সংক্ষিপ্ত

ফের সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা ঘটল। এবার খোদ রাজধানী দিল্লির বুকে। ইতিমধ্যেই এই গ্রেফতারি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। 
 

অভিযোগ থানায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অন্য একটি অভিযোগে জেরা করার কথা বলে। এমনকী সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জেরাও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। জেরা যখন প্রায় শেষপর্বে ঠিক তখনই নাকি গ্রেফতার করা হয় সাংবাদিক মহম্মদ জুবেরকে। টুইটারে এমনই দাবি করেছেন অলট নিউজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা। তাঁর অভিযোগ, জুবেরকে গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া এবং বিষয়টি অনৈতিক। মহম্মদ জুবেরও অলট নিউজের একজন সাংবাদিক। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

জানা গিয়েছে, সোমবার জুবেরকে দিল্লি পুলিশ ডেকে পাঠায়। জানানো হয় একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে জেরার করার রয়েছে। কিছু জিজ্ঞাসাবা করেই ছেড়ে দেওয়া হবে। অলট নিউজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা জানিয়েছেন, জুবের বহুবার এফআইআর-এর কপি দেখতে চাইলেও দিল্লি পুলিশ তা দেখায়নি। এরপরও জুবেরকে লাগাতার জেরা করে আটকে রাখা হয়। এই ধরনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে নোটিশ দিতে হয়। সেই সব কোনও নোটিস-ই নাকি জুবের পাননি। 

এদিকে, দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, স্পেশাল সেল পুলিশ স্টেশনে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তাতে অভিযুক্তর তালিকায় নাম রয়েছে মহম্মদ জুবেরকে। তাঁকে জেরার জন্য ডাকা হয়েছিল এবং পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, জুবেরের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। জুবেরের মন্তব্যের জেরে হিংসা ছড়াতে পারে বলেও নাকি এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, মহম্মদ জুবেরের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, জুবেরকে এখনও দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যখন তাঁকে তোলা হবে সেখানেও জুবেরের পুলিশি হেফাজতের চজন্য সওয়াল করা হবে বলে জানা গিয়েছে। 

অলট নিউজ একটি নন-প্রোফিট ফ্যাক্ট চেকিং সংবাদ পরিবেশনার ওয়েবসাইট। এর প্রতিষ্ঠাতা কলকাতার ছেলে প্রতীক সিনহা এবং তাঁর অন্যতম একজন সহকারী মহম্মদ জুবের। অলট নিউজ মূলত খবরের সত্য-মিথ্যার বিশ্লেষণকে তুলে ধরে। তাদের ফ্যাক্ট চেকিং-এর আওতায় একাধিকবার এসেছে গেরুয়া শিবিরের টুইট থেকে শুরু করে নানা ধরনের খবর। সম্প্রতি প্রতীক সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘোষণাও করেছিলেন যে কিছু অর্থনৈতিক অসহযোগিতা এবং রাজনৈতিক চাপের জন্য তাঁকে গুজরাট ছাড়তে হচ্ছে। আহমেদাবাদ থেকেই অলট নিউজের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করেন প্রতীক। সেই সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন কলকাতার বুক থেকেই এবার অলট নিউজ তার কাজ করবে। প্রতীকের সেই পোস্টে বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তাঁর আঙুল কোনদিকে ছিল। 
 

মহম্মদ জুবেরের গ্রেফতারি স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি করেছে। ইতিমধ্যেই আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ টুইট করে লিখেছেন যে জুবেরের গ্রেফতারি অনৈতিক। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, অলট নিউজ এবং জুবের বিশগুরুর যাবতীয় মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস করতে যাচ্ছিল। জুবেরের গ্রেফতারির পিছনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ। 

কোন যথাযথ নোটিশ ছাড়াই কীভাবে একজনকে গ্রেফতার করা যায়- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মিম-এর আসাউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি এই ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরও বলেন যে যখন মুসলিমদেরকে গণহত্যা করার হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় তখন দিল্লি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয় না। কিন্তু, হেট স্পিচ বা হিংসা মন্তব্যের বিরোধিতা করলে অথবা কোনও মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে কথা বললেই সঙ্গে সঙ্গে কাজ দেখাতে শুরু করে দিল্লি পুলিশ।