শুভেন্দুরা বলছেন 'তোলাবাজ ভাইপো হঠাও', জেনে নিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির পরিমাণ
First Published Feb 4, 2021, 1:18 PM IST
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে আগে শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষের ব্যক্তিগত আক্রমণ অন্য মাত্রা পেয়েছে। কার আইনি ও বেআইনি সম্পত্তির পরিমাণ কত, কে কোন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এই সব নিয়েই একে ইপরের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন একাধিক নেতৃত্ব। বিশেষ করে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছে শাসক দল। পালটা শুভেন্দু ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও তোপ দাগছেন তাদের পুরনো দলের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে শুভেন্দুর নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তোলাবাজি, কয়লা পাচার, বহুগুণ সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি সহ একাধিক অভিযোগ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধীদের অভিযোগ নয়, বিধানসভা ভোটের আগে চলুন জানা যাক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল সম্পত্তির পরিমাণ কত।

এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসক দলের কার্যত মুখ হয়ে উঠেছেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তিনি। দলে কার্যত মমতার পরই তাঁর গুরুত্ব। বিরোধীদের দাবি 'পিসি-ভাইপোর' কথাতেই চলে পুরো দল।

২০১৪ ও ২০১৯ সালে পরপর দুবার লোকসভা ভোটে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিধানসভা নির্বাচনেও দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য তার উপর গুরু দায়িত্ব রয়েছে।

বিরোধীদের নিশানাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের থেকে বেশি তার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, তোলাবাজি, পাচার চক্রে জড়িত থাকার একাধিক অভিযোগ করছেন বাম-কংগ্রেস, বিজেপি নেতৃত্ব সকলেই।

বিগত কয়েক বছরে নাকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবারের সম্পত্তি আকাশ ছোয়া হয়েছে। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে সকলের মনেই কৌতুহল রয়েছে বর্তমানে তৃমমূলের 'নাম্বার টু'-এর সম্পত্তির পরমাণ কত।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি কোথায়, তার বর্তমান বাজারদর কত? কোন মডেলের কতগুলি গাড়ি চড়েন? ব্যাঙ্কে জমা টাকার পরিমাণ কী? ২০১৯ নির্বাচনে দাঁড়ানোর সময় নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি যে হলফনামা দিয়েছেন, তাতে এই সব সম্পত্তির উল্লেখ রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনে জমা পড়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’(এডিআর) ও পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশন ওয়াচ যৌথ রিপোর্ট বলেছে, এই পাঁচ বছরে সপ্তম দফা প্রার্থীদের মধ্যে আয় বৃদ্ধির হার সব থেকে বেশি অভিষেকের।

আগের বার ভোটে দায়ের করা হলফনামায় জমা দেওয়া আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী তাঁর মোট বার্ষিক আয় ছিল ৭৩.৯৮ লক্ষ টাকা। এ বার আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী অভিষেক বাবুর মোট বার্ষিক আয় ২ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা।

অর্থাৎ ২০১৪-র তুলনায় তার সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ২০৬ শতাংশ। সম্পত্তির পরিমাণ বাড়লেও তাঁর মোট সম্পদ ৯ শতাংশ কমছে বলে হলফনামায় জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেই সময় তার কাছে নগদের পরিমাণও হলফনামায় জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হলফনামায় অভিষেক জানিয়েছেন, তাঁর হাতে এই মুহূর্তে নগদের পরিমাণ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা এবং স্ত্রী রুজিরা নারুলার কাছে রয়েছে ৮৭ হাজার ৩০০ টাকা।

২০১৯ সালে দেওয়া হিসেবে অনুযায়ী, অভিষেকের নামে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রয়েছে ৬৯ লক্ষ ৫০ হাজার ৭৩৯.৪৫ টাকা এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ১২ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬১৫ টাকা।

অভিষেক বা তাঁর স্ত্রীর নামে কোনও স্থাবর সম্পত্তি নেই। তাঁর বা তাঁর স্ত্রীর নামে কোনও গাড়ি নেই, হলফনামায় জানিয়েছেন অভিষেক। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি জানিয়েছেন, এমবিএ পাশ করেছেন অভিষেক।

এছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রীর কাছে ৩০ গ্রাম সোনা , ৪০ গ্রাম রূপো এবং ৬৫৮ গ্রাম সোনা, ২.৩ কেজি রূপো এবং ২২ লক্ষ টাকার মূল্যবান রত্ন । ব্যাঙ্কের কাছে অভিষেক বা তাঁর স্ত্রীর কোনও ঋণ নেই।

তবে ২০১৯ সালে যে হলফনামা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোরপাধ্যায় তা মানতে নারাজ বিরোধীরা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে-বেনামে প্রচুর স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে বারবার অভিযোগ করছেন শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা।

এমনকী বিদেশের ব্যাঙ্কেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে প্রচুর টাকা জমা পড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

যদিও কোনও অভিযোগই সত্যি নয় বলে দাবি করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা সুর চড়িয়েছেন তিনিও। ব্যক্তিগত আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের পর শেষ হাসি কে হাসে তা জানা যাবে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
Today's Poll
অভিভাবক হিসাবে আপনার সন্তানের জন্য অনলাইনে কোন ক্লাসের এডুকেশনাল কনটেন্ট পেতে চান ?