সংক্ষিপ্ত
- চলতি বছরের শেষেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন
- ভোট প্রস্তুতি এখন জোড়কদমে শুরু হয়ে গিয়েছে
- এর মধ্যেই হঠাৎ করে অবসর নিলেন পুলিশের ডিজিপি
- এই ঘটনা বিহারের রাজনীতিতে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে
ভিআরএস নিলেন বিহার পুলিশের ডিজিপি গুপ্তেশ্বর পান্ডে। ইতিমধ্যে নীতিশ কুমারের সরকার গুপ্তেশ্বর পান্ডের এই আবেদন মঞ্জুর করেছে। তবে তিনি যে কার্যকাল শেষ হওয়ার আগেই অবসর নিতে পারেন এমন জল্পনা কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। এবার সত্যি সচ্যি ডিজিপি গুপ্তেশ্বর পান্ডের ভিআরএসের আবেদনে সায় দিল রাজ্য সরকার। আপাতত গুপ্তেশ্বর পান্ডের জায়গায় সিভিল ডিফেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের ডিজি সঞ্জীব কুমার সিংঘলকে ডিজিপি বিহারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
চলিত বছরের শেষেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। বিহারবাসীর মন জিততে একের পর এক অর্থনৈতিক প্রকল্পের সূচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে পারেন গুপ্তেশ্বর পান্ডে। ১৯৮৭ সালের আইপিএস অফিসার গুপ্তেশ্বর পান্ডেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বিহারের ডিজিপি করা হয়। আগামী বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই মেয়াদ শেষের ৫ মাস আগেই স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে নিলেন গুপ্তেশ্বর। যাকে অনুমোদন দিল রাজ্য সরকারও। আর তাতেই এই জল্পনা জোড়ালো হচ্ছে যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোটে লড়তে চলেছেন এই আইপিএস আধিকারিক। ধারণা করা হচ্ছে তিনি এনডিএ শিবিরের প্রার্থী হতে পারেন।
আইপিএস অফিসার হিসেবে প্রায় ৩৩ বছর সেবা করেছেন গুপ্তেশ্বর পান্ডে। তিনি বিহারের বেশ কয়েকটি জেলায় এসপি হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডিআইজি, আইজি ও এডিজি পদে থাকাকালীন তিনি অপরাধ দমনে অনেক বড় পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ডিজিপির দায়িত্ব নেওয়ার পরে গুপ্তেশ্বর পান্ডে বলেছিলেন যে অপরাধ নিয়ন্ত্রণই তার প্রথম কাজ হবে। গুপ্তেশ্বর পান্ডের হঠাৎ অবসর গ্রহণের পরে, সিভিল ডিফেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসেসের ডিজি সঞ্জীব কুমার সিংঘলকে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ডিজিপি বিহারের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গুপ্তেশ্বর পান্ডের জন্ম ১৯৬১ সালে বক্সার জেলার গেরুবান্ধ গ্রাম। তার গ্রাম বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং রাস্তাঘাটের মতো প্রাথমিক সুবিধা থেকে একসময় বঞ্চিত ছিল। ইন্টারমিডিয়েটের পরে তিনি পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। এখান থেকে ইউপিএসসির দেন এবং ১৯৮৭ সালে আইপিএস অফিসার হন। তাঁকে বিহার ক্যাডারের অংশ করা হয়। ডিজিপি হিসাবে অবসর গ্রহণের মাত্র ৫ মাস বাকি ছিল গুপ্তেশ্বর পান্ডের।
অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু মামলার তদন্তে তাঁর মন্তব্য সম্প্রতি সংবাদ শিরোনামে এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সঙ্গে তাঁর যথেষ্ট সখ্যতা রয়েছে। এতেই আন্দাজ করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনে নীতিশ শিবিরের হয়েই লড়বেন গুপ্তেশ্বর। যদিও এই বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট করেননি এই আইপিএস আধিকারিক।
তবে বরাবর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শিরোনামে থাকা গুপ্তেশ্বপ পান্ডে কখনো নিজের রাজনৈতির উচ্চাকাঙ্খা গোপন কেরননি। এরআগে ২০০৯ সালে তিনি বক্সার কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে নীতিশ কুমারের উদ্যোগেই ফের কাজে ফেরেন গুপ্তেশ্বর। সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় বিহার সরকার হস্তক্ষেপ করার বিষয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ রয়েছে বলেই মনে করা হয়। এই ঘটনা বিহারে নির্বাচনের আগে গভীর রাজনৈতিক মোড় নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে সুশান্ত মামলার তদন্ত সিবিআই নেয়, তার পরেই বিহার পুলিশ প্রধান গুপ্তেশ্বর পান্ডে মন্তব্য করেন যে, রিয়া চক্রবর্তীর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে মন্তব্য করার আওকত নেই। সুশান্ত মামলায় একাধিকবার রিয়া চক্রবর্তীকে নিয়ে বিতর্কতি মন্তব্য করতে দেখা গেছে গুপ্তেশ্বর পান্ডেকে।