সংক্ষিপ্ত

শ্লেষ্মা ফুসফুসের নালিতে জমে সেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় এবং ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় কাশির পরেও এই শ্লেষ্মা বের হয় না। এর ফলেই ফুসফুসে বিপজ্জনক সংক্রমণ শুরু হয়।

শুকনো কাশিতে (Dry Cough) প্রাণ জেরবার। কিছুতেই পিছু ছাড়ে না এই জেদী কাশি। আবহাওয়া পরিবর্তন (Season Change) মানেই জ্বর (Illness), গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা(Bodyache), বমি বমি ভাব (Vomitting) এই সব তো নিত্য দিনের সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যা আরো জটিল হয়ে ওঠে যখন শুকনো কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পরে রোগীরা। সেখান থেকে সহজে মেলে না মুক্তি, ফলেই কর্মস্থলে, স্থানে অস্থানে কাশতে কাশতে ওষ্ঠাগত প্রাণ। কী ভাবে মিলবে সমাধানের পথ বোঝা দায়।

তবে শ্বাসকষ্ট বা শুকনো কাশি মানেই সেটা করোনা সংক্রমণ হবে তার কোনও মানে নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্লেষ্মা ফুসফুসের নালিতে জমে সেখানে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় এবং ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় কাশির পরেও এই শ্লেষ্মা বের হয় না। এর ফলেই ফুসফুসে বিপজ্জনক সংক্রমণ শুরু হয়। জেনে নিন এই শুকনো কাশি থেকে মুক্তির অব্যর্থ ঘরোয়া প্রতিকার।

আদা : ২ কাপ জলে কিছুটা আদার কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে এর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলেই গলার খুসখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আদা-মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। নিয়মিত দিনে তিন থেকে চার বার আদা দিয়ে জল ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে নিন। এরপর লবণ মিশিয়ে কুলিকুচি করুন। গলায় খুসখুসে ভাব দূর করতে আদা চাও খেতে পারেন। চায়ের পরিবর্তে হালকা গরম জলে সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রণ পানের অভ্যাস করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। 

হলুদ : কাশি কমাতে কয়েক ফোটা হলুদের রস খেতে পারেন। আবার এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখিয়ে তা মুখের মধ্যে রেখে আস্তে আস্তে চুষতে পারেন। এছাড়া এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন। এতেও সর্দি-কাশি নিরাময় হবে। হলুদের মধ্যে প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ লবণ, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি নানা উপকারী উপাদান রয়েছে। তাই হলুদ খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুকনো কাশির জন্য হলুদ খুব কার্যকরী। ১ টেবিল চামচ হলুদ এর সঙ্গে ১/৮ টেবিল চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো নিয়ে সেটি চা, দুধ কিংবা অন্য কোন পানীয় এর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশি কমে। 

মধু : শুকনো কাশি দূর করতে মধুর তুলনা মেলা ভার। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টিবায়োটিকসমৃদ্ধ মধু বুকে জমে থাকা কফও সহজে বের করে আনতে সাহায্য করে। এজন্য এক টেবিল চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ ময়দা একসঙ্গে ঘন করে মিশিয়ে নিন। এরসঙ্গে এক টেবিল চামচ ভেজিটেবিল অয়েল মেশান। গজ কাপড় কেটে নিন। এই কাপড়ের মাঝখানে মধু, ময়দা, তেলের মিশ্রণ রাখুন। চামচ দিয়ে সমানভাবে কাপড়ের উপর ছড়িয়ে নিন। বুকের যে দিকে কফ জমেছে সে দিকে এই কাপড়ের টুকরো টেপ দিয়ে লাগিয়ে নিন। বেশি ভালো ফল পেতে বুকের উল্টো দিকেও লাগিয়ে নিন।

আরও পড়ুন: প্রেমিকের এই কয়টি আচরণ দেখলে বুঝবেন সম্পর্ক ভাঙার সময় এসেছে, জেনে নিন কী কী

আরও পড়ুন- শীতকালে শরীর সুস্থ রাখতে চান, তবে ডায়েটে রাখুন এই পাঁচ খাদ্য

আরও পড়ুন- নিয়মিত খান এই ৫টি খাবার, যৌন চাহিদা বাড়াতে বেশ উপকারী এই খাবারগুলো

তুলসি পাতা : তুলসি পাতা শুকনো কাশির জন্যে খুবই কার্যকরী। সকালে খালি পেটে তিন থেকে চারটি তুলসি পাতা খেতে পারেন। তাছাড়াও তুলসি পাতা ফুটিয়ে চা তৈরি করে খেতে পারেন। এটিও সর্দি-কাশি সারাতে ভূমিকা রাখে। সর্দি, কাশি দূর করতে তুলসি পাতার রস দারুণ উপকারী। শিশুদের জন্য কয়েকটি তাজা তুলসি পাতার রসের সঙ্গে একটু আদার রস ও মধু দিয়ে খেলে খুব উপকার হয়। এই সময় জ্বর হলে জলের সঙ্গে তুলসি পাতা, গোল মরিচ ও মিছরি মিশিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন। তুলসির রস মধু, আদা ও অল্প একটু পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সর্দি বের হয়ে যায়। শ্বাসকষ্টের সমস্যাতেও দারুণ কাজ দেয় এই মিশ্রণটি। 

এলাচ : ছোট একট এলাচ মুখে রাখলে শুকনো কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। শুধু কাশিই নয়, হজম ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে এলাচ। সর্দি, কাশি এবং ঋতু পরিবর্তনের জ্বর থেকেও মুক্তি দিতে পারে এই মশলাটি। অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরা এলাচ জীবানুনাশকও। গলা ব্যথা এবং শুকনো কাশি হলে নিরাময়ে এলাচ খেতে পারেন। এজন্য এক কাপ পরিমাণে জল নিন। জল হালকা গরম হলে তাতে মধু এবং বেশ কয়েকটি ছোট এলাচ দিন। ফুটে গেলে এলাচ ছেঁকে ওই জল পান করুন। কয়েকদিন এলাচ মেশানো জল খেলেই গলাব্যথা কমে যাবে।