- Home
- World News
- International News
- ফোন-ইন্টারনেটের লাইন কেটে দিল তালিবান - পঞ্জশির কি পারবে প্রতিরোধ চালাতে, দেখুন ছবিতে ছবিতে
ফোন-ইন্টারনেটের লাইন কেটে দিল তালিবান - পঞ্জশির কি পারবে প্রতিরোধ চালাতে, দেখুন ছবিতে ছবিতে
সরাসরি যুদ্ধে পঞ্জশির দখল করা কঠিন। তাই এবার কৌশল বদলালো তালিবান। শুরু হল মানসিক চাপের খেলা। পঞ্জশির উপত্যকাকে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিল তারা। তবে কি এবার আত্মসমর্পনই করবে প্রতিরোধ বাহিনী?
- FB
- TW
- Linkdin
বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন পঞ্জশির উপত্যকা। এই এলাকা থেকেই নিয়মিত তালিবান বিরোধী টুইট করে দেশবাসীকে জাগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন স্বঘোষিত ভারপ্রাপ্ত আফগান প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালে। উপত্যকার টেলিফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে তালিবানরা, এমনটাই জানিয়েছে ঘটনার সম্পর্কে ওয়াকিবহান এক সূত্র।
তালিবান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে সচেতনতা করতে নিয়মিত টুইট করে থাকেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লা সালে। বৃহস্পতিবার, কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের পর তালিবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়েও টুইট করে তালিবান নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, সূত্রের দাবি, তালিবান নেতৃত্ব মনে করছে পঞ্জশির থেকেই গোটা দেশে গুপ্তচরদের মাধ্যমে তালিবানদের বিভিন্ন ভিতরের খবরাখবর সংগ্রহ করছেন সালে। তিনি নিজে এর আগে আফগান সরকারের গোয়েন্দা প্রধান ছিলেন। সারা দেশে তালিবানদের মধ্যে চর ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।
ফোন এবং ইন্টারনেট বন্ধ করলে, সালের এই তথ্য সংগ্রহ আটকানো যাবে। শুধু তাই নয়, দেশের অন্যান্য অংশের তালিবান বিরোধী শক্তিদের সঙ্গেও, পঞ্জশিরের প্রতিরোধ বাহিনীর যোগাযোগ বন্ধ হবে। আর এর ফলে তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেকটাই পিছিয়ে যাবে তারা।
একইসঙ্গে সিএনএন-নিউজ ১৮-এর এক প্রতিবেদনে, পঞ্জশির প্রতিরোধ বাহিনীর এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রতিরোধ বাহিনীর উপর 'মানসিক চাপ' সৃষ্টির চেষ্টা করছে তালিবানরা। অসামরিক নাগরিক, এলাকার বাস্তুচ্যুত মানুষ এবং হাসপাতালগুলির উপরই এই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার গুরুতর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে এইভাবে মৌলিক পরিষেবাগুলি থেকে বঞ্চিত করা অপরাধ বলে দাবি করেছে তারা।
তবে প্রতিরোধ বাহিনীর দাবি, তালিবানদের এই পদক্ষেপের কোন প্রভাব তাদের সামরিক প্রস্তুতির উপর পড়বে না। কারণ, তালিবানরা যে এরকমটা করতে পারে তা তারা আন্দাজ করেছিল। এর আগে সার্বিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট স্লোবোডান মিলোসেভিচ ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং কসোভো এই ধরণের জঘন্য কতৌশল নিয়েছিলেন। এমনটা হতে পারে, ধরে নিয়েই সামরিক পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে যে যে স্তানে প্রতিরোধের মুখে পড়ছে তালিবানরা, তারমধ্য়ে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পঞ্জশির উপত্যকা। প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট সালে, নিহত সামরিক কমান্ডার আহমদ শাহ মাসুদের পুত্র আহমেদ মাসুদ এবং আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী -তিন জনেই ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁরা আফগান জাতীয় বাহিনীর অবশিষ্ট সেনা এবং নর্দান অ্যালায়েন্স বাহিনীকে একত্রিত করে তালেবানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে ডাক দিয়েছেন।
আহমেদ মাসুদ সাফ জানিয়েছিলেন তালিবানদের কাছে পঞ্জশির আত্মসমর্পণ করবে না। তাঁর বাবার সময় থেকেই ধৈর্য ধরে গোলাবারুদ এবং অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। আর জানিয়েছিলেন, তাঁর হাতে আছে ৬০০০ নিবেদিত প্রাণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যোদ্ধা।
তবে গত কয়েকদিনে পাশা পাল্টে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মাসুদ আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়েছিলেন, যা এই মুহূর্তে অসম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। তালিবানরা বর্তমানে পঞ্জশির উপত্যকার খুব কাছেই অবস্থান করছে। গত সপ্তাহেই উত্তর আফগানিস্তানে, স্থানীয় যোদ্ধা বাহিনীর হাতে খোয়া যাওয়া তিনটি জেলার নিয়ন্ত্রণ, ফের নিজেদের হাতে নিয়েছে তারা। এই অবস্থায় প্রতিরোধ বাহিনী সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির একটা উপায় খুঁজছে, বলে জানা গিয়েছে। তা না পেলে হয়তো সেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবে তারা।