সংক্ষিপ্ত

আফতাব শ্রদ্ধার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি জলের বিল। বিনামূল্য মাসে ২০ হাজার লিটার জল পাওয়ার পরেও আফতার ৩০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত দল কিনেছিল। খতিয়ে দেখছে দিল্লি পুলিশ।

 

 

আফতাব আর শ্রদ্ধা দিল্লির ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি জলের বিল। সেই জলের বিলের টাকা এখনও মেটান হয়নি। কিন্তু দিল্লি পুলিশকে অবাক করেছে বিলের অঙ্ক। দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর আফতাব প্রায় ৩০০ টাকার অতিরিক্ত জল কিনেছিল। কিন্তু কেন এত জল প্রয়োজন হল আফতাদের? দিল্লি পুলিশের অনুমান খুনের পর সাফসাফাই করলেই জলের প্রয়োজন হয়েছিল।

দিল্লিতে বিনামূল্যে জল

বর্তমানে দিল্লি সরকারি প্রতিমাসে ২০ হাজার লিটার জল বিনামূল্যে দিয়ে থাকে। এই জল পেতে শ্রদ্ধা আর আফতাবও। একটি পরিবের জন্য ২০ হাজার লিটার জল অপরিযাপ্ত বলেও মনে করছে দিল্লি পুলিশ। সেখানে একটি ফ্ল্যাসে মাত্র দুই জন বাসিন্দা ছিল। শ্রদ্ধা আর আফতার। দিল্লি পুলিশের কথায় একটি পরিবারের দৈনিক ৩০-৩৫ লিটার জল প্রয়োজন। খুব বেশি হল ৫০ লিটার। কিন্তু এই পরিমাণ জলও প্রয়োজন মেটায়নি আফতাবদের। পুলিশ সূত্রের খবর মে মাসেই এই অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন হয়েছিল আফতাবের। আর এই মাসেই খুন হয়েছিল শ্রদ্ধা।

রক্ত ধুতেই আফতাবের জলের প্রয়োজন

দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর দিল্লির বেশিরভাগ কলোনির বাসিন্দাদেরই জলের জন্য কোনও টাকা দিতে হয় না। কারণ মাসে ২০ হাজার লিটার জলের অর্থ দিনে ৬৬৬ লিটারেও বেশি জল পায় দিনে। সেখানে দুজনের সংসার আফতাবদের। কেন এত জল লাগল তার উত্তর খুঁজছে পুলিস। দিল্লি পুলিশের অনুমান শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল আফতার। তারপর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটে। আর সেই জন্য নিহত শ্রদ্ধার দেহ থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত বার হয়েছিল। সেগুলি সাফ সাফাই করেই জলের প্রয়োজন হয়েছিল। পুলিশের অনুমান রায়াসনিক জলে মিশিয়েই ঘর - বাথরুম পরিষ্কার করেছিল আফতাব। দিল্লি পুলিশের অনুমান রান্নাঘর আর বাথরুমেই মূলত শ্রদ্ধার দেহ কুঁচি কুঁচি করা হয়েছিল। রান্না ঘরে রক্তের দাগও পেয়েছে পুলিশ।

আফতাব অতিরিক্ত দল কিনেছিল

হিসেব বলছেন বিনামূল্যের ২০ হাজার লিটার জলের পরেও আফতার আরও ২০-৩০ হাজার লিটার জল কিনেছিল। আর সেই জল দিয়েই ঘর বাড়ি সাফসাফাই করেছিল। দিল্লি পুলিশের হাতে আসা তথ্য বলছেন শ্রদ্ধা আর আফতাব নতুন ফ্ল্যাটি দিয়েছিল গত ১৪ মে। আর ১৮ মে শ্রদ্ধা খুন হয়। তারপর থেকে একাই থাকত আফতাব। ফ্ল্যাটের মালিক জানিয়েছেন প্রতিমাসের ১-৩ তারিখের মধ্যে টাকা পেয়ে যেতেন। তাই তাঁর মনে কোনও সন্দেহ হয়নি। তিনি আরও জানিয়েছেন অনলাইনেই টাকা দিয়ে দিল ভাড়াটিয়া।

রক্তের দাগ ধুতে জল-

দিল্লি শ্রদ্ধা ওয়াকারহত্যাকাণ্ড মনে করিয়ে দেয় দুর্গাপুরের স্কুল শিক্ষকের স্ত্রী সুচেতা হত্যাকাণ্ডের কাথা। ব্যাঙ্ক অফিসার সমরেশ সরকারের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। স্বামীকে ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে সমরেশের সঙ্গ একই ফ্ল্যাটে থাকতেন সুচেতা। কিন্তু বিবাহিত সমরেশকে বিয়ের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। আর সেই কারণে সমরেশ সুচেতার হাত থেকে বাঁচতে তাঁকেই হত্যাকেন। হত্যার পরে সুচেতা ও তাঁর মেয়ের দেহ টুকরো টুকরো করে প্রথমে বাড়ির বাথরুমে রেখে দিয়েছিলেন। সব রক্ত বেরিয়ে গেলে সেই দেহ একটি সুটকেশে পুরে হুগলিতে চলে আসে। গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। কিন্তু সেই সময়ও সমেরেশ নিজের ঘর থেকে রক্তের আঁশটে গন্ধ দূর করার জন্য ফিনাইল ঢেলে রাখতেন। ঘরে ধূপ জ্বালিয়ে দিতেন, সুগন্ধী ছড়াতেন। তবে রক্তের দাগ তিনি অবশ্য নিত্য ব্যবহৃত ডিটারজেন্ট দিয়েই ধুয়েছিলেন। আফতার অবশ্য গুগল সার্চ করে রায়াসনিক ব্যবহার করেছিল।

আরও পড়ুনঃ

শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, উদ্ধার একটি আধ-পচা কাটা মাথা ও হাতের অংশ

গুজরাট নির্বাচনে কংগ্রেসের কোন্দল তুঙ্গে, টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হওয়ার হুমকি নেতার

শ্রদ্ধা খুনে তদন্তে ১০টি তথ্যপ্রমাণ, একই সঙ্গে কিছু প্রশ্নের উত্তর উত্তর খুঁজছে দিল্লি পুলিশ