- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- মমতার শাসনে কতটা নিরাপদ মহিলারা, দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে প্রশ্নের মুখে নারী সুরক্ষা, দেখুন
মমতার শাসনে কতটা নিরাপদ মহিলারা, দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে প্রশ্নের মুখে নারী সুরক্ষা, দেখুন
- FB
- TW
- Linkdin
রাজ্যের নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব বিরোধীরা, বিশেষত বিজেপি। মঙ্গলবারই নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারে এসেছিলেন অমিত শাহ। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গের নারী-নিরাপত্তার 'বেহাল' দশা নিয়ে অভিযোগ করেছেন। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারী নিরাপত্তা নিয়ে এত কথা বলেন, নন্দীগ্রামে, তাঁর আবাসের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পশ্চিমবঙ্গে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বিজেপির এইসব অভিযোগের পাল্টা হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল নেতারা বিভিন্ন জনসভায় উত্তরপ্রদেশ-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের কথা তুলছেন। জনসভার হাততালিও পড়ছে। হাথরসের মতো ঘটনা নিন্দনীয়, সেই নিয়ে কারোর মনে কোনও দ্বিধা নেই। গোটা দেশ র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন হল, অন্য রাজ্যের উদাহরণ রাজনৈতিক ভাষ্য হতে পারে, তাতে বাংলার মহিলাদের সমস্যা মিটবে কি? একটি অপরাধ দিয়ে কি আরেকটি অপরাধকে ন্যায্যতা দেওয়া যায়?
গত ডিসেম্বর মাসেই করোনা মহামারির ভয় উপেক্ষা করে রাজ্যে সফরে এসেছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের (NCW) চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে কমিশন রীতিমতো উদ্বিগ্ন। ধর্ষণ, হত্যা, পাচারের মতো ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে, আর তাই নিয়ে ভাবলেশ হীন পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসন।
কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত কয়েক বছরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বাংলা থেকে নারী পাচারের ঘটনা। কমিশন দেখেছে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ এবং রাজ্যের উপজাতি অধ্যূষিত অঞ্চলগুলি থেকেই এই নারী পাচারের সংখ্য়া বেশি।
একইসঙ্গে কমিশন জানিয়েছিল, বৃন্দাবনের অধিকাংশ বিধবাই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। অত্যন্ত বেহাল অবস্থায় তাঁরা পড়ে আছেন। চেষ্টা করলেই তাঁদেরকে পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু, এর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।
সবথেকে উদ্বেগের বিষয়, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা। গত ডিসেম্বরে মহিলা কমিশন বলেছিল ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে সুয়োমোটো মামলাসহ ২৬৭টিরও বেশি অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য পুলিশ কোনও পদক্ষেপই নেয়নি বা সেই সম্পর্কে কমিশনকে কিছু জানায়নি। রাজ্যের বহু নির্যাতিতাই পুলিশের দিকে অসহযোগিতার অভিযোগও তুলেছেন। সব বিষয়েই রাজনীতির রঙ দেখে পুলিশ, এমনটাই জানিয়েছেন নির্যাতিতারা।
একই অবস্থা সরকারি সহায়তারও। কমিশনের কাছে ধর্ষণ ও পুলিশের নৃশংসতার শিকার হওয়া মহিলারা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে নামমাত্র ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তাতে কিছু হয় না। এমনকী, পকসো আইনের আওতায় ক্ষতিগ্রস্থদের যে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা, তাও অনেক ক্ষেত্রেই দেওয়া হয়নি।
এই অবস্থায় রাজ্যের নারী সুরক্ষার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্য সচিব, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি, কলকাতা পুলিশে কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। কিন্তু, সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছিল কয়েকজন জুনিয়র অফিসারকে। তাঁদের কাছে কোনও তথ্যও ছিল না। কমিশনের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। অবশ্য, মহিলাদের সুরক্ষার বিষয়টা যে মমমতা সরকার বরাবরই লঘু করে দেখাতে চায়, পার্কস্ট্রীট কাণ্ড থেকে কামদুনি - বারবারই তার পরিচয় পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তার কারণেই রাজ্যের নারীরা আরও বেশি অসহায় বোধ করছেন।