সংক্ষিপ্ত
সংখ্যালঘুদের নিয়ে পাকিস্তানের করা মন্তব্যের পিছনে দূরভিসন্ধি দেখছে ভারত। কারণ, পাকিস্তানের বুকে সংখ্যালঘুরা যে বিপন্ন তা দশকের পর দশক বিশ্বের সামনে এসেছে।
যারা নিজের দেশেই সমাজ ব্যবস্থায় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ এবং সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারে খ্যাতি রয়েছে, তারা কীভাবে অন্য দেশের সংখ্যালঘু নীতি নিয়ে কথা বলতে পারে। এই ভাষাতেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ-এর টুইটার পোস্টে কড়া জবাব দিল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচির জারি হওয়া এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। আর সেইসঙ্গে তিনি বলেন, পাকিস্তানে আজ যেভাবে হিন্দু, শিখ খ্রিস্টান, আহমেদিয়াস-দের মতো সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পনামাফিক অত্যাচার করা হচ্ছে তা বিশ্ব দেখতে পাচ্ছে। তাই সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারে খ্যাতি অর্জন করা পাকিস্তানের উচিত নয় অন্যদেশের বৈদেশিক নীতি নিয়ে জ্ঞান বিতরণ করা।
সেইসঙ্গে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি আরও জানিয়েছেন যে, সব ধর্মের প্রতি ভারত সমান সম্মান প্রদর্শন করে। পাকিস্তানে এমনটা হয় না, কারণ সেখানে কাউকে সম্মান করার আগে তার ধর্ম এবং জাত-পাতের বিষয়টির জন্য মৌলবাদীরা সমানে সওয়াল করে।
অরিন্দম বাগচি আরও জানিয়েছেন যে, আমরা পাকিস্তানের কাছে আবেদন করি যে তারা ভারতের বুকে কোনও ধরনের ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং অখণ্ডতাকে ভেঙে দেওয়ার অভিসন্ধি ত্যাগ করে বরং তাদের দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষাকে নিশ্চিত করুন।
সম্প্রতি বিজেপি নেত্রী নূপূর শর্মা এক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলের বিতর্ক অনুষ্ঠানে ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ কর্তা মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তিনি বলেছিলেন যে ইসলাম ধর্মের বই-এর এমন কিছু ধর্মাচারণের কথা বলা হয়েছে যা নিয়ে মানুষ ঠাঠ্ঠা-তামাশা করতে পারে। এমনকী দিল্লি বিজেপি-র মুখপাত্র নবীনকুমার জিন্দলও মহম্মদকে নিয়ে এক বিতর্কিত টুইট করেন। যার জেরে রবিবার বিজেপি থেকে নূপূর শর্মা ও নবীনকুমার জিন্দলের প্রাথমিক দলীয় সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
এই ঘটনায় এতটাই কড়া প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় যে কাতার ও কুয়েতও কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিল। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এই নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন। এরপরই পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে কড়া আক্রমণ করেন এবং ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উপর অত্যাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন। পাকিস্তানের এই ভারত বিদ্বেষী চক্রান্তের বয়ানবাজি এর আগেও বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে বলে মনে বিদেশমন্ত্রক। দেশের অভ্যন্তরে তৃতীয় কোনও দেশের হস্তক্ষেপ ভারত বরদাস্ত করবে না বলেই আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে বুঝিয়ে দিল বিদেশমন্ত্রক।