- Home
- West Bengal
- Kolkata
- ঘুর্ণিঝড় আমফানের নিশানায় কি কলকাতা, আর কোন কোন শহর সম্ভাব্য লক্ষ্যের তালিকায়, দেখে নিন
ঘুর্ণিঝড় আমফানের নিশানায় কি কলকাতা, আর কোন কোন শহর সম্ভাব্য লক্ষ্যের তালিকায়, দেখে নিন
ঘূর্ণিঝড় আমফান নিয়ে এখন তটস্থ রাজ্যবাসী। পশ্চিমবঙ্গের উপকূল অঞ্চলে ইতিমধ্যে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া এবং অতি-ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। দিঘা থেকে শুরু করে মন্দারমানি, বকখালি-তে তীব্র জলোচ্ছাস দেখা দিয়েছে। সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় ঢেউ-এর আকার ৫ ফিট পর্যন্ত পৌঁছেছে। উপকূল এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। সাইক্লোন সেন্টারগুলিতে সরানো হয়েছে অসংখ্য মানুষকে। যদিও, এরমধ্যে আরও আশঙ্কা উসকে দিয়েছে উইন্ডি ডট কম। তাদের দেখানো প্রোজেকশনে স্পষ্ট আমফান কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে যাবে।
| Published : May 20 2020, 11:48 AM IST / Updated: May 20 2020, 11:58 AM IST
- FB
- TW
- Linkdin
আবহাওয়া ও সাইক্লোন নিয়ে কাজ করা উইন্ডি ডট কম -এর তাদের প্রোজেকশনে দেখিয়েছে যে ঘূর্ণিঝড় আমফানের গতিপথের আওতায় পড়ছে কলকাতা।
ঘূর্ণিঝড় আমফান একটি স্টেজ ফাইভ ক্যাটিগরির হ্যারিকেন ঝড়। এই ধরনের ঝড়ের একটা ব্যাসার্ধ থাকে। কলকাতা এই ব্যাসার্ধের আওতায় আসছে বলে দেখিয়েছে উইন্ডি ডট কম। ঘূর্ণিঝড় আমফানের যে রাগড আই বা যাকে গোদা বাংলায় অক্ষ বা মূল ভরকেন্দ্র বলা যেতে পারে, তার গতিপথ কলকাতা এবং চট্টগ্রামের মধ্যে দিয়ে যাবে। এমনটাই তাদের রিপোর্টে তুলে ধরেছে উইন্ডি।
আমফান যদি কলকাতা ও চট্টগ্রামের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়, তাহলে তা দিঘা ও হাতিয়া দ্বীপে-র মাঝে আছড়ে পড়ার পর তা আরও বাংলাদেশের দিকে ঘুরে যাবে না। বরং দিঘা থেকে কোণাকুণি কোণ ধরে কলকাতা ও চট্টগ্রামের মাঝখান দিয়ে ঝড়টি বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হবে।
সবচেয়ে আশঙ্কার কথা উইন্ডির দেওয়া পূর্বাভাস যদি হুবহু মিলে যায় তাহলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে কলকাতা ও দুই ২৪ পরগণা এবং নদিয়া। কারণ, এই যাত্রাপথে আমফানের বেশিরভাগ অংশটাই কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে থাকবে।
উইন্ডি আরও যা দেখিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে কলকাতার সঙ্গে সঙ্গে হাওড়া এবং হুগলির একটা অংশ-ও আমফানের মূল যাত্রাপথের কবলে আসতে পারে। যার ফলে চন্দনগর, হাওড়া, শ্রীরামপুর, চূচূড়া-র মতো প্রাচীন শহরগুলি-তে আমফানের তীব্র ধাক্কা অনুভূত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। কলকাতা একদম লাগোয়া বালি, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বর, বারাসাত, সোনারপুর, গড়িয়া, ভাঙর, হাসনাবাদ, বসিরহাট, ক্যানিং, বারুইপুর, ডায়মন্ডহারবারও প্রবলভাবে প্রভাবিত হতে পারে।
নদিয়ার জেলার মধ্যে দিয়ে যদি সত্যি-সত্যি আমফান অগ্রসর হয় তাহলে কল্যাণী, কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, ডোমকলের মতো শহরগুলিও ঝড়ের প্রবল প্রতাপে পড়তে পারে।
নদিয়া পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড় আমফান বাংলাদেশের সীমানায় পুরোপুরি প্রবেশ করে যাওয়ার কথা। উইন্ডি-র প্রোজেকশনে তেমনই দেখানো হয়েছে। রাজশাহী এবং পাবনার মাঝখানে পদ্মা-তে গিয়ে আস্তে আস্তে দূর্বল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কথা আমফানের। উইন্ডি-র পূর্বাভাসে এমনটাই তথ্য মিলেছে। পদ্মার তীরে রয়েছে লালপুর বলে এটি জায়গা, সেখানেই সলিল সমাধি ঘটার কথা আমফানের।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস দিয়েছে যে দিঘা ও হাতিয়া দ্বীপের মাঝে আছড়ে পড়ার পর বাংলাদেশের খেপুপাড়ার দিকে ধাবিত হবে আমফান এবং এরপর বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে ঝড়টি আস্তে আস্তে দুর্বল নিম্নচাপে পরিণত হবে। কিন্তু, এই পূর্বাভাস কতটা মিলবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, ২০ তারিখ ভোরে আবহাওয়া দফতর যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে ২১ মে থেকে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গকে রেড অ্যালার্টে রাখা হয়েছে। এর আগেও ঘূর্ণিঝড় এসেছে কিন্তু, তা আছড়ে পড়ার পর এভাবে রেড অ্যালার্ট পুরো বঙ্গে দেওয়া হয়নি।
এর ফলে উইন্ডি-র দেওয়া পূর্বাভাস নিয়ে যুক্তি-তর্কে মেতেছেন আবহবিদরা। এদের মতে, আবহাওয়া দফতর না বললেও এটা পরিষ্কার যে আমফানের জেরে রাজ্যে ভালো ক্ষয়ক্ষতি হতে চলেছে।
এর আগে ২০০৯ সালে যখন আয়লা এসেছিল তা কলকাতার কোল ঘেঁষেই বেরিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় ধ্বংসের লীলা দেখেছিল তামাম সুন্দরবন, দুই ২৪ পরগনার উপকূল এলাকা এবং কলকাতা। আমফান-ও কি তেমন কোনও বিপর্যয় নিয়ে ছুটে আসছে! আপাত্ত নিরাপদে থাকা ও ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি-র হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রার্থনা শুরু করেছে আম বাঙালি।