কিছু ভারতীয় রাজপরিবারের অন্ধকারে থাকা কাহিনি, যা আজও কৌতুহল তৈরি করে
| Published : Apr 16 2020, 11:37 AM IST
কিছু ভারতীয় রাজপরিবারের অন্ধকারে থাকা কাহিনি, যা আজও কৌতুহল তৈরি করে
Share this Photo Gallery
- FB
- TW
- Linkdin
110
গুজরাতের আনন্দে সরদার প্যাটেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল ওয়ার্ক বিভাগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজেকে সমকামী বলে ঘোষনা করেন গুজরাটের রাজপীপলার মহারাজার পুত্র এবং সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী যুবরাজ মনবেন্দ্র সিং গোহিল। ২০১৪ সালের ১৪ মার্চ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেশজুড়ে রাজ পরিবারের এই কেচ্ছা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এর ফলে এমনই এক পরিস্থিতিক শিকার হয়েছিলেন তিনি নিজের পরিবার তাকে অস্বীকার করেছিল।
210
সেই সময় যুবরাজ মনবেন্দ্র সিং জানিয়েছিলেন, তিনি এইচআইভি আক্রান্তদের সনাক্ত করার জন্য বিভিন্ন আশ্রমগুলিতে যাতায়াত করতেন, সেখানে গিয়ে তিনি আশ্রমে থাকা সদস্যদের এইচআইভি পরীক্ষা করার কথা বলতেন। তিনি এমনও এক বিষ্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন, যারা বর্তমানে তাঁকে সমকামী বলে কটুক্তি করছেন, তাঁদের মধ্যে এমন বহু মানুষ আছেন যারা তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
310
ঠিক ১১ বছর আগে রাজ পরিবারের ক্ষমতা যুবরাজ মনবেন্দ্র সিং গোহিলের হাতে আসার পর তিনি সমকামীতা সম্পর্কে সমাজকে সচেতন করার দায়িত্ব নেন। তাঁর মতে, সমাজের বেশিরভাগ মানুষই এই সমকামীতাকে অপরাধ বলে মনে করেন। তাই এই ধারণা বদলানোই তাঁর প্রধাণ দায়িত্ব। ১৯২৭ সালে ১৫ একর জমির উপর তৈরি হওয়া যুবরাজের প্রাসাদের এক জায়গা করেছেন। যেখানে কিছুটা অংশে সমাজের থেকে দূরে সরিয়ে রাখা সব সমকামী, তৃতীয় লিঙ্গ এবং রূপান্তরকামীরা নির্ভয়ে থাকতে পারেন সেই ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
410
১০ বছর আগেই জন্মদাত্রী মা ছেলের এমন কাজের জন্য খবরের কাগজে বিজ্ঞাপণ দিয়ে ছেলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। ১৩৪০ সাল থেকে এই রাজ পরিবার গণতান্ত্রিক ও প্রজাতান্ত্রিক দেশের নিয়ম মেনেই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিলেন। আর সেই পরিবারের সন্তানের এমন রুচি মেনে নিতে পারেনি পরিবার। তাতেও খুশি এই হ্যাপি প্রিন্স। তাঁর মতে তিনি সমকামী তাই ভবিষ্যতে তাঁর কোনও সন্তান হবে না। তাই এই রাজ পরিবারের আংশীদারীতেও তার কোনও চাহিদা নেই। বরং তার থেকে সমাজের সেই মানুষগুলোর জন্য কিছু করে যাওয়া দরকার, যাদের সমাজ ভুল চিন্তা-ভাবনার জন্য দূরে সরিয়ে রেখেছে।
510
দেশীয় রাজ পরিবারের ইতিহাসে পটিয়ালার মহারাজা ভূপিন্দর সিং অন্যতম একজন রাজপরিবারের মহারাজা ছিলেন। অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করে বলতেন, এই জনপ্রিয়তা তাঁক উদাসীন এবং চটকদার জীবনযাপনের কারণেই হয়েছিল। তিনি ভারতের প্রথম ব্যক্তি যিনি ১৯১০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে কেনা এক বিমানের মালিক ছিলেন। এমনকী এর জন্য তিনি পটিয়ালায় বিমান চলাচলের জন্য আকাশপথও তৈরি করেছিলেন।
