- Home
- West Bengal
- West Bengal News
- ডাক্তার হয়ে গরিবদের সেবা করতে ইচ্ছুক তুলকালাম, হরিশ্চন্দ্রপুরের হদতদরিদ্র ছাত্রের সাফল্য-গাঁধা
ডাক্তার হয়ে গরিবদের সেবা করতে ইচ্ছুক তুলকালাম, হরিশ্চন্দ্রপুরের হদতদরিদ্র ছাত্রের সাফল্য-গাঁধা
গৃহশিক্ষকের ছেলের মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় সাফল্যে তোলপাড় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর। দরিদ্রতাকে জয় করে নিট পরীক্ষায় ৫৮৫ নম্বর পেয়েছে তুলকালাম। জরাজীর্ণ ঘর। বাবার গৃহশিক্ষকতায় কোনও রকমে দিন গুজরান। সংসারের প্রয়োজনে মাকেও মাঠে কাটতে যেতে হয়। এই দারিদ্রতা জয় করেই সাফল্য পেয়ে তুলকালাম। ডাক্তার হয়ে গরীব মানুষের চিকিৎসা করতে চাই। সাফল্য পেয়ে জানাল হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলকালাম।
- FB
- TW
- Linkdin
লড়াইটা সাময়িক নয়। ছিল প্রতিদিনের। বাড়িতে অভাব-অনটন। বাবার গৃহশিক্ষকতার উপার্জনের টাকায় সংসার চলত। দিন আনা-দিন খাওয়া পরিবারে কোনও রকমে দিনগুজরান। তবুও হার মানেনি হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলকালাম। নিট নম্বর পেয়েছে ৫৮৫।
তুলকালামের বাড়ি মালদহ হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাডিয়াল গ্রামে। এবারের মেডিক্যাল এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ৫৮৫ নম্বর পেয়েছে তুলকালাম। গরিব ছাত্রের অভাবনীয় সাফল্যে হতচকিত সকলে।
গৃহশিক্ষক বাবার ছোট ঘর। তিন ভাই মিলে ৫ জনের পরিবার। রাতে ঘুমানো ও পড়াশুনার জন্য আলাদা ঘর ছিল না তাঁদের। ছোট্ট ওই ভাঙাচোরা বাড়িতে থেকেই লড়াই করেছে তুলকালাম।
মেডিক্য়াল প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৭২০র মধ্যে ৫৮৫ পেয়েছে তুলকালাম। ১৭ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সাফল্যের শিখরে সে। রাডিয়াল গ্রামবাসীরা মাঝে অভাবি অসহায় বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়েছে তুলকালাম।
২০১৬ সালে তলসীহাটা উচ্চ বিদ্য়ালয় থেকে মাধ্য়মিকে ৮৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিকে ডিএন সাহা বিদ্যাভবন থেকে ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল সে। পরে মালদহ আল আমিন মিশন অ্যাকাডেমি থেকে নিট পরীক্ষা দেয় তুলকালাম।
বাবা আবুল কালাম একজন গৃহশিক্ষক। অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছেলে মেয়েদের পড়ান। মা সাইনুর বিবি একজন গৃহবধূ। সংসারের খরচ টানতে তাঁকে অন্যের জমিতে ধান কাটতে যেতে হয়।
জমি-জায়গা বলতে কিছুই নেই তাঁদের। তিনভাইয়ের মধ্যে তুলকালাম বড় ছেলে। ঘরের টালি ছাউনির ফাঁকফোকর দিয়ে আলো বাতাস প্রবেশ করে। জরাজীর্ণ দেওয়াল গুলিতে দারিদ্রতার ছাপ। বাবার গৃহশিক্ষকতার উপার্জনে চলে তাঁদের পড়াশুনার খরচ।
ছেলের সাফল্যে খুশি বাবা-মা। কিন্তু মেডিক্যালের সর্বভারতীয় পরীক্ষায় এত ভাল ফল করেছে। কিন্তু আগামী দিনের পড়াশুনার খরচ বাবা-মা চালাবে কী করে? চিন্তায় ফেলেছে বাবা আবুল কালামকে।
অর্থের অভাবে ঘর করতে পারেননি বাবা আবুল কালাম। বিপিএল তালিকায় নামও নেই তাঁদের। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘরও জোটেনি।
লড়াই শুরু করেছে তুলকালাম। এখনও অনেক দূর যেতে হবে তাঁকে। ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক তুলকালাম। কিন্তু, ডাক্তারি পড়ার উচ্চশিক্ষায় সবচেয়ে বড় বাধা আর্থিক সমস্যা।