সংক্ষিপ্ত
একই বিমানে দিল্লি যাচ্ছিলেন ডাক্তার কুলকার্নি এবং ডাক্তার মোজাম্মিল। বিমানের মধ্যে শিশুদের অক্সিজেন মাস্ক না মেলায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা প্রাপ্তবয়স্কদের অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে আসতে বলেন।
মা বাবার সঙ্গে রাঁচি থেকে দিল্লি যাচ্ছিল ৬ মাসের শিশু, কিন্তু, বিমান মাঝ আকাশে থাকাকালীনই আচমকা শ্বাসকষ্ট হতে শুরু করে তার। নিরুপায় হয়ে ভয় পেয়ে যান বাবা-মা। হঠাতই ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এলেন বিমানে থাকা দুই চিকিৎসক। তাঁদের কৃতিত্বেই প্রাণ বাঁচল একরত্তির। শনিবার ইন্ডিগোর বিমানের ঘটনায় সকলের চোখে আনন্দের অশ্রু।
জন্ম থেকে হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে ভুক্তভোগী ওই শিশু। দিল্লি এইমসে চিকিৎসা করানোর জন্যই তাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন মা বাবা। শনিবার রাঁচি থেকে ইন্ডিগো বিমান ছাড়ার ২০ মিনিটের মধ্যেই মেডিক্যাল এমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়। কারণ, আচমকাই শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। বিমানের ভিতরেই কান্নাকাটি করতে শুরু করেন অসহায় মা।
ওই বিমানেই দিল্লি যাচ্ছিলেন ডাক্তার কুলকার্নি এবং ডাক্তার মোজাম্মিল। ডাক্তার কুলকার্নি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপালের প্রধান সচিব তথা চিকিৎসক। ডাক্তার মোজাম্মিল চিকিৎসা করেন রাঁচির সদর হাসপাতালে। বিমানের মধ্যে শিশুদের অক্সিজেন মাস্ক না মেলায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা প্রাপ্তবয়স্কদের অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে আসতে বলেন। তা দিয়েই শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন দেওয়া হয়।
চিকিৎসক কুলকার্নি জানিয়েছেন, অনেক আগে থেকেই অসুস্থ থাকার দরুন শিশুর মা বাবার কাছে প্রয়োজনীয় থিওফিলিন ইনজেকশন মজুত ছিল। জরুরি পরিস্থিতিতে ওই ইনজেকশন দেওয়া হয়। ইনজেকশন এবং অক্সিজেন দেওয়ার পর শিশুর শরীর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে থাকে। হাতের কাছে অক্সিমিটার না থাকায় চিকিৎসা জটিল হয়ে পড়েছিল দুই চিকিৎসকের জন্য। বারবার স্টেথোস্কোপ দিয়ে শিশুর হৃদস্পন্দন মেপে দেখছিলেন দু’জন।
ড. কুলকার্নি বলেছেন, 'প্রথম ১৫ থেকে ২০ মিনিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে ওই সময়ের মধ্যেই অক্সিজেন মাস্ক এবং ইনজেকশন দিয়ে দেওয়ার ফলেই তখনকার মতো অবস্থা সামাল দেওয়া গিয়েছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই চোখ খুলে তাকিয়েছে শিশুটি।’ বিমানের সকলেই তখন ভীষণ আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তাড়াতাড়ি দিল্লি পৌঁছে যাওয়ার। দিল্লি পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই সম্পূর্ণ মেডিকেল টিম তাড়াতাড়ি শিশুর জন্য অক্সিজেনের ব্যবস্থা করে। জরুরি সময়ে শিশুটিকে বাঁচাতে পেরে অত্যন্ত স্বস্তি পেয়েছেন দুই কৃতী চিকিৎসক।