- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ভোটের আগে দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নেতাকর্মীদের স্রোত - কতটা ক্ষতি করছে তৃণমূলের, দেখুন
ভোটের আগে দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নেতাকর্মীদের স্রোত - কতটা ক্ষতি করছে তৃণমূলের, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
ভোঁতা বহিরাগত তত্ত্ব
আসন্ন নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূল কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র 'বহিরাগত' তত্ত্ব। বঙ্গ বিজেপি এতদিন ক্যারিশম্যাটিক বাঙালি মুখের অভাব ছিল। দিলীপ ঘোষ-কে বাদ দিলে বাকি জনমোহিনী নেতাদের আনতে হতো দিল্লি থেকে। এখন, জঙ্গলমহলে শুভেন্দু অধিকারী, হাওড়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো নেতারা গেরুয়া শিবিরে চলে আসায়, তৃণমূলের এই প্রচার অনেকটাই ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। এমনকী নন্দীগ্রামে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বহিরাগত তকমা পেতে হচ্ছে।
বুথে বুথে প্রতিরোধ
শুধু নেতারাই নন, তাঁদের সঙ্গে শিবির বদল করছেন তাঁদের অনুগামীরাও। গত দেড় বছরে বিভিন্ন সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মানুষ বিজেপিকে চাইলেও বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। যার ফলে অনেক জায়গাতেই মানুষ তৃণমূলের থেকে সমর্থন তুলে নিলেও ভোটযন্ত্রে তা প্রতিফলিত হয়নি। অনেক জায়গায় বুথে কর্মীই দিতে পারেনি বিজেপি। এবার কিন্তু, বুথে বুথে তৃণমূল কংগ্রেস-এর কর্মীদের পাশাপাশি থাকবেন বিজেপি কর্মীরাও, যাঁরা হয়তো আগের নির্বাচনেই তৃণমূলের হয়ে ভোট করেছেন। কাজেই খেলার মাঠও তাঁদের চেনা হবে। তাই, বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতার সুযোগ, আর নিতে পারবে না তৃণমূল কংগ্রেস।
'পিসি-ভাইপো লিমিটেড'
তৃণমূলের সঙ্গ ত্যাগ করে শিবির বদল করা থেকেই, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস দলকে পিসি-ভাইপো লিমিটেড কোম্পানি বলে কটাক্ষ করছেন। তারও আগে থেকে বিজেপি নেতারা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে আসছেন। ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন মমতা 'একজনের পিসি হয়ে থেকে গিয়েছেন'। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বারবার করে এই অভিযোগ খণ্ডানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু, সোনালী গুহদের মতো, যাঁরা শুধু তৃণমূল কংগ্রেস নেতা নন, মমতার বাড়ির লোক বলে পরিচিত - সেইসব নেতাদের মমতার সঙ্গত্যাগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে 'পিসি-ভাইপো'র দল'এর অভিযোগ আরও জোরালো হবে।
ভোঁতা দুর্নীতি ও তোলাবাজির পাল্টা অভিযোগও
প্রথমদিকে, দলের দিকে ধেয়ে আসা দুর্নীতির অভিযোগ, বিজেপিতে যাওয়া তৃণমূলত্যাগী নেতাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দায়মুক্ত হতে চাইছিল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বিচারে, তৃণমূল নেতাদের দলে নেওয়াটা পদ্মশিবিরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে, ২০১৬ সালের ভোটেও দেখা গিয়েছিল দুর্নীতির অভিযোগ ভোটে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি। অন্যদিকে, বর্তমানে যেভাবে তৃণমূলের নেতারা পিসি-ভাইপোর দিকে আঙুল তুলছেন, তাতে দুর্নীতির দায়টা কিন্তু, সরাসরি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের দিকেই ঘুরে যাচ্ছে। সোমবারই বিজেপিতে যোগ দেওয়া সিঙ্গুরের বৃদ্ধ মাস্টারমশাইও অভিযোগ করেছেন, তোলাবাজি, কাটমানি খাওয়ার ক্ষমতা নেই বলেই তাঁকে প্রার্থী করেনি তৃণমূল কংগ্রেস।
বন্ধ উল্টো স্রোত
তৃণমূলের পক্ষে নেতা-নেত্রীদের দলত্যাগে আরেকটি সুবিধা হতে পারত। তা হল, বিজেপিতে নব্য ও পুরোনোর দ্বন্দ্ব। তৃণমূলত্যাগীদের গ্রহণ করতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার বিজেপি কর্মীরা। তবে দিনের শেষে মানুষ জয়ী পক্ষেই থাকতে চায়। তাই, শুরুর দিকে বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে যাওয়ার একটা স্রোত দেখা গেলেও এখন আর বিজেপি ত্যাগের কথা শোনা যাচ্ছেনা। জিতেন্দ্র তিওয়ারির সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়ো। দীনেশ ত্রিবেদীকে বড়ভাই বলছেন অর্জুন সিং। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর যেভাবে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে, বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর কিন্তু তা দেখা যায়নি।