- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- কংগ্রেস নেতাদের সিদ্ধান্তে দুঃখ পেলেন আব্বাস, তৃতীয় দফার আগে প্রকাশ্যে এল জোটের ফাটল
কংগ্রেস নেতাদের সিদ্ধান্তে দুঃখ পেলেন আব্বাস, তৃতীয় দফার আগে প্রকাশ্যে এল জোটের ফাটল
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দুই দফায় ৬০ বিধানসভা আসনের ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। তারপরও, বাম, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) জোট সংযুক্ত মোর্চা সেভাবে দানা বাঁধতে পারেছে না। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই বেরিয়ে আসছে ফাটল। ৬ তারিখ আসছে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ। বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। সেই ভোটের আগে ফের জোট সঙ্গী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকী।
- FB
- TW
- Linkdin
বৃহস্পতিবার ছিল দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ। ওই দিনই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী প্রচারে কংগ্রেস নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা কেন তাঁদের প্রার্থীদের সমর্থনে এগিয়ে আসছেন না, তা তিনি জানেন না। তবে জোটের প্রচারে কংগ্রেসের এই অনুপস্থিতি 'দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক' বলে মন্তব্য করেন তিনি। অভিমানী আব্বাস বলেছেন, দক্ষিণবঙ্গে তিনি কংগ্রেসের অনেক প্রার্থীর হয়েই সমর্থন প্রকাশ করেছেন, প্রচার করেছেন। কংগ্রেস কেন সেই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে না তাদের দিকে, সেটা কংগ্রেস নেতারাই বলতে পারবেন বলেছেন পীরজাদা।
তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি - রাজ্য ও কেন্দ্রের দুই শাসক দলের বিরুদ্ধেই লড়াই করার জন্য পশ্চিমবঙ্গে প্রথম জোট বেঁধেছিল বাম ও কংগ্রেস। পরে সেই জোটে যোগ দিয়েছিল সদ্য প্রতিষ্ঠিত আইএসএফ। তবে বাম ও আইএসএফ কিংবা বাম ও কংগ্রেস যেভাবে মিশে গিয়েছে, সেই মিলমিশ হয়নি কংগ্রেস ও আইএসএফ-এর মধ্যে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে এই সংযুক্ত মোর্চা বিশাল সমাবেশ করলেও, সেই সভামঞ্চেই আব্বাস সিদ্দিকী এবং কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।
আসলে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজেপির আক্রমণের মুখে পড়েই বাংলায় ভোট প্রচার করতে আসতে দ্বিধা করছেন শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা। অসমে বদরুদ্দিন আজমলের এআইইউডিএফ এবং বাংলায় আব্বাস সিদ্দিকী আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে ইতিমধ্য়েই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংখ্য়ালঘু মৌলবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। অসমে তাও সরকারে আসার একটা সম্ভাবনা আছে কংগ্রেসের, তাই সেই আক্রমণ সহ্য করছে কংগ্রেস। কিন্তু, বাংলায় আর যাই হোক, ক্ষমতায় আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। তাই যেচে পড়ে বিজেপির সংখ্যালঘু আক্রমণ মাথায় নিতে চাইছেন না কংগ্রেস নেতারা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
প্রথম দুই দফা নির্বাচনে, সিপিএম তথা বাম প্রার্থীদের পাশাপাশি কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনেও প্রচার করেছেন আব্বাস সিদ্দিকী। সিপিএম তথা বাম নেতারাও আইএসএফ-এর প্রার্থীদের হয়েপ্রচার করেছেন। কিন্তু, কংগ্রেসের দিক থেকে আইএসএফ বা জোট প্রার্থীদের হয়ে বিশেষ প্রচারের উদ্যোগ দেখা যায়নি। বস্তুত, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষ্যে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব কেরল, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি এবং অসমে প্রচারসভা করলেও, এখনও পর্যন্ত বাংলায় একটি সভাও করেননি। রাহুল, সনিয়া বা প্রিয়াঙ্কা গান্ধীদের কেউ আসেননি। অন্যদিকে, প্রায় রোজই বাংলায় প্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা বিজেপির রাষ্ট্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডারা।
যদিও অসমে বদরুদ্দিন আজমল বা পশ্চিমবঙ্গে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট গড়ার মধ্যে ভুল কিছু দেখছেন না স্বয়ং আব্বাস সিদ্দিকী। তাঁর সাফ কথা, তাঁরা তো আর দেশকে লুট করেননি। এই দেশ বিজেপি-র ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, যে তারা যা বলবে তাই হবে। নির্বাচনে জেতার জন্যই বিজেপি এই জাতীয় উসকানিমূলক বিবৃতি দেয়, বলে অভিযোগ করেছেন তিনি, কারণ তাদের কাছে নির্বাচনে লড়ার অন্য কোনও ইস্যু নেই। কর্মসংস্থান নিয়ে প্রশ্ন করলে বিজেপি পাকিস্তানের কথা তোলে, জ্বালানির দামেরর কথা তুললে বলে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের কথা। এইভাবে আসল সমস্যাগুলি থেকে মানুষের মন ঘুরিয়ে দিতে চায় গেরুয়া দল। এমনটাই মত, আব্বাস সিদ্দিকীর।