সংক্ষিপ্ত

অমিত শাহ বলেন, বিজেপি সরকার এমন কোনও কাজ করেনি যা মানুষেক কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা দরকার। ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থে যারা এজাতীয় মন্তব্য করেছে তাদেরও সাবধান থাকা উচিৎ বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক পুলওয়ামা হামলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রীতিমত তোপ দেগেছেন। তাই নিয়ে এখনও পর্যন্ত বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। কিন্তু সত্যপাল মালিককে সিবিআইএর পাঠান সমন নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। বেঙ্গালুরুতে তিনি বলেন, একটি বিমা কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য সত্যপাল মালিককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই নিয়ে তাঁকে তৃতীয়বার তলব করল সিবিআই। তিনি আরও বলেছেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার জন্য তাঁকে তলব করা হয়নি। তদন্তের কারণেই তাঁকে তলব করা হ.েছে।

অমিত শাহ বলেন, বিজেপি সরকার এমন কোনও কাজ করেনি যা মানুষেক কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা দরকার। ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থে যারা এজাতীয় মন্তব্য করেছে তাদেরও সাবধান থাকা উচিৎ বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অমিত শাহ বলেন, 'আমার তথ্য অনুযায়ী সত্যপাল মালিককে এই নিয়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ডাকা হয়েছে। তদন্ত চলছে। নতুন কিছু তথ্য বা প্রমাণ নিশ্চয়ই সামনে এসেছে সেই জন্যই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডেকে পাঠান হয়েছে। ' ইন্ডিয়া টুডে আয়োজিত কর্ণাটক গোলটেবিল অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন অমিত শাহ। তিনি আরও বলেন, সত্যপাল মালিককেও জিজ্ঞাসা করা উচিৎ কেন তাঁদের সঙ্গে ছাড়ার পরে তিনি এজাতীয় মন্তব্য করছেন। তিনি আরও বলেন, এজাতীয় মন্তব্য জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি কিছুই বলেননি। যখন রাজ্যপাল ছিলেন তখন সত্যপাল মালিক চুপ করে ছিলেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে নোটিশ পাঠিয়ে বিমা কেলেঙ্কারি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে বলে শুক্রবার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অন্যদিকে সত্যপাল মালিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছু স্পষ্টীকরণের জন্য তাঁকে এজেন্সির আকবর রোড গেস্টহাউসে উপস্থিত হতে বলেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি রাজস্থান যাচ্ছেন , সেই কারণেই এজেন্সির থেকে আগামী ২৭-২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চেয়েছেন।

এর আগে গত বছরই সত্যপাল মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। জম্মু ও কাশ্মীরের কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার সরকারি কর্মীদের জন্য একটি গ্রুপ মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স স্কিমের চুক্তি ও ২.২০০ কোটি টাকার বেসামরিক কাজের চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে দুটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতে জেরা করা হয়েছিল। সূত্রের খবর এই দুটি ফাইল পাশ করার জন্য তাঁকে ৩০০ টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই বিষয় নিয়েই সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।

সত্যপাল মালিক একজন রাজনীতিবিদ। ২০১৭ সালে বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন। পরে ২০১৮ তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি ২০১৯ সালে ভূস্বর্গ থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। সত্যপাল মালিক ১৯৭৪ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন। তিনি মীরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলে। ১৯৭৪ সালে তিনি বিধায়ক হন। ১৯৮৪ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। রাজ্যসভার সাংসদ হন। তিন বছর পরে বোফর্স কেলেঙ্কারির কারণে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে ভিপি সিংএর নেতৃত্বাধীন জনতা দলে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে আলিগড় থেকে সাংসদ হন। ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন , কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান চরণ সিংএর ছেলের কাছে। সম্প্রতি সত্যপাল মালিক একটি নিউজ পোর্টালে সাক্ষাৎকারে পুলওয়ামা হামলার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেছিলেন। পাশাপাশি বলেছিলেন এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন।