সংক্ষিপ্ত
রবিবার তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
তাঁর সঙ্গে শপথ নেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও আরও পাঁচ মন্ত্রী।
কেজরি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন আপ-এর গ্যারান্টি কার্ডেই থাকবে সরকারের ফোকাস।
সেইসঙ্গে মোদীর আশীর্বাদ নিয়ে নতুন রাজনীতির ঘোষণা করলেন।
রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথগ্রহণ করলেন আম আদমি পার্টি-র প্রধান তথা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এদিন তাঁকে শপথবাক্য পাছ করান দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বৈজাল। কেজরিওয়ালের পাশাপাশি এদিন উপ-মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিলেন মণীশ সিসোদিয়া। এছাড়া, সত্যেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, কৈলাশ গেহলট, ইমরান হুসেন, এবং রাজেন্দ্র প্যাটেল মন্ত্রী পদে শপথগ্রহণ করেন।
সকাল ১১:৫০-এ রামলীলা ময়দানে এসে পৌঁছান কেজরিওয়াল। ২০১১ সালে গান্ধীবাদী সমাজকর্মী আন্না হাজারে-র সঙ্গে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে এই রামলীলা ময়দান থেকেই ভারতীয় রাজনীতিতে উদয় হয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। এদিন সেখান থেকেই তাঁর শপথগ্রহন অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার আপ সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
এদিন রামলীলা ময়দানে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি হল একেবারে আপ-এর বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক কৌশল মেনে। বিজেপির সরাসরি বিরোধিতায় যাওয়া হয়নি। যে কারণে শপথে সতর্কতার সঙ্গে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা প্রভাবশালী বিরোধী নেতাদের। একই সঙ্গে লাউডস্পিকারের একের পর এক দেশাত্মবোধক গানে পরিবেশ ছিল জাতীয়তাবাদের রসে টইটুম্বুর।
শনিবার রাতেই কেজরিওয়াল তাঁর ছয় মন্ত্রী - মণীশ সিসোদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, কৈলাশ গেহলট, ইমরান হুসেন এবং রাজেন্দ্র পাল গৌতম-কে নৈশভোজে ডেকেছিলেন। সেখানে তিনি সাফ জানিয়ে দেন ভোটের আগে আপ যে গ্যারান্টি কার্ড প্রকাশ করেছিল, তা পূরণ করার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। দিল্লিকে একবিংশ শতাব্দীর 'গ্লোবাল সিটি' হিসাবে গড়ে তোলার রোডম্যাপ তৈরি করা হবে বলে আপ সূত্রে জানা গিয়েছে।
অগ্রাধিকার থাকবে বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বাস ভ্রমণের ব্যবস্থা করা। এছাড়া স্কুলে স্কুলে 'দেশভক্তি' পাঠ্যক্রম কার্যকর করার চেষ্টাও হবে। এদিন তৃতীয়বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করে কেজরিওয়াল বলেন, সকলে তাঁর বিনামূল্যের সুবিধা দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করছে। কিন্তু মাতৃস্নেহ-র মতো পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান বিষয়গুলি বিনামূল্যেই পাওয়া যায়। তিনি দিল্লিবাসীকে ভালোবাসেন। সেই ভালোবাসাও বিনামূল্যেই দেবেন।
আপ-এর রাজনীতি-কে তিনি 'কাম কি রাজনীতি' বলে উল্লেখ করেছেন। সেই রাজনীতিতে দলীয় ভেদাভেদ-ও থাকবে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। সাফ জানিয়ে দেন, ভোটের দিন যে যাকেই ভোট দিয়ে থাকুন না কেন, তিনি সব দল, সব ধর্ম, জাতির জন্য কাজ করবেন। বিজেপি, আপ, কংগ্রেস - তিনি সবার মুখ্যমন্ত্রী। এটা তাঁর বা তাঁর দল আপ-এর জয় নয়, এটা দিল্লিবাসীর জয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেই সঙ্গে জানান, প্রদানমন্ত্রী আসতে না পারলেও শপথগ্রহণের মঞ্চ থেকেই তিনি দিল্লির উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় সরকারের আশীর্বাদ চান।