সংক্ষিপ্ত

  • ১ হাজার কোটি টাকা হাওয়ালাকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল
  • উই চ্যাটে চলত হাওয়ালা চক্র
  • তৈরি হয়েছিল জাল চিনা নথিপত্র
  • দলাই লামাকেও টার্গেট করেছিল লুও 
     

ভারতে গ্রেফতার চিনা নাগরিক শুধু ১ হাজার কোটি টাকার হাওয়ালা কেলেঙ্কারি করেই থেমে থাকেনি। একটি সূত্র বলছে বিখ্যাত বৌদ্ধ সন্নাসী দলাই লামা সম্বন্ধেও লুও সাং নাকি তথ্য জোগাড় করছিল। আর এই কাজে সাহায্য করার জন্য একাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষুককে লক্ষ লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়েছিল। 

গত সপ্তাহেই দিল্লি থেকে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল লুও স্যাং নামে এক চিনা নাগরিকরে। ভুয়ো পরিচয় নিয়ে দিনের পর দিন ধরে ভারতে বসবাস করছে সে। ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরির জন্য মিজোরামের এক মহিলাকে বিয়েও করেছিল। একাধিক জাল আধার কার্ডও উদ্ধার করেছিল আয়কর দফতর। চার্লি পেয়ং নাম নিয়ে চালাচ্ছিল হাওয়ালা চক্র।

এই ঘটনা সামনে আসার পরই দিল্লিতে সক্রিয় হয় গোয়েন্দারা। জানা যায় দিল্লির মনজু কা টিলা এলাকায় রীতিমত সক্রিয় ছিল লুও সং। ওই এলাকাটি মূলত তিব্বতিদের বাস। ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকেই লুও সাং তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার খোঁজ খবর সংগ্রহ করছি বলে অভিযোগ। আর এই কাজের জন্য বেশ কয়েক জন বৌদ্ধ ভিক্ষুকের সঙ্গে সে কথাও বলেছিল। সূত্রের খবর বেশ কয়েকজনকে লুও ২-৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। যাঁরা লুও-র কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। লুও-র অফিস থেকে তার কর্মীরা সরাসবি টাকা দিয়ে আসত। কখনও কখনও টাকা পাঠান হত ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে। 

চিনা নাগরিকের কুকীর্তি ফাঁস, আগে গুপ্তচরবৃত্তি আর বর্তমানে হাওয়ালা চক্রের পাণ্ডা ...
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রের খবর, লুও স্যাং গোটা হাওয়ালা চক্রই চালাত চিনা অ্যাপ উই চ্যাটের মাধ্যমে। এই অ্যাপেই চলত কথাবার্তা ও যোগাযোগ। চিনের বিভিন্ন সংস্থার নামে যাবতীয় জাল নথিপত্রও তৈরি করা হয়েছিল। ভারত থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সেইসব সংস্থায় টাকা পাঠান হত। সেইসব সংস্থা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই খোঁজ খবর জোগাড় করছে গোয়ান্দারা। তদন্তকারীদের নজরে রয়েছে দিল্লির এক চাটার্জ অ্যাকাউন্ট্যান্টও। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে সেই ব্যক্তিই হাওয়ালা চক্রের মাধ্যমে চিনে টাকা পাঠাতেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রায় ৩০০ কোটি ডরাল লেনদেন হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে। কিছু লেনদেন হংকং-এর মাধ্যমে হয়েছে বলেও মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।  

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে চিন থেকে নেপাল সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকে লুও তারপরই মিজো-মহিলাকে বিয়ে করে ভারতীয় জাল পাসপোর্ট, আধার আর প্যান কার্ড তৈরি করে সে। এর আগে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছিল লুও। বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত ছিল।