সংক্ষিপ্ত

আধুনিক প্রযুক্তির এলএইচবি কোচে অত্যান্ত নিরাপদ বলেও দাবি করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। বালাসোরের দুর্ঘটনার পরই আধুনিক প্রযুক্তির কোচের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

 

করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও হাওড়া-যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিল এলএইচবি কোচের নিরাপত্তা নিয়ে। আধুনিক প্রযুক্তির এলএইচবি কোচে অত্যান্ত নিরাপদ বলেও দাবি করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরেই দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে যখন মৃতের সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়েছে তখনই আধুনিক প্রযুক্তির কোচের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ট্রেন দুর্ঘটনার ভয়াবহতাও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। একাধিক রেল কর্তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন গত ২০ বছরে এমন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা তারা দেখেননি।

এলএইচবি কোচের বৈশিষ্ট্য

রেল কর্তাদের কথায় লাইন চ্যুত হোয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হলে এলএইচবি কোট কখনও পুরনো আইসিএফ কোচের মত মত একটি কোচের ভিতর অন্যটি টেলিস্কোপের মত ঢুকে যায় না। পরিবর্তে কাপলিং আলগা হয়ে দুই পাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের কথায় আধুনিক কোচের এই প্রযুক্তিও এই বালাসোরের ট্রেন দুর্ঘটনাকে মারাত্মক করেছে।

বালাসোরের ট্রেন দুর্ঘটনা মারাত্মক হওয়ার কারণ

শুক্রবার যশবন্তপুর হাওড়া এক্সপ্রেস প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে বাহানাগা বাজার স্টেশন পার হয়। তখন ঘড়িতে ৬টা ৫৫ মিনিট। সেই সময়ই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। লাইন চ্যুত এক্সপ্রেস ট্রেনের ৫টি বগি পাশের করমণ্ডল এক্সপ্রেস যাওয়ার লাইনে পড়ে। সেই সময়ই উল্টো দিক থেকে আসা করমণ্ডল এক্সপ্রেসর তীব্র গতিতে ধাক্কা মারে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ছাড়াও ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। সাতটি কামরা সরাসরি উল্টো যায়।

রেল কর্তাদের বয়ান

রেল কর্তাদের একাংশের দাবি এলএইচবি রেকের কামরা লাইনের দুই পাশে চড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনা ঘটে ক্রস পুল এফেক্টের ফলে। কোনও ট্রেন তাই লাইন চ্যুত হলে সেই ট্রেনের চালকের দায়িত্ব থাকে পাশের লাইনে আসা ট্রেনের চালককে আগেই সতর্ক করা। সেই কারণে প্রত্যেক চালকের কাছে ১০টি করে ডেটোনেটর, দুটি করে ফিউসি বা বারুদযুক্ত রংমশাল থাকে। ডেটোনেটর ফাটিয়ে সতর্ক করার সময় না থাকলে দ্রুত মশাল জ্বালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দুর্ঘটনার কবলে পড়া যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের চালক এই কাজের সময় সময় পেয়েছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

যদিও রেল কর্তাদের একটি অংশের দাবি এলএইচিবি কোচ সম্পূর্ণ নিরাপদ। দুটি ট্রেনের সংঘর্ষ হলে মৃত্যু অনেক কম হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে রেলকর্তরা দুটি ট্রেনের স্পিডকেই দায়ী করেছেন।

তাই এতদিন যে এলএইচবি কোচকে নিরাপদ বলে দাবি করা হয়েছিল যাত্রী সুরক্ষার জন্য বালাসোরের দুর্ঘটনার পর সেই কোচের নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।