সংক্ষিপ্ত

  • উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে লাদাখে
  • ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে লালফৌজ
  • এলএসি বরাবর বিশাল সংখ্যায় সেনা মোতায়েন
  • নতুন করে যুদ্ধের দামামা বাজছে সীমান্তে

বৃহস্পতিবার মস্কোয় বৈঠকে বসছে দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীরা। তার আগে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে লাদাখে। ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে ভারতের বিরুদ্ধে কষা চিনের ষড়যন্ত্রের ছক। সোমবার মধ্যরাতে উত্তেজনার পরেই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নতুন করে ৩ ব্যাটেলিয়ন সেনা মোতায়েন করেছে লালফৌজ। ফলে নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে শুরু করেছে সীমান্তে।

সোমবার রাতেই নতুন করে চিনা জওয়ানদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিল ভারতীয় জওয়ানরা। এই অবস্থায় লালফৌজের গতিবিধি একেবারেই সবিধের ঠেকছে না। সোমবার মধ্যরাতে উত্তেজনার খবর আসে ভারত-চিন সীমান্ত থেকে। লাদাখের বিতর্কিত অঞ্চলে চলে ফায়ারিং। কারণ বোঝা যায়নি প্রথম দিকে। চিনের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র দাবি করেন, ভারতীয় সেনা এলএসি পার করে গুলি চালিয়েছে। ভারতীয় সেনার উস্কানিমলক কার্যকলাপ বলেও অভিযোগ করেন চিনা সেনার মুখপাত্র। বারবার ভারতের উপর দায় চাপিয়েও লাদাখ সীমান্তে নিজেদের গতিবিধি বাড়িয়ে চলেছে লালফৌজ। এরই মধ্যে নতুন করে ৩ ব্যাটেলিয়ন সেনা মোতায়েন করেছে তারা এলএসি বরাবর। বাড়তি সেনা মোতায়েনের পিছনে নতুন কোনও চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করছে ভারতীয় সেনা।

আরও পড়ুন: চিনের অনুপ্রবেশ আটকাতে এবার কাঁটাতারের বেড়া দিল ভারতীয় সেনা, উস্কানি অব্যাহত বেজিংয়ের

গত মে মাস থেকে লাদাখ সীমান্তে সেনার উপস্থিতি বাড়াতে শুরু করে চিন। জুনের মাঝামাঝি দুই দেশের সেনার মধ্যে হাতাহাতিও হয়। সেই সময় গালওয়ান সংঘাতকে কেন্দ্র করে  যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে । ভারত-চিন দু'পক্ষই প্রচুর সেনা মোতায়েন করে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়। তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সেনা পর্যায়ে বৈঠক চলছে। যদিও তাতে সমাধান সূত্র অধরাই রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের হস্তক্ষেপে সেই উত্তেজনা সাময়িক কমে। এর মধ্যেই গত সপ্তাহে মস্কোর হোটেলে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আমন্ত্রণে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তারপরেই সীমান্ত উত্তেজনার জন্য ভারতকে দায়ি করে বিবৃতি দেয় বেজিং। 

অগস্টের শেষে  চিন ফের নতুন করে ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। তারপর থেকেই পরিস্থিতি আবার সংঘাতের দিকেই এগোচ্ছে। সোমবারচুশূলের মুখরি এলাকা দিয়ে আরও একবার ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিল চিনের পিপল'স লিবারেশন আর্মি। কিন্তু, ভারতীয় সেনা তা বানচাল করে দেয়। চিনের কুখ্যাত লালফৌজ পিছু হটতে বাধ্য হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সামনের দিনগুলিতে লালফৌজ এমন চেষ্টা বারবার জারি থাকবে।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে নিরাপদ নন বৃদ্ধারাও, ৩৭ বছরের যুবকের লালসার শিকার ৮৬ বছরের ঠাকুমা

এই পরিস্থিতিতে লাদাখ সীমান্তে শক্তি বাড়াচ্ছে বেজিং। সীমান্তের ওপারে রাচেন লা সেক্টরে পদাতিক বাগিনী মোতায়েন করেছে লালফৌজ। শিখওয়ানে ৬২ কম্বাইন্ড আর্মড ব্রিগেট মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া চুশুল, প্যাংগং, স্প্যাংগুর গ্যাপে মোররাইজড ডিভিশন মোতায়েন করা হয়েছে।  এছাড়া লাদাখে দু'টি মোটোরাইজড ডিভিশনকে মোতায়েন করেছে চিন। চতুর্থ মোটোরাইজড ডিভিশন মোতায়েন করা হয়েছে চশূলে। ষষ্ঠ মোটোরাইজড ডিভিশন মোতায়েন রয়েছে প্যাংগং থেকে দৌলত বেগ ওল্ডির পশ্চিম ধারে। স্পাঙ্গুর গ্যাপে পজিশন নিয়ে রয়েছে ৪ মোটোরাইজড ডিভিশনের ট্যাঙ্ক ব্যাটালিয়ন। সব দিক থেকে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে বেজিং।

তবে চিনের এই আস্ফালনের পর ভারতীয় সেনা বাহিনীও চুপচাপ বসে নেই। লালফৌজ যেসমস্ত এলাকা দিয়ে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে, সেখানে ভারতও ভীষ্ম ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান তৈরি রেখেছে। যে কোনও ধরনের চিনা আগ্রাসনের জবাব দিতে ভারতীয় সেনা  তৈরি। তার প্রমাণ অবশ্য গত ২৯ ও ৩০ আগস্টের রাতেই চিনা সেনা পেয়েছে। রেচিন লা ও রেজাং লা'র দখল নিতে সমর্থ হয়েছে ভারতীয় সেনা। এই দুই অঞ্চল থেকে চিনের মল্ডো ক্যানটনমেন্টের উপর নজর রাখতে পারছে ভারতীয় সেনা। তাই কৌশলগত গুরুত্বের কথা ভেবে চিনের লালফৌজ চেষ্টা জারি রেখেছে এই শিখর দু'টি পুনর্দখল করার।