জগন্নাথদেব নয়, বর্ধমানের রাজবাড়ির রথে থাকেন গোপাল
ওড়িশা ও বাংলায় রথযাত্রা অনেক বড় করে আয়োজন করা হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এবার রথযাত্রা অনেকটাই ফিকে। কোথাও রথের সেই জৌলুস দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। পুরীতেও রথযাত্রার সময় ভক্তদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবার রথের দড়ি টানছেন সেবায়েতরাই। পুরীর পাশাপাশি বাংলাতেও রথযাত্রা জৌলুসহীন। করোনা আবহে এবার গড়াবে না বাংলার কয়েকশো বছরের পুরোনো একাধিক রথের চাকা। রাজ্যের জেলাগুলিতে যে সব রথযাত্রা এক সময় ধুমধাম করে পালন করা হত, করোনা আবহে সেগুলি এখন বড়ই ফিকে। ঠিক যেমন বর্ধমানের লক্ষীনারায়ণ জিউয়ের রথ।
| Published : Jul 12 2021, 06:35 PM IST / Updated: Jul 12 2021, 06:36 PM IST
- FB
- TW
- Linkdin
এই রথ প্রায় ৩৫০ বছরের পুরোনো। রাজা মহতাবচাঁদের আমলে এই রথ আজকের রূপ পায়। এখানে দুটি রথ ছিল। একটি রাজার রথ। অন্যটি রানির।
রাজার রথটি তৈরি করা হয়েছিল পিতল দিয়ে। আর রানির রথ ছিল রুপোর তৈরি। রানির রথ বাইরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হত না।
মজার বিষয় হল রানি রথ বাইরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হত না। রাজবাড়ির মধ্যেই এই রথের দড়িতে টান দেওয়া হয়। আর পিতলের রথটিকে বাইরে টানা হত।
কিন্তু, রুপোর রথ আর নেই। তার পরিবর্তে এখন কাঠের রথ রয়েছে। তবে পিতলের রথটি এখনও রয়েছে। মন্দির চত্বরেই এখন সেই রথ টানা হয়।
আগে এই রথের জাঁকজমক ছিল বিখ্যাত। এই রথের রশিতে টান পড়ার পরই বর্ধমানের বাকি রথের যাত্রা শুরু হত।
আগে রথের সময় এখানে বিশাল মেলার আয়োজন করা হত। অনেক লোক আসতেন। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আর তা করা হয় না। শুধুমাত্র প্রথা মেনে গোপালকে বসিয়ে রথ টানা হয়। তারপর ফের আবার রথ ভিতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
প্রথা মেনে বর্তমান রাজপুরুষ প্রণয়চাঁদ মহতাব এই রথের সেবায়ত। রথ, ঝুলন, জন্মাষ্টমী থেকে দুর্গাপুজো সব উৎসবের আর্থিক থেকে যাবতীয় ভার তাঁকেই বহন করতে হয়।
বড় বিষয় হল এই রথের মধ্যে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা থাকেন না। মহারাজের রথের মধ্যে বসানো হয় বাড়ির গোপালকে। আর ভিতরে লক্ষ্মী-নারায়ণ শিলামূর্তি ভিতরে চাপানো হয়।
তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রথযাত্রার জাঁকজমক ফিকে হলেও প্রথায় কোনও ফাঁক রাখেন না লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র। প্রতিবারের মতো এবারও এই রথের দড়িতে টান পড়ার পরই শহরের বাকি রথে টান পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।