- Home
- West Bengal
- Kolkata
- ভারী বর্ষার লাল সতর্কতা উত্তরবঙ্গের ২ জেলায়, কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গেও হালকা বৃষ্টি
ভারী বর্ষার লাল সতর্কতা উত্তরবঙ্গের ২ জেলায়, কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গেও হালকা বৃষ্টি
বর্ষা ঢুকে গিয়েছে বাংলায়। এরপর থেকেই গরমে তীব্র দাবদাহের প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। যদিও মাঝে তাপমাত্রা একটু উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছিল। তা অবশ্য বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এই মুহূর্তে বাংলার উপরে ঘন মেঘের আনাগোনা রয়েছে। এর সঙ্গে উত্তর-পূর্ব রাজ্যের বেশ কিছু রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া পরিবর্তনে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে আবহাওয়ার পূর্বাভাসটা কেমন।
- FB
- TW
- Linkdin
এদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সবার আগে অবশ্যই থাকবে উত্তরবঙ্গ। এখানে পাঁচটি জেলাতেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই ৫ জেলার মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার। দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে বৃষ্টিপাতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মানে এই তিন জেলার কিছু এলাকায় ৭ মিলিমিটার থেকে ২০ মিলিমিটারের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা। এই তিন জেলাতেই ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে বজ্রপাতের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের আরও ২ জেলা কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার। এই ২ জেলাতেই আবহাওয়ার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মানে এই ২ জেলার কিছু অংশে ৭ থেকে ২০ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হবে এবং কিছু এলাকায় ২০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হবে। ভারি থেকে অতি ভারির বৃষ্টিপাতের সতর্কতার সঙ্গে সঙ্গে এখানে বজ্রপাতের সম্ভাবনার কথাও বলেছে হাওয়া অফিস।
রবিবার থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার-এ আবহাওয়ার পরিস্থিতি কিছুটা হলেও উন্নত হওয়ার কথা। এই মুহূর্তে ছুটি কাটাতে বহু পর্যটক দার্জিলিং এবং ডুয়ার্স এলাকায় রয়েছেন। আবহাওয়া-র এই সতর্কতা সম্পর্কে তারা সচেতন থাকুন। কারণ খারাপ আবহাওয়া যে কোনও ভালো ভ্রমণ অভিজ্ঞতার পক্ষে অন্তরায়।
উত্তরবঙ্গের বারেন্দ্রভূমির মধ্যে যে ৩ জেলার অবস্থান- যেমন মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুর। এই তিন জেলার মধ্যে ২ জেলা অর্থাৎ দুই দিনাজপুরে আবহাওয়ার হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মানে দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুরের কিছু এলাকায় ৭ থেকে ১১ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের ১৫টি জেলাতেই আবহাওয়ার হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর ফলে এই এলাকায় হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরসঙ্গে প্রবল বজ্রপাতের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা এবং তার পার্শ্বর্তী জেলাগুলোতে মেঘলা আকাশ। রোদের দেখা সেভাবে মেলেনি। বাতাসে জলীয়বাস্পের পরিমাণ বেশি থাকায় এবং বাতাসের একটা তাৎপর্যপূর্ণ গতি থাকায় আদ্রতা সেভাবে গ্রাস করতে পারেনি। বলতে গেলে যে প্যাঁচপ্যাঁচে গরম গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোকে গ্রাস করে রেখেছিল তার প্রভাব অনেকটাই কমেছে। এর মূল কারণ আরব সাগর থেকে বঙ্গোপসাগর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর একটা সার্কেল তৈরি হয়েছে। যার জেরে একটা শীতল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। আর এর জেরেই আপাতত তাপমাত্রা কমেছে কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলাতে।
আবহাওয়া দফতরের যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তাতে কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রিস সেলসিয়াস থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কথা বলা হয়েছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের মোট ১৫টি জেলাতেই শনিবার এবং রবিবার মেঘলা আকাশের কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জানানো হয়েছে যে বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বনিম্ন ৬৬ শতাংশ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেভাবে সতর্কতা না দেওয়া হলেও সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারের উপরে কড়া নজরদারি রেখে চলেছে কোস্ট গার্ড।
খবর চাওড় হয়েছিল যে নতুন করে বঙ্গোপসাগর এবং আরবসাগরের উপরে মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিন্তু, আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও সম্ভাবনার কথা নিশ্চিত করেনি। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে যে বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগরের উপরেরও যে ঘন মেঘের কথা বলা হচ্ছে তাদের মধ্যে কোনও সংঘবদ্ধতা নেই এবং তারা বিক্ষিপ্তভাবে বিচরণ করছে। আর মেঘগুলো গতিমান হয়ে এগিয়ে চলেছে। ফলে এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় তৈরির হওয়ার মতো কোনও লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি। বঙ্গোপসাগর এবং আরবসাগরের উপরে আগামী ১২০ ঘণ্টায় কোনও ধরনের ঘূর্ণিঝড় তৈরির সম্ভাবনাকে শূন্য বলে অভিহিত করেছে হাওয়া দফতর।
আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুজ্ঞেও সেভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে। খুব বেশি হলে হালকা ছিঁটে-ফোঁটা বৃষ্টি হতে পারে। তবে আবহাওয়া মনোরম থাকবে। এই সময়ে কেউ যদি আন্দামানে ঘুরতে যান তাহলে তারা এই মনোরম আবহাওয়ার ফায়দা পাবেন। এদিকে, উত্তর-পূর্ব ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সিকিমেও বৃষ্টির প্রকোপ বেড়েছে। ফলে সেখানে বেশ কিছু রাস্তায় ধস নেমেছে বলেও খবর।