সংক্ষিপ্ত
- প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের মৃত্যুতে অভিভাবকহীন তাজপুর
- ১৯৫৭ সালে এখানকার স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি
- শিক্ষকতা করে বেতন পেতেন ১০৫ টাকা
- আমতার ওই প্রত্যন্ত গ্রামে বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক ছিলেন
সন্দীপ মজুমদার, হাওড়া-প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ল তাজপুর। হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের তাজপুর গ্রামের বাসিন্দারা খবরটা শুনে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। যখন জানতে পারলেন প্রণব স্যার আর নেই, তখন থেকেই অভিভাবকহীন পড়ে পড়ল গোটা গ্রাম।
সাল ১৯৫৭। ওই গ্রামের বাংলার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তাজপুর মহেন্দ্রনাথ রায় ইনস্টিউটশনে। তৎকালীন সময়ে বেতন পেতেন ১০৫ টাকা। তার মধ্য়ে ৭২ টাকা নিজের জন্য রেখে বাকিটা দান করতেন স্কুলের উন্নতিকল্পে। তখনও রাজনীতিতে পা রাখেননি প্রণব মুখোপাধ্য়ায়। ওই স্কুলে শিক্ষকতা করার সময় হাওড়া থেকে আড়াই ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে স্কুলে আসতেন। তখন তিনি গ্রামেরই চক্রবর্তী পরিবারের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। তাঁদের পরিবারের দুই জন চিত্তরঞ্জন ও নয়নরঞ্জন চক্রবর্তীকে পড়াতেন তিনি।
সোমবার সন্ধের পর প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই মুছড়ে গিয়েছে গোটা গ্রাম। ১০ অগাস্ট থেকে হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছিলেন। তখন থেকেই তাঁর আরোগ্য কামনা করেছিল গোটা তাজপুরবাসী। ২০১৭ সালে স্কুলের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্য়ায়। তখন তিনি বলেছিলেন, ''জীবনে অসাধ্য বলে কিছু নেই, কাজের মধ্য়ে চেষ্টা আর আন্তরিকতা থাকলে অনেক উচ্চতায় ওঠা যায়। তবে যত উপরেই ওঠো না কেন , পা যেন মাটিতে থাকে।''
প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের সেদিনকার কথা গুলো আজও স্মরণ করে রেখেছেন তাজপুরের গ্রামবাসীরা। তাঁর এই উপদেশ আজও তাঁরা ভোলেননি। তবে, সোমবার প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতির মৃত্যুতে শোক নেমেছে তাজপুর।