সংক্ষিপ্ত

একের পর এক রাজ্যে দেখা যায় অপারেশন কমল

এবার দেখা গেল তার বিপরীত

মণিপুরে যার জেরে টলমল করছে বিজেপি সরকার

জোটসঙ্গীদের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বিধায়করাও সরে গেল সরকারের পাশ থেকে

 

রাজ্যে রাজ্যে অপারেশন কমল-এর অভিযোগ করে থাকে কংগ্রেস। অর্থাৎ বিরোধী দলের বিধায়কদের অর্থ বা পদের লোভ দেখিয়ে বা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে গদেরুয়া শিবিরে টেনে আনা। এবার দেখা গেল 'রিভার্স অপারেশন কমল'। যার ধাক্কায় টলমল করছে মণিপুরে এন বীরেন সিং-এর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার।

বুধবার একসঙ্গে তিনজন বিজেপি বিধায়ক দল থেকে পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। তার উপর ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চার বিধায়ক সহ জোটসঙ্গীদের ছয়জন বিধায়ক সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এনপিপির চারজনের মধ্যে তিন জন আবার ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে একমাত্র তৃণমূল বিধায়ক এবং একজন নির্দল বিধায়ক-ও সরে গিয়েছেন বিজেপি সরকারের পাশ থেকে।  

মণিপুর বিধানসভার মোট শক্তি ৬০। তবে বিজেপিতে যো দেওয়ার জন্য কংগ্রেস তাদের একজন বিধায়ককে বহিষ্কার করেছে। ফলে এখন বিধানসভার শক্তি ৫৯। বুধবার এনডিএ-র শক্তি কমে দাঁড়িয়েছে ৩০-এ। অন্যদিকে, বিজেপির ৩ বিধায়ক কংগ্রেসে যোগদানের ফলে, বিধানসভায় কংগ্রেসের এখন শক্তি বেড়ে হয়েছে ২৪। তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য়ের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা ওকরাম ইবোবি সিং-এর দাবি তাঁদের হাতে এখন ২৭ জন বিধায়ক রয়েছেন।

মণিপুরের ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু রায় এসেছিল। ২৮ জন বিধায়ক নিয়ে কংগ্রেস একক বৃহত্তম দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। আর বিজেপির হাতে ছিল মাত্র ২১ জন বিধায়ক। তারপরেও রাজ্যপাল নাজমা হেপতুল্লা অদ্ভূত কারণে বিজেপিকেই সরকার গঠন করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

এরপরই শুরু হয়েছিল 'অপারেশন কমল'। বিজেপি সমস্ত অকংগ্রেসী বিধায়কের সমর্থন পেয়েছিল। নাগা পিপলস ফ্রন্টের ৪ জন, ন্যাশলান পিপলস পার্টির ৪ জন, তৃণমূলের ১জন, এলজেপি-র ১জন, ১ জন নির্দলের সঙ্গে বিজেপির ২১ জন বিধায়ক মিলে তাদের শক্তি দাঁড়ায় ৩২। সরকার গঠন করেছিল তারা। পরে, কংগ্রেসের শ্যামকুমার সিং বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু, কংগ্রেস তাকে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বহিষ্কার করেছিল। পরে অবশ্য আরও ৭জন কংগ্রেস বিধায়ক গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। ফলে এনডিএ-র শক্তি পৌঁছেছিল ৩৯-এ।

মণিপুরের একমাত্র রাজ্যসভা আসনে বিজেপির জেতা এদিনের আগে পর্যন্ত একেবারে নিশ্চিত ছিল। কিন্তু, এদিনের পর সেই সম্ভাবনা তো কমেইছে, রাজ্যে সরকার ধরে রাখতে পারবে কিনা, তাই নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।