- Home
- World News
- International News
- চিনা রাষ্ট্রপতি এখন 'তিব্বতী ধর্মগুরু' - বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শয়নকক্ষেও তিনিই, দেখুন ছবিতে ছবিতে
চিনা রাষ্ট্রপতি এখন 'তিব্বতী ধর্মগুরু' - বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শয়নকক্ষেও তিনিই, দেখুন ছবিতে ছবিতে
- FB
- TW
- Linkdin
চিনের মোট স্থলভাগের ১২ শতাংশেরও বেশি জায়গা নিয়ে গঠিত তিব্বত। তবে, হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই পবিত্র স্থানে লোক থাকে মেরে কেটে মাত্র ৩৫ লক্ষের মতো। তাদের বেশিরভাগই তিব্বতী, চিনা অর্থাৎ হান নয়। পাঁচ দিনের সফর শেষে রয়টার্সের সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিব্বতে নিয়ন্ত্রণ কায়েমের ৭০তম বর্ষে এসে বেজিং, তিব্বতে রাজনৈতিক শিক্ষার প্রচারকে আরও প্রশস্ত করছে।
আগে, তিব্বতের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে, মন্দিরে, গুম্ফায়, প্রতিষ্ঠানে দলাই লামার ছবি দেখা যেত, এখন তাঁর বদলে রয়েছে শি জিনপিং অথবা কমিউনিস্ট পার্টির অন্য কোনও নেতার ছবি। অবশ্য বেজিং-এর চোখে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা দলাই লামার ছবি চিনে এখন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। স্কুল-কলেজের শ্রেণিকক্ষ, রাস্তাঘাট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, এমনকী বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের শয়নকক্ষেও রয়েছে শি জিনপিং-এর প্রতিকৃতি।
তিব্বতের সর্বত্রই শি জিনপিং-এর প্রতিকৃতি এবং ছোট ছোট চিনের পতাকা লাগানো থাকাকে, চিনের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, 'তিব্বতিদের দেশপ্রেমের পরিচয়'।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, 'তিব্বতের অর্থনীতি ও সমাজ চিন সরকার -এর দৃঢ় সমর্থনে দুর্দান্ত জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। তিব্বতের সকল নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারও, চিনের সংবিধান এবং আইন দ্বারা সুরক্ষিত।
তবে লন্ডন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের তিব্বত বিষয়ক বিভাগের বিশিষ্ট শিক্ষক রবার্ট বার্নেটের মতে, এই পোস্টার এবং পতাকা লাগানো একটি বিশাল রাজনৈতিক শিক্ষামূলক কর্মসূচির পরিচায়ক। দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য এইসব পোস্টার লাগাতে বাধ্য করা হয়।
শুধু শি জিনপিং এবং চিনের পতাকা লাগানো নয়, চিনা কর্মকর্তারা যেসব নাগরিক এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সাক্ষাত্কারের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, তারাও প্রত্যেকে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং শি'র প্রতি তাদের আনুগত্যই তুলে ধরেছেন।
যেমন, তিব্বতের রাজধানী লাসার ঐতিহাসিক শুরুর নাম শি জোখং মন্দিরে এক ভিক্ষু। তাঁর নাম লাকপা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন তাঁর ধর্মগুরুর নাম শি জিনপিং! তিনি এও জানিয়েছেন তিনি মাতাল-ও নন এবং কোনও চাপে পড়েও এমনটা বলছেন না। যদিও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং সরকারি পর্যবেক্ষকদের কড়া নজরদারি ছিল তাঁর উপর।
লাসার উপকণ্ঠে অবস্থিত বৌদ্ধধর্ম শিক্ষার কলেজ রয়েছে। এই ধর্মীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও রয়টার্সের সাংবাদিকরা প্রতিটি কক্ষে, প্রতিটি করিডোরে, মন্দিরে শি'এর ছবি দেখতে পেয়েছেন। মন্দিরগুলির উপরে উড়তে দেখা গিয়েছে চিনা পতাকা।
কলেজের প্রায় ৪০ শতাংশ বাজেট ধরা হয় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শিক্ষার জন্য। ভাইস ডিরেক্টর কেলসাং ওয়ান্ডুই সাংবাদিকদের সাফ জানিয়েছেন, 'আমরা এখন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে রয়েছি, অবশ্যই রাজনীতি সম্পর্কে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে'।
এমনকী আগামী ১ জুলাই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির ১০০তম বার্ষিকী উদযাপনেও সামিল হবেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
লাসা-র এক হাইস্কুলগুলিতেও এখন রাজনৈতিক মতাদর্শের ক্লাস নেওয়া হয়। রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছে, সেই ক্লাসে শিক্ষকরা, তিব্বতে চিনের নীতির প্রয়োগে কত সুবিধা হয়েছে, ছাত্রদের মধ্যে সেই কথাই প্রচার করেন।
তিব্বতের শিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর ওয়াং ঝেন স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, 'আমাদের তরুণ-তরুণীদের অবশ্যই পার্টিকে লালন করতে হবে, পার্টির কথা শুনতে হবে এবং পার্টির দ্বারা পরিচালিত হতে হবে এবং আমাদের সুন্দর নতুন তিব্বতের প্রতি অনুগত হতে হবে।'