সংক্ষিপ্ত

 

  • দিনের পর দিন মাটি কাটতেন
  • উদ্দেশ্য ছিল গ্রামে জলের ব্যবস্থা করা 
  • একাই ৩০ বছর করে তৈরি করলেন খাল
  • তাঁর তৈরি খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ কিলোমিটার 
     

'মাঝি দ্যা মাউন্টেন ম্যান' বছর কয়েক আগে নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকি আর রাধিকা আপ্তের এই ছবিটি রিজিল করেছিল। বিহারে গয়া জেলা বাসিন্দা দশরথ মাঝির জীবনের ওপর তৈরি হয়েছিল এই ছবি। গ্রামের রাস্তা না থাকায় অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রী। তা মেনে নিতে না পেরে একাই পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছিলেন দশরথ মাঝি। গল্পের মত মনে হলেও এটি ছিল সত্যি ঘটনা। তেমনই আরও একটি ঘটনার সাক্ষী রইল বিহারের গয়া জেলা। এবারের নায়ক লাথুয়ার কাছে কোথিলাওয়া গ্রামের বাসিন্দা  লাউঙ্গি । 

না তিনি অবস্য মানুষের যাতায়াতের সুবিধের জন্য রাস্তা তৈরি করেনি। গ্রামে যাতে বৃষ্টির জল আসে সেই জন্য একাই একটি তিন কিলোমিটার লম্বা একটি খাল কেটেছেন। আর এই কাজে তিনি ব্যয় করেছেন নিজের জীবনের অর্ধেক সময়। এক টানা ৩০ বছর ধরে লাউঙ্গি তৈরি করেছেন ৩ কিলোমিটার লম্বা একটি খাল। লাউঙ্গি জানিয়েছেন পাহাড়ে জমে থাকা বৃষ্টির জল চাষের জন্য গ্রামের পুকুররে নিয়ে এসে ফেলাই ঠিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। গ্রামে চাষাবাদের সুবিধে আর গৃহপালিত পশুদের পাণীয় জলের ব্যবস্থা করতে দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রম করে গেছে। এই কাজে তাঁকে কেউ কোনও দিন সাহায্য করেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

লাউঙ্গি জানিয়েছেন ভোরবালায় বাড়ির গৃহপালিত পশুদের চারানোর জন্য বার হতেন। তখনই একটি কোদাল আর ঝুঁড়ি নিতেন। জঙ্গলে এসে তিনি মাটি কাটার কাজ শুরু করে দিতেন। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রখর রৌদ্রতাপ সহ্য না করতে পেরে মাঝে মাঝেই জিরিয়ে নিতেন। কিন্তু মাটি কাটার কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে চাননি। আজ তাঁকে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। স্থানীয় শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ অনেকেই লাউঙ্গির কঠোর পরিশ্রমকে আজ মূল্য দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামের মানুষ। গ্রামের মানুষরাও পাশে দাঁড়িয়েছে লাউঙ্গির। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথা কাকা একা একাই মাটি কেটে এই খাল তৈরি করেছেন। কিন্তু কোনও দিনই কারও সাহায্য প্রত্যাশা করেননি।