সংক্ষিপ্ত

  • খুব গোপনে কালি-৫০০০ তৈরি করে ফেলেছে ভারত
  • ভারতের সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ‘কালি’কে নিয়ে চিন্তায়  চিন ও পাকিস্তান
  • ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা আকাশপথে হওয়া যে কোনও আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম
  • মহাকাশে ভাসমান কৃত্রিম উপগ্রহকেও  ধ্বংস করতে পারে কালি

 হিন্দু ধর্মের মা কালী যেমন প্রলয়ের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে অসুর কূলকে শেষ করেছিলেন, ভারতের কাছেও কিন্তু ঠিক তেমনই একটি রক্ষাকবজ আছে, যা দিয়ে  চাইলে যেকোন মুহূর্তে যেকোন দেশকে ধূলিস্মাত করে দিতে পারে আমাদের দেশ।

কালী নামটা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মা দূর্গার প্রলয়ঙ্করী একটি রূপ, যার সামনে নত হত হয়েছিল রক্তবীজও। তেমনই ভৈরবীর পূজারী, ভারতও চাইলে যেকোন সময়ে তার এক গুপ্ত শক্তির প্রকাশ ঘটিয়ে, যেকোন শক্তিশালী দেশকে নিমেষে শেষ করে দিতে পারে। ভারতের এই শক্তি হল  কিলো অ্যাম্পিয়ার লিনিয়র ইনজেক্টর। সংক্ষেপে যাকে ডাকা হয় কালি। আমাদের দেশের এই শক্তিশালী অস্ত্রের ভয়ে কিন্তু কাঁপে দুই শত্রু দেশ পাকিস্তান ও চিনও।

 

 

সেই সময় আসতে আর বেশি দেরি নেই৷ যখন পাকিস্তান ভারতকে পরমাণু হামলার হুমকি দেওয়ার আগে হাজারবার ভাববে৷ সেই দিন আসতেও বেশি দেরি নেই যেদিন ভারতের সঙ্গে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নামার সাহসও দেখাতে পারবে না চিন৷

কারণ খুব শীঘ্রই সম্ভবত বিশ্বের প্রথম পুরোপুরি মিসাইল প্রুফ দেশ হতে চলেছে ভারত৷ সূত্রের খবর, একবিংশ শতাব্দীর সব থেকে উন্নতমানের মিসাইল ধ্বংসকারী অস্ত্র তৈরিতে মনোনিবেশ করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা৷ যাতে প্রাথমিকভাবে সাফল্যও এসেছে৷ মিসাইল বিধ্বংসী এই অস্ত্রের নাম রাখা হয়েছে ‘কালি৷’কোনও দেশ ভারতের দিকে তাক করে কোনও মিসাইল হামলা চালালে তা দেশের সীমান্তে প্রবেশের আগে মাঝপথেই ধ্বংস করে দেবে ‘কালি’৷ আসুন জেনে নেওয়া যাক ভারতের এই অস্ত্রের কিছু বিশেষত্ব।

কি এই কালি 
প্রথমদিকে ০.৪ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন স্রোত নিয়ে আঘাত হানার ক্ষমতা ছিল কালির। এর পর এই অস্ত্র আপডেট হয়। নাম হয় কালি-৫০০০। যা কি না প্রচণ্ড শক্তিশালী। কালি-৫০০০ এখন ৪০ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন স্রোত ছাড়তে সক্ষম। ক্ষেপণাস্ত্র বা যুদ্ধবিমান ভারতের এলাকায় আঘাত হানার চেষ্টা করলে কালি তা কয়েক মিনিটে প্রতিরোধ করতে পারবে। ইলেকট্রন কণার তীব্র স্রোত যে কোনও ক্ষেপনাস্ত্রকে প্রতিহত করতে পারে। উত্তপ্ত কণার স্রোত বা রশ্মি তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণে পরিণত হবে। তার পর সেই বিকিরণ মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা মাইক্রোওয়েভের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। সেই মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ প্রবল আঘাত হানবে শত্রুর ছোড়া ক্ষেপনাস্ত্রে।

কালি তৈরির সময়
১৯৮৫ সালে প্রথম কালি তৈরির কাজ শুরু করেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। এর পর চলে এই অস্ত্রের শক্তি বৃদ্ধির কাজ। কালির এখন এমনই ক্ষমতা যে মহাকাশে ভাসমান কৃত্রিম উপগ্রহকেও ধ্বংস করতে পারে অনায়াসে। প্রথমে এই অস্ত্রের ক্ষমতা সম্বন্ধে বিশেষ কিছু না বললেও, ধীরে ধীরে সেনাবাহিনীতে এই অস্ত্রের প্রবেশের ফলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।