610
বিশ্বের বৃহত্তম পদক সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। শোনা যায়, মহারাজা ভূপিন্দর সিংহের ২০ টি রোলস রয়েস গাড়ি ছিল সেই যুগে। পটিয়ালার মহারাজা ভূপিন্দর সিং ছিলেন এক অসাধারণ ক্রিকেটার। তিনি ১৯১১ সালে ইংল্যান্ড সফরকারী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন এবং ১৯১৫ থেকে ১৯৩৭ সালের মধ্যে ২৭ টি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছিলেন। ১৯২৬/২৭ সালে তিনি মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের সদস্য হিসাবে ক্রিকেট খেলেছিলেন।
710
তিনি নওয়ানগরের জাম সাহেব কুমার শ্রী রঞ্জিতসিংহীর সম্মানে রঞ্জি ট্রফি প্রদান করেছিলেন। ১৯৩৩ সালে ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট সফরে তিনি ভারতের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন, তবে খেলা থেকে বিদায় নেওয়ার দু'সপ্তাহ আগে স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন।
810
তবে তাঁর জীবনের দুর্ভাগ্যজনক দিকটি সম্ভবত সবচেয়ে কুখ্যাত। ভূপিন্দর সিং তাঁর জীবদ্দশায় ১০ বার বিয়ে করেছিলেন। এছাড়াও তাঁর অসংখ্য উপপত্নী ছিল। যার ফলে কমপক্ষে ৮৮ টিরও বেশি শিশু ছিল তাঁর। কেউ কেউ এমনকি এমনও বলে যে তিনি প্রতি বছর একবার তাঁর উপপত্নীদের রাজমহলেই নগ্ন অবস্থায় প্যারেড করাতেন। তবে কেন করাতেন তার উত্তর আজও এক আজানা রহস্য হয়েই থেকে গিয়েছে।
910
হায়দরাবাদের শেষ নিজাম ছিলেন ওসমান আলী খান। তৎকালীন বিশ্বের প্রায় সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হওয়ার সত্ত্বেও তিনি ছিলেন খুবই সাধারণ। তাঁর পরিবারের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিলেন তিনি, কারণ তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কৃপণ। ইতিহাসের মতে, তিনি ছিলেন এক অদ্ভুত মানুষ। পেপার ওয়েটের জন্য তার কাছে ৫০ মিলিয়ন ডলারের অস্ট্রিচের ডিমের আকারের হীরা ছিল। এই ধনী ব্যক্তি নিজের মোজা বুনে পরতেন, কিনতেন না। কয়েক মাস ধরে একই পোশাক বার বার ধুয়ে তারপর পরতেন। শুধু এই নয় অতিথি এবং বন্ধুদের থেকে সিগারেট বাঁধা শিখেছিলেন যাতে কিনতে না হয়।
1010
জনশ্রুতি রয়েছে যে একবার তিনি শীতের সময়ে এক কম্বল কেনার জন্য তাঁর একজন কাজের লোককে পাঠিয়েছিলেন। তবে তাঁর কঠোর নির্দেশ ছিল যেন ২৫ টাকার বেশি ব্যায় না হয়। নতুন কম্বলটির দাম ৩৫ টাকা হওয়ায় সহায়ককে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছিল। তাই নিজাম তার পুরানো কম্বলটি দিয়েই শীত কাটিয়েছিলেন। সামরিক সংযোজনে আতঙ্কিত হয়ে নিজাম তাঁর বিশাল সম্পদের বেশিরভাগ অংশ লরি ও ট্রাকে লুকিয়ে রেখেছিলেন এবং সেগুলি তার এক প্রাসাদের তলদেশে একটি গোপন আন্ডারগ্রাউন্ড ঘরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু যখন তিনি জানতে পারলেন যে ইঁদুরগুলি তার বর্ধিত ধনসম্পদের বেশ কিছু দ্রব্য দূরে সরিয়ে নিয়েছে, তখন তিনি খুব বিরক্ত হয়েছিলেন।