সংক্ষিপ্ত
- বাতিল করা হল মিগ-২৭ বিমানের শেষ স্কোয়াড্রন
- শুক্রবার যোধপুরে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটি থেকে শেষ উড়ান দেয় এই যুদ্ধবিমান
- ১৯৮৫ সালে ভারতীয় বায়ুসেনা-য় যুক্ত হয়েছিল মিগ ২৭
- কার্গিল যুদ্ধে বীরত্বের জন্য নাম হয় 'বাহাদুর'
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) যোধপুরে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটি থেকে শেষবারের মতো উড়ল মিগগ ২৭ বিমান। এবার সে যাচ্ছে অবসরে। ১৯৮৫ সালে ভারতীয় বায়ুসেনা বাহিনী-তে যুক্ত হয়েছিল মিগ ২৭ স্কোয়াড্রন। তার যোগদানেই ভারতীয় বায়ুসেনার আকাশ থেকে ভূমিতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হামলা চালানোর শক্তি একলাফে অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মিগ ২৭ যুদ্ধবিমান ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল। কার্গিল যুদ্ধ থেকে এমন কোনও গুরুত্বপূর্ণ মিশন ছিল না ভারতীয় বায়ুসেনার, যেখানে মিগ ২৭ বিমান ব্যবহার করা হয়নি।
শেষ উড়ান
এদিন সকালে যোধপুরের বিমানঘাঁটি থেকে মিগ ২৭-এর শেষ উড়ানের আগে বায়ুসেনার সদস্যরা গার্ড অব অনার দেয় এই দীর্ঘদিনের সঙ্গীকে। সাতটি মিগ ২৭ বিমানের স্কোয়াড্রন এদিনের পর থেকে আর থাকল না বায়ুসেনায়। যোধপুর বিমানবন্দরে মিগ ২৭ বিমানের দুটি স্কোয়াড্রন ছিল, যার একটি চলতি বছরের শুরুর দিকে বাতিল করা হয়েছিল। শেষ স্কোয়াড্রনকে বিদায় জানানো হল এদিন।
কেমন ছিল মিগ ২৭
রাশিয়ায় তৈরি মিগ ২৭ তার সময়ের সেরা যুদ্ধবিমান ছিল। প্রতি ঘন্টা ১৭০০ কিলোমিটার বেগে উড়তে সক্ষম এই মিগ ২৭ বায়ু থেকে ভূমিতে নিশানায় আগাত করতে এতটাই পারদর্শী ছিল, যে শত্রুপক্ষ টের পাওয়ার আগেই তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দিত ভারতীয় বায়ুসেনা। এছাড়া এটি চার হাজার কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওয়ারহেড বহন করতে পারে। শুধু তাই নয়, এই বিমানগুলি স্থলভাগের কাছাকাছি উচ্চতা দিয়ে উড়লে কোনও রেডার-এও সহজে ধরা পড়ত না। এর শব্দ শত্রুদের মনে ভয় তৈরি করত।
কার্গিল যুদ্ধের পর নাম হয় বাহাদুর
১৯৯৯ সালে কার্গিলের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অবস্থানরত পাক সেনাদের ধারণাও ছিল না তাদের জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। ভারতীয় বায়ুসেনা মিগ ২৭ বিমান থেকে তাদের উপর অবিরাম গোলাবৃষ্টি করেছিল। আকাশপথে একেবারে নির্দিষ্ট লক্ষে সেই হামলাতেই জোর ধাক্কা খেয়েছিল পাক সেনা। কার্গিল যুদ্ধের বীরত্বের জন্য মিগ ২৭ বিমানকে 'বাহাদুর' নাম দেওয়া হয়েছিল। আর পাকিস্তানিদের মনে এতটাই আতহ্ক তৈরি করেছিল যে তারা এই যুদ্ধবিমানের নাম দেয় 'ডাইনি'।
কেন বিদায় মিগ ২৭-কে?
বর্তমানে, এই যুদ্ধবিমানগুলির যন্ত্রাংশ আর সেভাবে পাওয়া যায় না। এই কারণে সঠিকভাবে মেইটেন্য়ান্সের অভাবে ধীরে ধীরে এই যুদ্ধবিমানগুলির দুর্ঘটনায় পড়ার সংখ্যা বাড়ছিল। ২০১৬ সালেই মিগ ২৭ বিমানগুলি বিদায় জানানোর কথা ছিল। কিন্তু বায়ুসেনা বাহিনীতে যুদ্ধবিমান সেই সময় এতই কম ছিল, যে তারপরেও তিন বছর এই বিমানকে ভারতীয় বায়ুসেনার অংশ হিসেবে রেখে দেওয়া হয়।