প্রথম দিকে কালির কর্মক্ষমতা সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি। বলা হয়েছিল, শিল্পের প্রয়োজনে কালির ব্যবহারিক প্রয়োগ হবে। কিন্তু পরবর্তীকালে ভারতের সামরিক বাহিনীতে কালির অন্তর্ভুক্তি হলে প্রতিবেশি দেশ সমীহ করতে শুরু করে। প্রথমে প্রস্তুত করা হয়েছিল কালি ৮০, তারপর করা হয়েছিল কালি ২০০, এরপর ধীরে ধীরে ভারতের বৈজ্ঞানিক মহল পা বাড়াল কালি ৫০০০ এর দিকে। বর্তমানে এটি সম্পূর্ণরূপে তৈরি, যা জোর গলায় বলা যায় মেড ইন ইন্ডিয়া।

কারা বানিয়েছে কালি
বিএআরসি (ভাব আণবিক গবেষণা কেন্দ্র) এবং ডিআরডিও (প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) উভয় সংস্থাই সম্মিলিতভাবে ‘কালি’ তৈরির সাথে জড়িত। জানা গিয়েছে ১৯৮৫ সালে এমন একটি মিসাইল ধ্বংসকারী অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন তৎকালীন বিএআরসি  ডিরেক্টর আর চিদম্বরম৷ পরিকল্পনার ঠিক চারবছর পরেই এই অস্ত্র তৈরির কাজ শুরু করেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা৷

কালির ক্ষমতা
ক্ষেপণাস্ত্র হোক বা যুদ্ধবিমান, সবকিছুকেই মহূর্তের মধ্যে শেষ করার ক্ষমতা রাখে এই কালী। স্থল, জল এবং বিমান সব ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শী। বিরাট দূরত্বের ব্যবধান থেকেও শত্রু দেশ থেকে আগত পারমাণবিক বোমাকেও রুখে দিতে পারবে এই কালী। এমনকি আটকাতে পারবে আকাশ পথের হামলাকেও।

লেজার অস্ত্র থেকে নির্গত রশ্মি ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত করে তাতে ছিদ্র তৈরি করে। ওই ছিদ্র সেই ক্ষেপনাস্ত্রকে ধ্বংস করে। তবে এই পদ্ধতি সময় সাপেক্ষ। কালি-৫০০০ যে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ ছাড়বে তার সংস্পর্শে এলেই ছুটন্ত ক্ষেপণাস্ত্র ঝলসে যাবে। চোখের নিমেষে আকাশেই ধ্বংস হবে সেটি।

আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের এই কালিকে ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। সম্প্রতি এটি ভারতের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। শোনা গিয়েছে, কালি ৫০০০ কোন ক্ষেপণাস্ত্র বা এয়ার ক্র্যাফট ভারতের দিকে ধেয়ে আসলে, তাঁকে নিমেষে ইলেকট্রন কণার স্ত্রোত দিয়ে শেষ করে দিতে সক্ষম। এই তীব্র গতি সম্পন্ন ইলেকট্রন কণার স্রোত যে কোনও ক্ষেপনাস্ত্রকে সহজেই প্রতিহত করতে পারে। প্রথমে এই উত্তপ্ত কণার স্রোত বা রশ্মি তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণে পরিণত হবে এবং তারপর সেই বিকিরণ সরাসরি মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা মাইক্রোওয়েভের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে শত্রুর ছোড়া ক্ষেপনাস্ত্রে প্রবল আঘাত হানবে। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ঝলসে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে কালি।

সূত্রের আরও খবর এই মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে মাইক্রোওয়েভ গান তৈরি করার কথাও ভাবছে ভারত৷ বিখ্যাত গ্রিক বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ভারতের এই প্রযুক্তি৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর্কিমিডিস যেভাবে সূর্যের আলোকে ব্যবহার করে একটি রোমান যুদ্ধজাহাজে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন৷ কালীর প্রযুক্তি অনেকটাই সেই ধরণের৷ এক্ষেত্রে সূর্যের আলো নয় বিদ্যুৎকে কাজে লাগানো হবে৷

 

 

সূত্রের খবর, ২০১২ সালে সিয়াচেনে প্রাথমিক টেস্ট করা হয়েছিল কালির৷ এই পরীক্ষারর জেরে সিয়াচেন সংল্গন পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় একটি ধসের সৃষ্টি হয়৷ যে ধসে ১৩৫জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করে পাক সংবাদ মাধ্যম৷ পাক সংবাদ মাধ্যমের আরও দাবি ছিল ভারতীয় বিজ্ঞানীদের তৈরি ইলেক্ট্রন ঘাতক রশ্মির জেরেই সিয়াচেনে ওই মারণধস নেমেছিল৷ ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে একই ধরণের প্রযুক্তি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও৷ কিন্তু মার্কিনি বিজ্ঞানীরা সাফল্যের মুখ দেখতে পাননি৷ অন্যদিকে ভারত এই প্রযুক্তি তৈরিতে একেবারে সাফল্যের দোরগোড়ায় বলে খবর৷