সংক্ষিপ্ত

ছয় ঘন্টার মধ্যে প্রবল ঘুর্ণিঝড়ে পরিণত হচ্ছে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল। আট তারিখ বিকেলেই ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবে আগামী ৯ নভেম্বর সকালে। ঘুর্ণিঝড়ের মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মুখ্য সচিব। 

ক্রমে শক্তি বাড়াচ্ছে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার বুলেটিনে দিল্লির মৌসম ভবন থেকে জানানো হয়েছে আগামী ছয় ঘন্টায় এটি শক্তি বাড়িয়ে প্রবল ঘুর্ণিঝড় বা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মে পরিণত হতে চলেছে। এদিকে এই ঘুর্ণিঝড় নিয়ে দারুণ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মুখ্য সচিবদের সঙ্গে আসন্ন এই ঘুর্ণিঝড়ের মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মুখ্য সচিব পিকে মিশ্র।  

দিল্লির মৌসম ভবন থেকে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল', পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে গত ছয় ঘন্টার ২১ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে এসেছে।  বর্তমানে বুলবুল পশ্চিম মধ্য ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য এলাকায় অবস্থান করছে। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে রয়েছে ৫৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ৬৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার ৭৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে।

আবহাওয়া দপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে আগামী ১২ ঘন্টা ঘুর্ণিঝড় বুলবুল উত্তর-উত্তরপশ্চিমগামী হয়ে তারপর সোজা উত্তর দিকে এগোবে। ৯ নভেম্বর সকালে এটি পূর্বদিকে বাঁক নিয়ে প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ ও পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে সতর্ক করে বলা হয়েছে ৮ তারিখ বিকেলেই ওড়িশার উত্তর দিকের উপকূলে জগতসিংপুর, কেন্দ্রপাড়া, বালাসোর এবং ভদ্রক জেলায় ৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ঝড় বইতে পারে। একদিন পর একই রকম অবস্থা দেখা যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে।

এদিন এক উচ্চপর্যায়ের সরকারি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের মুখ্য সচিব জানিয়েছেন ঘুর্ণিঝড়ে মানুষ ও সম্পত্তির ক্ষতি যাতে যতটা সম্ভব কম হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্য সরকারগুলিকে এর জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিবদের ঝড়ের দিনগুলিতে ২৪ ঘন্টা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিনের বৈঠকে মুখ্য সচিবরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা, স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিবরা, ভারতীয় ভূতত্ত্ব বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল প্রমুখ।

জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন, তাদের বেশ কয়েকটি বাহিনী এই ঘুর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সব প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও তৈরি রাখা হয়েছে। প্রস্তুত আছে সেনা ও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরাও।