সংক্ষিপ্ত
- প্রবল বিরোধিতার মধ্যে লোকসভার ছাড়পত্র পেল গেল বিতর্কিত কৃষি বিল
- সরকার খুব সহজে লোকসভায় এই বিল পাশ করিয়ে নিলেও চুপ নেই বিরোধীরা
- নয়া কৃষি বিল ইস্যুতে রীতিমতো চাপের মুখে বিজেপি
- এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং
নয়া কৃষি বিল ইস্যুতে রীতিমতো বিপাকে বিজেপি শিবির। তাই শেষপর্যন্ত ময়দানে নামতে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মোদী এই ইস্যুতে দাবি করেন, কৃষকদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। এই নয়া বিল কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
বৃহস্পতিবার প্রবল বিরোধিতার মধ্যে লোকসভার ছাড়পত্র পায় বিতর্কিত কৃষি বিল। ফারমার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমোশন অ্যান্ড ফ্যাসিলিয়েশন) বিল এবং ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস বিল দু'টি সংসদের নিম্নকক্ষে পাশ হয়ে গিয়েছে। এবার সেগুলি রাজ্যসভায় পেশ করা হবে। এছাড়া এর আগেই অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইন লোকসভার ছাড়পত্র পেয়েছে।
কৃষিক্ষেত্রে ফসল বিক্রি এবং কৃষিপণ্যের বাজারে সরকারি নিয়ন্ত্রণ কমাতে অনেক আগেই তিনটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল কেন্দ্র। যে অর্ডিন্যান্সে বেসরকারি সংস্থার জন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কেনার রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরকারের অনুমতি ছাড়াই নিজেদের মতো দামে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে পারবে। তবে, এই বিলের পরও বর্তমানে সরকার যেভাবে ন্যূনতম সমর্থন মূল্য দিয়ে ফসল কেনে, সেই পদ্ধতিতে কোনও বদল আসবে না। বৃহস্পতিবার লোকসভায় এই অর্ডিন্যান্সগুলি বিল আকারে ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায়। যদিও কৃষকদের ধারণা, এই বিল পাশ হওয়ার ফলে বাজার থেকে সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরে যাবে। সরকার ধীরে ধীরে ন্যূনতম সমর্থন মুল্যে ফসল কেনা বন্ধ করে দেবে। ফলে কৃষকদের পুঁজিপতিদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা এই বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। আগামী ২৪-২৭ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবে রেল রোকো কর্মসূচি নিয়েছে কৃষকদের একটি সংগঠন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ডাকা হয়েছে ভারত বনধ।
সরকার খুব সহজে লোকসভায় এই বিল পাশ করিয়ে নিলেও চুপ নেই বিরোধীরা। এই ইস্যুতে দেশজুড়ে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছে তারা। সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীই তাঁদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে। যা রাজনৈতিকভাবে বিজেপির জন্য বড়সড় ধাক্কা হতে পারে। এই বিল ঘিরে কৃষকদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যাওয়ার আশঙ্কায় ময়দানে নামতে হয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সংসদের নিম্ন কক্ষে বিল পাশের পরে রাতে ট্যুইট করেন নমো। এই বিলকে 'ঐতিহাসিক' আখ্যা দিয়ে তিনি দাবি করেন, এটি আইনে পরিণত হলে কৃষি ক্ষেত্রে ফোড়ে বা দালাল রাজের অবসান হবে। যার ফলে কৃষকদের আয় বাড়বে।
এই বিল সম্পর্কে কিছু শক্তি সাধারণ মানুষককে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন নমো। কৃষকদের প্রতি তাঁর আশ্বাস, আগামী দিনেও ফসলের সহায়ক মূল্য বেঁধে দেওয়া হবে এবং কৃষকদের থেকে ন্যায্য মূল্যে সরকার ফসল কিনবে। ফলে এই নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য কৃষক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করেছেন মোদী।