- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- বঙ্গে ১৬০ আসন পাওয়া নিশ্চিত বিজেপির - সামনে এল 'পিপলস পালস'-এর সমীক্ষার ফল, দেখুন
বঙ্গে ১৬০ আসন পাওয়া নিশ্চিত বিজেপির - সামনে এল 'পিপলস পালস'-এর সমীক্ষার ফল, দেখুন
সামনে এল 'পিপলস পালস'-এর জনমত সমীক্ষার ফল। যে ফল থেকে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের মানুষ বাংলার পরিবর্তনের জন্য তৈরি। তবে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে সর্বত্র। সেইসঙ্গে রয়েছে স্থানীয় নেতার অভাব। তা সত্ত্বেও তৃণমূল সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভের ফায়দা তুলতে চলেছে তারা। এমনটাই দেখা যাচ্ছে সমীক্ষার ফলাফলে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ মূলত কয়েকটি বিষয়ে - দুর্নীতি, কর্মসংস্থানের অভাব, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্তিতে বৈষম্য ইত্যাদি। অন্যদিকে অনেক জেলাতেই চোরাস্রোত বইছে হিন্দুত্বের। তবে এই সমীক্ষার তথ্য সংগ্রহের কাজ পিপলস পালস সংস্থা করেছে গত ডিসেম্বরে। তারপর বাংলার রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। তাই এই সমীক্ষার ফল নির্বাচনের ফলের একটা আভাষ দিতে পারে মাত্র -
- FB
- TW
- Linkdin
উত্তরবঙ্গের ৫ জেলাই তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতি অধ্যুষিত। রাজনৈতিক দমনপীড়ন, ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের গুন্ডামি এবং ব্যাপক দুর্নীতির কারণে এখানকার মানুষ এখন তীব্র তৃণমূল বিরোধী
এবং বিজেপির হিন্দুত্বের প্রচার তাঁদের টানছে। মমতা সরকারের জনকল্যানমূলক প্রকল্পগুলির সুবিধাগুলিও ঢাকা পড়ে গিয়েছে দুর্নীতি, কর্মসংস্থানের অভাবের মতো সমস্যায়। এই অঞ্চলে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়তা কম শাসক দলেরই। কংগ্রেসের ভোট নেই বললেই চলে। বামেদের সম্পর্কে ধারণা পাল্টালেও ভোটে তার প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সাংগঠনিক দুর্বলতা ও স্থানীয় নেতার অভাব সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট বিজেপির ঝুলিতেই যাওয়ার সম্ভাবনা।
একমাত্র দ. দিনাজপুর ছাড়া বাকি তিন জেলাতেই হিন্দুদের তুলনায় মুসলিমদের জনসংখ্যা বেশি। হিন্দু জনসংখ্যার মধ্যে তফসিলি জাতি-উপজাতি দলিতদের সংখ্যাই বেশি। তাদের অধিকাংশের অভিযোগ তৃণমূল সরকারের প্রকল্পের সুবিধা তাদের বাদ দিয়ে মুসলিমদেরই দেওয়া হয়। আর এই ক্ষোভই এসে সংঘবদ্ধ হতে চলেছে বিজেপির হিন্দুত্বের পথে। তাই সাংগঠনিক দুর্বলতা, স্থানীয় নেতার অভাব ইত্যাদি সত্ত্বেও তৃণমূল বিরোধী ভোট তাদের ঘরেই যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য এলাকার থেকে ভালো ফল করবে তৃণমূল। মালদা মুর্শিদাবাদে ভালো ফল করতে চলেছে কংগ্রেসও। তবে ২০১৬-র তুলনায় বাম ভোট কমবে। কারণ, বিজেপির পাল্টা হিসাবে মুসলিম সম্প্রদায় বেশি আস্থা রাখছে তৃণমূলের উপরই।
৪ জেলাতেই উদ্বাস্তু হিন্দুদের প্রাধান্য রয়েছে। এছাড়া বেশ কিছু পকেটে রয়েছে তফসিলি উপজাতিদের বাস। মুসলিম জনসংখ্যা এই অঞ্চলে বেশ কম। বালি মাফিয়া থেকে পাথর মাফিয়া - দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য এই অঞ্চল। সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ রয়েছে এখানেও। নদিয়া এলাকাতে সীম্নত পেরিয়ে পাচারের মতো কাজে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিোগও রয়েছে। রাজনৈতিক হিংসাও এখানকার নৈমিত্তিক বিষয়। ঝাঁঝ বাড়ছে হিন্দুত্বেরও। আর এসবের জন্য়েই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ভোট নেই, আর বামেদের সম্পর্কে দৃষ্ঠিভঙ্গি পাল্টালেও ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে মানুষের।
পশ্চিম মেদিনীপুরে হিন্দু বাঙালিদের প্রাধান্য থাকলেও এই এলাকায় সার্বিকভাবে বসবাস বেশি তফসিলি জাতি উপজাতিভুক্ত বিভিন্ন সম্প্রদায়ের। মুসলিমদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। দুর্নীতি, কর্মসংস্তআনের অভাব, রাজনৈতিক হিংসার কারণে মানুষ তৃণমূলের থকে মুখ ঘুরিয়েছেন। কংগ্রেসের ভোট নেই। সিপিএম গুরে দাঁড়ালেও ভোটবাক্সে তার খুব একটা প্রতিফলন নেই। এখানেও তাই সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং নেতাহীনতার সমস্যায় ভুগলেও বিজেপিই প্রতষ্ঠান বিরোধী ভোট দখল করতে চলেছে।
পূর্ব মেদিনীপুর এবং হুগলিতে হিন্দু জনসংখ্যা বেশি, মুসলিম মাত্র ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে হাওড়ায় জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশই মুসলিম। রাজনৈতিকভাবে আবার বিভক্ত হয়ে রয়েছেন বাঙালি এবং অবাঙালি হিন্দুরাও। কলকাতাতেও এক অবস্থা। উ. চব্বিশ পরগণায় আবার বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত পকেট রয়েছে, সীমান্তের কাছাকাছি প্রাধান্য রয়েছে মতুয়াদেরও। রয়েছে হিন্দিভাষী হিন্দুও। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাতেও রাজনৈতিকভাবে মেরুকরণ হয়েছে। এখানেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কর্মসংস্থানের অভাব, রাজনৈতিক হিংসাার ইভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে বিজেপিকেও মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় সিএএ-এনআরসি নিয়ে জবাব দিতে হবে। কংগ্রেসের ভোট নেই। বামেদের নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহ তৈরি হলেও তা ভোট যন্ত্রে পৌঁছচ্ছে না।
সার্বিকভাবে, রাজ্যের নানুষ পরিবর্তনের জন্য যে তৈরি, সেই ইঙ্গিত স্পষ্টবাবে পাওযা যাচ্ছে এই সমীক্ষায়। আর কিছু দুর্বলতা সত্ত্বেও তাতে লাভবান হতে চলেছে গেরুয়া শিবিরই।