সংক্ষিপ্ত
খাদ্যশস্যের চাহিদার জন্য বাজারের উপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করবে। এটি খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যা দুই বছরের সর্বোচ্চ হার ছোঁবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেক রাজ্যে এই বছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লি পর্যন্ত অনেক শহরে বন্যার মতো পরিস্থিতি দেখা গেলেও ফসলের ক্ষতির খবরও সামনে এসেছে। তবে এখন এর প্রভাব আগামী দিনে খাদ্যশস্যের দাম বৃদ্ধির আকারে সরাসরি দেখা যাবে। এই বৃষ্টি পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র পর্যন্ত ধানের ফসলকে খারাপভাবে প্রভাবিত করেছে। মহারাষ্ট্রের কৃষক ইব্রাহিম শেখ বলেছেন যে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বৃষ্টির কারণে ধানের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, সরকারের রেশনের মজুদও গত বছরের তুলনায় অর্ধেক কমেছে।
কৃষকরা জানাচ্ছেন, এখন আমরা তাড়াতাড়ি ফসল তুলতে চাই যাতে কিছুটা ক্ষতি রোধ করা যায়। তবে এই ক্ষতি শুধু কৃষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর পুরো প্রভাব গিয়ে পড়বে বাজার দরের ওপর। খাদ্যশস্যের চাহিদার জন্য বাজারের উপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করবে। এটি খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যা দুই বছরের সর্বোচ্চ হার ছোঁবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া শাক-সবজি, দুধ, ডাল ও তেলের দামও বেড়েছে। এই পণ্যগুলি উপভোক্তার চাহিদা তালিকায় এক-চতুর্থাংশ জায়গা দখল করে। এর মানে হল যে আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি সূচকও লাফ দেবে।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে এই হার কিছুটা বাড়াতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে এর ফলে মূল্যস্ফীতি কতটা কমবে, কিছু বলা যাচ্ছে না। বিশেষ করে এসব ব্যবস্থা নিয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দুর্বল জনগোষ্ঠীর আয় তেমন বাড়েনি। কত দ্রুত মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে? একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। যেখানে শহরাঞ্চলে ২০ শতাংশ ধনী লোকের ক্ষেত্রে তা হয়েছে মাত্র ৭.২ শতাংশ। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি মুদ্রাস্ফীতির কারণে কোন অংশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গিয়েছে করোনার পর আয় বৈষম্য বাড়তে পারে। মহারাষ্ট্রের পুনেতে একটি ফার্মে কর্মরত সব কর্মীরাই জানান, মূল্যস্ফীতি বাড়লেও কোম্পানি তার বেতন বাড়াচ্ছে না। তিনি বলেন, “তেল থেকে শুরু করে সবজি ও দুধের দাম বেড়েছে। আগের মতো আয় দিয়ে বাড়ি চালানো এখন আর সম্ভব নয়। বিশেষ করে যখন করোনায় মানুষ বৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থানের সংকটে পড়েছিল। নভেম্বরে তাই দেশের সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চাপ পড়তে চলেছে মধ্যবিত্তের পকেটে।
আরও পড়ুন - পাইকারি মূল্যের মূল্যস্ফীতি ১১ মাসের সর্বনিম্ন, অগাষ্টে নামল ১২.৪১ শতাংশে
আরও পড়ুন - হাত পুড়ছে চাল-সবজির দামে, পুজোর আগে বাজার করতেই পকেট ফাঁকা মধ্যবিত্তের