- Home
- West Bengal
- Kolkata
- ২ প্রাক্তনীকে ঠেকাতে উপনির্বাচনে মহিলা ব্রিগেডে ভরসা বিজেপি-র, একনজরে অগ্নিমিত্রা-কেয়া
২ প্রাক্তনীকে ঠেকাতে উপনির্বাচনে মহিলা ব্রিগেডে ভরসা বিজেপি-র, একনজরে অগ্নিমিত্রা-কেয়া
- FB
- TW
- Linkdin
রাজ্যে ২ উপ-নির্বাচনে ২ মহিলাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি (BJP)। শুক্রবার দোলের দিন (Dol Jatra) বিকেলে ২ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তারা। আসানসোল লোকসভা (Asansol Lok Sabha Constituency) উপ-নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে বিধায়ক তথা দুঁদে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালকে (Agnimitra Paul)। বিহারী বাবুর বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে লড়াই করবেন তিনি। আর বালিগঞ্জ বিধানসভা উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন মহিলা মোর্চার নেত্রী কেয়া ঘোষ। সেখানে বাবুলের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে নামবেন তিনি।
আসানসোলের এক ডাক্তার ও শিক্ষাবিদের পরিবারে জন্ম অগ্নিমিত্রার। আসানসোলের (Asansol) লরেটো কনভেন্টে পড়াশোনা তাঁর। পরে তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতকোত্তর এবং বিড়লা ইনস্টিটিউটের লিবারেল আর্টস ও ম্যানেজমেন্ট বিজ্ঞানের ফ্যাশন স্কুল থেকে ডিপ্লোমা করেন।
জীবনে ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা। কিন্তু, ভাগ্যের ফেরে তা সম্ভব হয়নি। তবে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে বেশ খ্যাতি লাভ করেন তিনি। ২০০১-০২ সালে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। একাধিক ছবিতে কাজ ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের কাজ করেছিলেন তিনি। মিঠুন চক্রবর্তী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জিৎ, কোয়েল মল্লিক, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, মৌ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ অভিনেতা/অভিনেত্রীদের জন্য চলচ্চিত্রে পোশাক ডিজাইন করেছিলেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছান তিনি।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে বিজেপিতে যোগ দেন অগ্নিমিত্রা। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। রাজনীতির ময়দানে নেমেও একের পর এক ছক্কা হাঁকান তিনি। সেখানেও বেশ খ্যাতি অর্জন করে নিয়েছেন। ২০২০ সালেই মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। আগে কখনও রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই সক্রিয় রাজনীতির অংশ হয়ে যান তিনি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজের মত প্রকাশ করতেও দেখা যায় তাঁকে।
দলে যোগ দেওয়ার পরই একটু একটু করে বিজেপির পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন অগ্নিমিত্রা পাল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে জিতে বিধায়ক হন তিনি। পাশাপাশি নতুন রাজ্য কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদকের পদেও বসেছেন তিনি। আর এবার সেই আসানসোলের লোকসভাতেও তাঁর উপরেই ভরসা রাখল দল। এই কেন্দ্রে শত্রুঘ্ন সিনহার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দানে নামছেন তিনি।
১৮ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কেয়া। কিন্তু, তারপর সেই পেশাকে চিরতরে বিদায় জানান তিনি। তারপরই সক্রিয় রাজনীতিতে পা রাখেন। এই মুহূর্তে বিভিন্ন নিউজ চ্যানেলের প্যানেলিস্ট হিসেবে দেখা যায় তাঁকে।
১৮ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কেয়া। তখন অবশ্য ঠিক করেননি যে রাজনীতিতে আসবেন। তার পরে ভেবেছিলেন যে মানুষের জন্য কিছু করবেন। সেই কারণেই রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। রাজনৈতিক লাইনে সাংবাদিকতার ট্যাগ নিয়ে পা দিলে কখনও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারতেন না। সেই কারণেই সাংবাদিকতা ছেড়ে রাজনীতিতে পা দেন তিনি। জানিয়েছে, "সাংবাদিকতা করতে গিয়েই বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। বহু বড় মানুষের সান্নিধ্যে এসে, দিনের পর দিন নানা সমস্যার কথা জেনে আর চুপ থাকতে পারিনি। তাই সাংবাদিকতা ছেড়ে মানুষের জন্য কাজ করতে রাজনীতিতে পা দেন।"
অনেকদিন ধরেই বিজেপির মহিলা মোর্চার (BJP Mahila Morcha) মুখ কেয়া ঘোষ। পাশাপাশি রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের বিতর্কসভায় দেখা যায় বালিগঞ্জের বিজেপি প্রার্থীকে। তাই আসন্ন উপনির্বাচনে বালিগঞ্জে কড়া টক্কর এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
বালিগঞ্জ (Ballygunge) বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াইয়ে একেবারে নতুন মুখ তুলে এনেছে বিজেপি। এই কেন্দ্রের প্রার্থী প্রাক্তন সাংবাদিক কেয়া ঘোষ। তিনি মহিলা মোর্চার অত্যন্ত সক্রিয় নেত্রী, দলের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন। অভিজাত এলাকার নির্বাচনী লড়াইয়ে তাই নবাগতাকে নামিয়েই বাজিমাত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। এখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ও সিপিএমের সায়রা শাহ হালিম।
এই দুই উপনির্বাচনে (By-Election) জিততে যে মরিয়া বিজেপি (BJP) তা বলাই বাহুল্য। সেই কারণেই তারা উপনির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কমিটি আগে ঘোষণা করলেও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল কার্যতই সবার পরে। উল্লেখ্য,আসানসোলের লোকসভা উপনির্বাচনের সম্পূর্ণ দায়িত্বই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কাঁধে ছেড়েছে বিজেপি। তাঁর সঙ্গে সহ পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকছেন আর এক দুঁদে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং (Arjun Singh)। এই দুই তাবড় নেতা ছাড়াও ওই কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় মাহাতো এবং বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী কে। অন্যদিকে, বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে দায়িত্বে রয়েছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। সহ পর্যবেক্ষক হিসেবে রয়েছেন সঞ্জয় সিং। একই সঙ্গে দায়িত্বে থাকবেন সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অশোক দিন্দাও।