দিয়েছিল তালিবান সদস্য।
তালিবান প্রতিনিধির সাক্ষাতকার নেওয়ার কয়েকদিন পরই আবার তিনি নোবেল পুরস্কার জয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেটি ছিল, কোনও আফগান চ্যানেলে মালালার দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকার। পাকিস্তানে মেয়েদের পড়াশোনার দাবি করায় মালালার উপর হামলা চালিয়েছিল তালিবানরা।
অর্থাৎ একের পর এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার নিয়ে বেহেস্তা আরগান্ধ তাঁর সাংবাদিক জীবনের একেবারে মধ্য গগনে ছিলেন। যে স্বপ্ন তিনি সেই নবম শ্রেনিতে পড়ার সময় থেকে দেখেছিলেন। কিন্তু, তারপরও তিনি পালালেন কেন? মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেহেস্তা তিনি বলেছেন, আরও লাখ লাখ মানুষের মতো তিনিও তালিবানদের ভয় পান।
তালিবানরা কাবুল দখল করার পর, তাদের প্রতিনিধির সাক্ষাতকার নেওয়ার পরও তিনি মনে করছেন, তাঁর প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে তালিবানিস্তানে। তবে, আশা দেখতেও ছাড়ছেন না তিনি। জানিয়েছেন, তালিবানরা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা যদি রক্ষা করে এবং পরিস্থিতি একটু ভাল হয়, যদি তিনি মনে করেন, আফগানিস্তানে তিনি নিরাপদ থাকবেন, তবেই তিনি আবার দেশে ফিরে যাবেন। নিজের দেশের হয়েই কাজ করতে চান বেহেস্তা। নিজের মানুষদের জন্য।
তালিবান প্রতিনিধির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারটি যুগান্তকারী হলেও, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর পক্ষে কাজটা 'কঠিন ছিল' বলেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, আফগান মহিলাদের সাহস যোগাতেই তিনি ওই সাক্ষাতকারটি নিয়েছিলেন। বেহেস্তা দাবি করেছেন, তালিবান সদস্যদের তিনি নারীদের অধিকার সুরক্ষিত করার কথা বলেছিলেন।
তালিবান প্রতিনিধিকে বেহেস্তা মুখের উপর জানিয়েছিলেন, আফগান মহিলাদের প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে। তারা কাজ করতে চান। সমাজে তাদের জায়গা দিতেই হবে। কারণ এটা তাদের অধিকার। তিনি আরও জানিয়েছেন, মহিলাদের আরও বেশি করে করে বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। যদি তারা বাড়িতে বসে থাকেন, অফিসে না যান, তবে তালিবানরা বলার সুযোগ পেয়ে যাবে যে, মহিলারা বাইরে কাজ করতে চায় না।
অন্যদিকে টোলো নিউজের মালিক, সাদ মোহসেনি জানিয়েছেন, বেহেস্তা আরগান্ধের অবস্থা, তালিবান শাসিত আফগানিস্তানেরই প্রতিচ্ছবি। তিনি জানিয়েছেন, ভাল ভাল সাংবাদিকরা প্রায় সকলেই দেশ ছেড়েছেন। তাদের বদলি খুঁজতে গিয়ে তাদের পাগল হয়ে যাওয়ার দশা। প্রথমত, যারা রয়ে গিয়েছেন, তারা এতটাই নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছেন, যে বাড়ির বাইরে বের হতেই চাইছেন না। তার সঙ্গে রয়েছে তালিবানি শাসনের অধীনে সাংবাদিকতার কাজ চালিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ।
কিছুদিন আগে, টোলো নিউজের একজন আফগান রিপোর্টার এবং একজন ক্যামেরাম্যানকে কাবুলেই মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তালিবানদেরা বিরুদ্ধে। কাবুলের পাশাপাশি জালালাবাদেও সাংবাদিকদের ওপর হামলার খবর জানা গিয়েছে। শুধু সাংবাদিকদের বাড়ি নয়, তাদের আত্মীয়দের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে তালিবান যোদ্ধারা। এক জার্মান সাংবাদিকের পরিবারের এক সদস্যকেও তারা হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।