সংক্ষিপ্ত

  • তথ্যের সুরক্ষা কবচ না থাকায় পাচার হচ্ছে তথ্য
  • এভাবেই বহু ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তা হারাচ্ছে
  • কীভাবে সুরক্ষা দিতে পারে তথ্যের সুরক্ষা আইন 
  • তাই নিয়ে ফের একবার খুঁটিনাটি আলোচনায় রাজীব চন্দ্রশেখর

ডেটা প্রাইভেসি বা তথ্যের সুরক্ষা- এইন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি উঠেছে। বর্তমানে কেন্দ্রে থাকা নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারও ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষাকে মান্যতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে যেভাবে ডিজিটাল এজের বাড়ন্ত হয়েছে তাতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা একটা আবশ্যিক বিষয় বলেই মনে করেন সাংসদ তথা শিল্পপতি এবং প্রযুক্তিবিদ রাজীব চন্দ্রশেখর। শুক্রবার অনলাইনে আইএএমএআই-এর একটি কনফারেন্সে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পাঁচটি বিষয়েরও উপরও জোর দেন রাজীব। 

যে পাঁচটি বিষয়ের অবতারণা রাজীব করেন, তারমধ্যে সবার প্রথমে তিনি জোর দিয়েছেন যে সঠিকভাবে কারোর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি। রাজীব জানিয়েছেন, ডেটা প্রাইভেসি অ্যাক্টে ডিজিটাল দুনিয়ায় যে কেউ কারওর ব্যক্তিগত তথ্যকে বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করতে পারবে না। দ্বিতীয় পয়েন্টে তিনি জোর দিয়েছেন তথ্যের নির্দিষ্ট ব্যবহারের উপরে। এর মানে কেউ একজন কারওর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের অনুমতি নিল অথচ সে একাধিক স্থানে একাধিক কারণে সেই তথ্যকে প্রকাশ করতে থাকল- তথ্য সুরক্ষা কবচে এই বিধিনিষেধ থাকতে হবে। তৃতীয় পয়েন্টের অবতাড়নায় রাজীব চন্দ্রশেখর জোর দিয়েছেন- ডেটার ক্যাটিগরি বিভাজনের উপরে। বর্তমানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কাজ করা তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা বা যে কোনও সাধারণ সংস্থা কোনও সময়ে ভারতের মধ্যে কোনও ক্লাউড সার্ভারে ডেটা স্টোর করছে। আবার কেউ কেউ বিদেশের বুকে থাকা কোনও ক্লাউড সার্ভারে জনা করছে কারও ব্যক্তিগত তথ্য। তথ্যের যে সুরক্ষা কবচের কথা রাজীবরা বলছেন তাতে এই ধরনের স্টোরিং-এর উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। বরং ক্লাউড সার্ভারে ডেটা স্টোরিং-এর ক্ষেত্রে ক্যাটাগরি বিভাজন থাকতে বলেও জানিয়েছেন রাজীব চন্দ্রশেখর। এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, যেভাবে অনলাইনে বিভিন্ন সংস্থা কুকিস-এর নামে ট্র্যাকার ফিট করে কারও ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং তথ্যকে কপি করে নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার কাছে বেচে দিচ্ছে- তথ্যের সুরক্ষা কবচে এই ধরনের প্রবণতা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গুগুল থেকে শুরু একাধিক সংস্থা ব্যক্তিগত তথ্য তৃতীয় কোনও পক্ষের হাতে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তথ্য মালিকের অনুমতি ব্যতিরেক এমনটা করা যায় না বলেই জানিয়েছেন তিনি। 

চরমে উঠল সংঘাত, ভারতের IT মন্ত্রীর অ্যাকাউন্টই ব্লক করে রাখল Twitter ...

তিব্বতে প্রথম বুলেট ট্রেন, অরুণাচলের কান ঘেঁসে ট্রেন ছুটিয়ে ভারতেকে হুঁশিয়ারি চিনের ... R

২০১০ সালে অনলাইনে তথ্যের সুরক্ষা কবচের জন্য লড়াই শুরু করেছিলেন প্রযুক্তিবিদ রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে একটা সুরহা-তে পৌঁছতে এরপর সুপ্রিম কোর্টে তিনি জনস্বার্থ মামলাও করেন। তারই প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত ২০১৬ সালে সাফ জানিয়ে দেয় সংবিধানের ২১ নম্বর আর্টিকেল অনুযায়ী ব্যক্তিগত তথ্যের অধিকার যে কোনও ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। এই অধিকারকে কেউ খর্ব করতে পারে না। এমনকী সরকার চাইলেও কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্যে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্যের মৌলিক অধিকার রক্ষায় নিয়মাবলি তৈরির সুপারিশও করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মোতাবেক এরপরই ডেটা প্রাইভেসি অ্যাক্টকে লাগু করার জন্য তৎপরতা .শুরু করেছিল বিজেপি সরকার। 

ভুয়ো খবর ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে, IAMAI আলোচনা সভায় আশঙ্কার করলেন রাজেশ কালরা ...

২০১৯ সালে ডেটা প্রাইভেসি বিল ২০১৯ লোকসভাতে পেশ হয়। কিন্তু, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হওয়ায় তা সংসদের যৌথ কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সেই কমিটি ইতিমধ্যেই এই নিয়ে একটা খসড়া আইন তৈরি করে লোকসভার অধ্যক্ষের কাছে জমা করেছে। সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখরের মতে, তথ্যে সুরক্ষা কবচ সরকারিভাবে লাগু হলে ভারতবাসী তাদের ব্যক্তিগত তথ্যের বেআইনি ব্যবহার থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন এবং অসংখ্য তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা যারা এর থেকে মুনাফা লুঠছিল তারা একটা বিশাল ধাক্কা খাবে তাতে সন্দেহ নেই।